images

সারাদেশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফুটপাতে জমে উঠেছে পিঠা ব্যবসা, চাহিদা বেশি ডিম চিতইয়ের

জেলা প্রতিনিধি

১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:০৯ এএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের অলি-গলিসহ ফুটপাতে জমে উঠেছে নানা রকমের পিঠার ব্যবসা। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে পিঠা বিক্রি। প্রতিটি দোকানেই থাকে ক্রেতাদের ভিড়। শহরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ফুটপাত থেকে নানা রকমের পিঠা কিনে নিয়ে যান বাসা-বাড়িতে। পরিবার পরিজন নিয়ে খান এক সঙ্গে। আবার অনেকে রাস্তায় দাঁড়িয়েই স্বাদ নেন শীতের পিঠার।

সারা বছরই জেলা শহরের ২/৩টি রাস্তার ফুটপাতে ভাসমান ব্যবসায়ীরা পিঠা বিক্রি করলেও শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে দোকানের সংখ্যা। বর্তমানে জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়কের ফুটপাত ছাড়াও বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার অলি-গলিতে ভাসমান বিক্রেতারা পিঠা বিক্রি করছেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে তাদের পিঠা বিক্রি। শহরের শ্রমজীবী মানুষই তাদের প্রধান ক্রেতা। তবে বিভিন্ন এলাকা থেকে উচ্চবিত্তের লোকেরাও এসে তাদের পরিবার-পরিজনের জন্য ফুটপাত থেকে নানা রকমের পিঠা কিনে নিয়ে যান। পিঠার জন্য প্রচুর ক্রেতা থাকায় অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে পিঠা কিনতে হয়।

thumbnail_1000201087

সরজমিনে দেখা গেছে, শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলা শহরের মেড্ডা বাসস্ট্যান্ড, কুমারশীল মোড়, ট্যাংকেরপাড়, পৌর সুপার মার্কেট, সিটি সেন্টার, আধুনিক পৌর সুপার মার্কেট, কোর্ট রোড, মসজিদ রোড, হাসপাতাল রোড, সাবেরা সোবহান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সড়ক, রেলওয়ে স্টেশন রোড, কান্দিপাড়া মাদরাসা রোড, কাজীপাড়া জেলা ঈদগাহ ময়দান, ডা. ফরিদুল হুদা রোড, কাউতলী জেলা পরিষদের মার্কেটের সামনেসহ জেলা শহরের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ের ফুটপাত ও শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার রাস্তার মোড়ে পিঠা বিক্রি হচ্ছে। সকাল ১০টার পর থেকেই দোকানিরা ফুটপাতে মাটির চুলা, এলপি গ্যাস ও কোরোসিনের চুলা নিয়ে বসে যান। এসব দোকানে চিতই পিঠা, মেরা পিঠা (চোয়া পিঠা), ভাঁপা পিঠা, পোয়া পিঠা (তেলের পিঠা), পাটিসাপটা পিঠা বেশি বিক্রি হয়। তবে কনকনে এই শীতে চিতই পিঠা ও ভাঁপা পিঠারই কদর বেশি। ক্রেতাদের অর্ডার অনুযায়ী খেজুরের গুঁড়, ধনেপাতা ও কাঁচা মরিচ দিয়ে ভাঁপা পিঠা তৈররি করে দেওয়া হয়। এছাড়া চিতই পিঠার সঙ্গে ক্রেতাদেরকে সরিষা ভর্তা ও চেপা শুটকির ভর্তা দেওয়া হচ্ছে। গরম গরম পিঠা পেয়ে ক্রেতারাও দারুণ খুশি। প্রতিটি বড় ভাঁপা পিঠা ২০ টাকা ও প্রতিটি ছোট ভাঁপা পিঠা ১০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিটি বড় সাইজের চিতই পিঠা ২০ টাকা এবং ছোট সাইজের চিতই পিঠা ১০ টাকা করে বিক্রি করা হয়।

শহরের পৌর আধুনিক সুপার মার্কেটের সামনের পিঠা বিক্রেতা জসিম জানান, প্রতিদিন তিনি দুই থেকে তিন হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করেন। এতে তার লাভ হয় ৫০০/৬০০ টাকা।

1000201084

তিনি বলেন, আগে তিনি প্রতিদিন ৫/৬ কেজির চালের গুঁড়ার পিঠা বিক্রি করলেও বর্তমানে ৭/৮ কেজি চালের গুঁড়ার পিঠা বিক্রি করতে পারেন।

তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন বেলা ১১টার পর তিনি দোকান নিয়ে বসেন। রাত ১০/১১টা পর্যন্ত চলে তার বেঁচা কেনা। তার এখানে চিতই ও ভাঁপা পিঠাই বেশি বিক্রি হয়। ধনে পাতা ও কাঁচা মরিচ দিয়ে তৈরি ভাঁপা পিঠা এবং নারকেল-খেজুরের গুঁড় দিয়ে তৈরি ভাঁপা পিঠার চাহিদাই বেশি। তিনি জানান, অনেকেই  তার কাছ থেকে পিঠা কিনে বাসা-বাড়িতে নিয়ে যান।

 

শহরের কুমারশীল মোড়ের পিঠা বিক্রেতা ফুল বেগম বলেন, আল্লাহর রহমতে এবার বেচা-বিক্রি ভালো হচ্ছে। তিনি জানান, চিতই পিঠার সঙ্গে ক্রেতাদের চাহিদানুযায়ী সরিষার ভর্তা ও শুঁটকির ভর্তা দেন তিনি। এছাড়া ডিম চিতই পিঠার চাহিদাও বেশি।

টেংকেরপাড়ে পিঠা নিতে আসা রিফান জানান, তার বাড়ি জেলার বিজয়নগর উপজেলার কামালমুড়া গ্রামে। তিনি কলেজের হোস্টেলে থাকেন। রিফান বলেন, শীতের দিনে বাড়িতে মা-চাচিরা তাদেরকে হরেক রকমের পিঠা বানিয়ে খাওয়াতেন। হোস্টেলে থাকায় এখন মা-চাচির হাতে তৈরি পিঠা তো পাওয়া যায় না। তাই সুযোগ পেলেই শহরের ফুটপাত থেকে চিতই পিঠা ও ভাঁপা পিঠা কিনে খান।

কয়েকজন দোকানি জানান, ক্রেতাদের কাছে চিতই ও ভাপার পাশাপাশি ডিম চিতই (পিঠার মধ্যে গোটা ডিম দিয়ে) পিঠার চাহিদা বেশি।

প্রতিনিধি/টিবি