images

সারাদেশ

ছেলের ফোনে ভিডিও দেখে ড্রাগন চাষ, সেই বাগান দেখতে জনতার ভিড়

জেলা প্রতিনিধি

০৮ আগস্ট ২০২২, ০২:৫৪ পিএম

দেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের সীমান্তবর্তী উপজেলা তেঁতুলিয়ায় প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে বিদেশী ফল ড্রাগন চাষ করে সফল হয়েছেন খোদা বক্স নামে এক কৃষক। প্রথমবারেই ড্রাগন চাষের সফলতা দেখে অনুপ্রাণিত হচ্ছে স্থানীয় অন্য কৃষকরাও৷ খোদা বক্সের ড্রাগন বাগান দেখতে ভিড় করছেন স্থানীয় কৃষকসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ৷ 

>> আরও পড়ুন: মা হচ্ছে ১২ বছরের শিশু, বাবা ৬০ বছরের মোহন আলী
 
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নের ফুটকি বাড়ি এলাকার বাসিন্দা খোদা বক্স। তিনি তার বাড়ির পাশের পড়ে থাকা আধবিঘা পতিত জমিতে ড্রাগন ফল চাষ করেছেন। খোদা বক্স প্রতিদিনিই তার বাগান থেকে ড্রাগন সংগ্রহ করে তা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন৷ প্রতি কেজি ড্রাগন বিক্রি করছেন ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত৷ 
dargonখোদা বক্সের ছোট ছেলে আব্দুল কাদের জিলানী টাঙ্গাইলের জেলার ঘাটাইল থানায় একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকুরী করেন৷ সেখানেই তার ছেলে ড্রাগন চাষ দেখেন। ছেলের কাছেই প্রথম ড্রাগন ফলের নাম শোনেন কৃষক খোদা বক্স। পরে ছেলের মোবাইল ফোনে ইউটিউবে ড্রাগন ফল ও চাষ পদ্ধতি দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ছেলের সহযোগিতায় বাড়ির পাশে জমি প্রস্তুত করেন কৃষক খোদা বক্স। জমি প্রস্তুতের পর টাঙ্গাইল থেকে ড্রাগনের চারা নিয়ে এসে এক বছর আগে আধা বিঘা জমিতে রোপণ করেন। রোপণের এক বছরে মধ্যে গাছগুলোতে ফুল আসতে শুরু করে এবং বর্তমানে বাগানের প্রতিটি গাছে ফল এসেছে। পাকাও শুরু হয়েছে। বাগান থেকে ড্রাগন সংগ্রহ করে কৃষক খোদা বক্স স্থানীয় বাজারে বিক্রি শুরু করছেন। এদিকে শুধু বাগান করে ফল ফলাতে সফল হননি এই কৃষক। তিনি ড্রাগনের গাছ থেকে চারাও তৈরী করেছেন৷ তার এমন সফলতা দেখে স্থানীয়রা কৃষকরাও আগামীতে ড্রাগন চাষে অনুপ্রাণিত হচ্ছে।
dargon pacnhagarhকথা হয় স্থানীয় কৃষক জাহিরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ড্রাগন ফলের কথা শুনেছি কিন্তু আমার জীবনে কোনোদিন এই ফল দেখিনি৷ আজ খবর পেয়ে ড্রাগন বাগানে দেখতে আসলাম, দেখে অনেক ভাল লাগলো৷ যেহেতু ড্রাগন ফল চাষ হচ্ছে আমাদের এলাকার মাটিতে তাই আমিও এই ফল চাষ করতে আগ্রহী আছি যদি কৃষি বিভাগ সহযোগিতা করে৷ 

>> আরও পড়ুন: ‘আমি যেকোনো তালা অনায়াসে ভাঙতে পারি, আমরা ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে চুরি করি’

বাগান দেখতে আসা লিয়াকত আলী বলেন, আমি খবর পেয়ে এই ড্রাগন বাগান দেখতে আসছি বন্ধুদের সাথে৷ আমাদের তেঁতুলিয়ায় এটাই প্রথম বাগান। দেখলাম, বাড়ির জন্য ড্রাগন ফলও কিনলাম৷
dragonকৃষক খোদা বক্স বলেন, আমিও আগে কখনও ড্রাগন ফল দেখিনি। আমার ছোট ছেলের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় আমি প্রথম চাষ করেছি৷ আমার ছেলে টাঙ্গাইল থেকে ড্রাগন চারা সংগ্রহ করে নিয়ে আসে, পরে আমি জমি প্রস্তুত করে চারা রোপণ করি৷ প্রথম দিকে ভয় থাকলেও পরে বাগানে ফুল আসায় আশার আলো দেখছি৷ 

‘যেহেতু পরীক্ষামূলকভাবে চাষে আমি সফল হয়েছি তাই আগামীতে আমার বাগান সম্প্রসারণ করতে আমি জমি প্রস্তুত করেছি। তবে কৃষি বিভাগ থেকে যদি সহযোগিতা পাই, তাহলে আমার বাগানকে আরও এগিয়ে নিতে পারবো৷ আমার ড্রাগন বাগান থেকে অনেক কৃষক অনুপ্রাণিত হয়ে ড্রাগন চাষে আগ্রহী হচ্ছে।

>> আরও পড়ুন: প্রেমিকার সামনে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে প্রেমিকের মৃত্যু

তেঁতুলিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তেঁতুলিয়ায় প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে বানিজ্যিক ভাবে ড্রাগনের চাষ হয়েছে। আমি ইতোমধ্যে সরজমিনে বাগান পরিদর্শন করেছি৷ বাগান মালিককে আমরা শুরু থেকে কৃষি বিভাগ থেকে বিভিন্ন সেবা ও সহযোগীতা করে আসছি৷ তিনি যদি কোনো সহযোগিতা চান তাহলে আমরা কৃষি বিভাগ থেকে সহযোগিতা করে পাশে থাকবো৷ 

প্রতিনিধি/এএ