images

সারাদেশ

কেউ খোঁজ রাখে না ভাষাসৈনিক নন্দ দুলাল সাহার

জেলা প্রতিনিধি

২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৮:০৮ এএম

১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলনের উত্তাপ কিছুটা লেগেছিল ঝিনাইদহে। কিন্তু এ নিয়ে কোনো আন্দোলন গড়ে উঠছিল না। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের পরিপূর্ণ ঢেউ লাগে এ জেলায়। উত্তাল হয় ঝিনাইদহ। সেই আন্দোলনের এক অকুতোভয় সৈনিক নন্দ দুলাল সাহা। ৮৮ বছরেও তিনি এখনও অবিচল, স্থির। দুঃখ একটাই, কেউ খোঁজ রাখে না। রাষ্ট্রীয়ভাবে ভাষাসৈনিকদের সম্মাননা দেওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, এই বয়সেও কোনো সাহায্য ছাড়া একাই প্রিয় শহরে চলাচল করেন তিনি। ৮ বছর আগে স্ত্রী মারা যাওয়ায় সম্পূর্ণ একাই জীবনযাপন করছেন ঝিনাইদহের পার্কপাড়ায়। ৫ মেয়ে ও ২ ছেলের জনক ভাষাসৈনিক নন্দ দুলাল সাহা। সবাই যে যার মতো বিভিন্ন জেলায় থাকায় এখন একেবারেই নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েছেন। বাড়িতে একাই থাকেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধেও যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি। তার দুঃখ, কেউই তার খোঁজ রাখে না।

আরো পড়ুন: ভাষা মতিনের এলাকায় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার

নন্দ দুলাল সাহা বলেন, তিনি ছবিঘর সিনেমা হলের পাশে গোপনে পোস্টার লিখছিলেন। পুলিশ টের পেয়ে পা দিয়ে পোস্টারগুলো মাড়িয়ে দেয়। পুলিশকে ঘুষি মেরে তিনি পালিয়ে যান। এজন্য তাকে অনেকদিন পালিয়ে থাকতে হয়েছিল।

তিনি জানান, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় হরতালের সমর্থনে শহরে মিছিল বের করা হয়। অভূতপূর্ব সাড়া মেলে। এদিকে ঢাকায় ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণের খবর পেয়ে যায় ছাত্ররা। ২২ ফেব্রুয়ারি ফের হরতালের ডাক দেয় ছাত্ররা। শহরের দোকান বন্ধ থাকে।

তিনি জানান, জাতীয়ভাবে তিনি কোনো স্বীকৃতি পাননি। তবে এ নিয়ে তার কোনো ক্ষোভ নেই। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার এক হাতের পাতায় গুলিও লাগে। কিন্তু তিনি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতিও পাননি। সরকারের পক্ষ থেকে কেউ তার খোঁজও নেন না।

আরো পড়ুন: হকার আর রাজনৈতিক পোস্টারে ঢাকা আমতলার ইতিহাস

এলাকাবাসী জানান, আসলেই কষ্টে আছেন তিনি। একাকীত্ব তাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।

VASHA SHAID

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া জেরিন জানান, ভাষাসৈনিক নন্দ দুলাল সাহার জন্য যা যা করা যায় সবকিছুই করা হবে। বেশকিছু চিন্তাভাবনাও করা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সেমিনার, অনুষ্ঠানে তাকে অতিথি রাখার পরিকল্পনা চলছে। যেন তার সময়টা ভালো কাটে। আর নতুন প্রজন্ম যেন আমাদের ভাষার গৌরবজ্জ্বল ইতিহাস জানতে পারে।

এ ভাষাসৈনিকের জন্য বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করা হবে বলেও ইউএনও জানান।

প্রতিনিধি/এইচই/একেবি