জেলা প্রতিনিধি
২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:২৮ পিএম
চারদিকে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকা আবর্জনা, প্লাস্টিক ও খাদ্য বর্জ্য। কোথাও জমে আছে নোংরা পানি, কোথাও আবার উপচে পড়া ডাস্টবিন থেকে ছড়াচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি রোগীদের সেবার জায়গা। ভোলা জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরার প্রায় এক লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবার একমাত্র সরকারি ভরসা মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বর্তমান চিত্র এমনই হতাশাজনক।
সরেজমিনে দেখা যায়, ৫০ শয্যার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ার্ড, করিডোর, এমনকি বহির্বিভাগের আশপাশেও নেই নিয়মিত ও পরিকল্পিত পরিচ্ছন্নতার কোনো চিহ্ন। মেঝেতে জমে থাকা ময়লা ও পানিতে পিচ্ছিল হয়ে উঠেছে চলাচলের পথ। কোথাও কোথাও রোগীদের শয্যার পাশেই পড়ে আছে প্লাস্টিক, খাবারের উচ্ছিষ্ট ও অন্যান্য বর্জ্য। ডাস্টবিন থাকলেও সেগুলো নিয়মিত খালি করা হয় না, ফলে ময়লা উপচে পড়ে আশপাশে ছড়িয়ে যাচ্ছে।

রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, এখানে পরিচ্ছন্নতার দায়িত্বে যারা নিয়োজিত, তাদের বড় একটি অংশ নিয়মিত ডিউটি করেন না। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা না হওয়ায় দিনের পর দিন একই অবস্থায় পড়ে থাকে ওয়ার্ড ও করিডোর। একাধিক রোগীর স্বজন জানান, অনেক সময় পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের খুঁজে পাওয়া যায় না, আর থাকলেও কাজের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায় না। ফলে হাসপাতালের ভেতরেই তৈরি হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা বলছেন, এমন নোংরা পরিবেশে রোগী রাখা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। স্বাস্থ্যবিধি মানা তো দূরের কথা, এখানে চিকিৎসা নিতে এসে নতুন করে সংক্রমণের শিকার হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যাচ্ছে।

হাফসা নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, আমরা বাধ্য হয়েই এখানে আসি। কিন্তু এই পরিবেশে রোগী সুস্থ হওয়ার চেয়ে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ার ভয় থাকে।
স্থানীয়দের মতে, রোগীদের প্রধান আশ্রয়স্থল এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এমন অব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতাকেই সামনে আনছে। নিয়মিত তদারকি ও জবাবদিহির অভাবে পরিচ্ছন্নতার কাজ কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে। তারা দ্রুত পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা জোরদার করা, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের নিয়মিত ডিউটি নিশ্চিত করা এবং সার্বিক রক্ষণাবেক্ষণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে মনপুরা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কবির সোহেল বলেন, যারা ডিউটি ফাঁকি দেবে, খোঁজ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও নোংরা পরিবেশ দ্রুত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা করা হবে।
প্রতিনিধি/এসএস