নড়াইলের ফুটপাত, রাস্তার আশপাশ, অলিতে-গলিতে, মোড়ে মোড়ে এখন শোভা পাচ্ছে শীতের পিঠার দোকান। শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে নড়াইলে জমে উঠেছে পিঠা বিক্রি। শীতের মৌসুমে মুখে জল আনা পিঠা-পুলির দোকানে ভিড় করছে শিশু-কিশোর, যুবক, বৃদ্ধসহ সব বয়সী মানুষ। পিঠা খাওয়া আর গল্প আড্ডায় মেতে ওঠেন সবাই। এভাবে বেচাবিক্রি বাড়ায় খুশি বিক্রেতারাও।
![]()
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে নড়াইল শহর ও লোহাগড়া উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, দিনের বেলায় তেমন একটা দেখা না গেলেও সন্ধ্যা থেকেই জমে ওঠে ভ্রাম্যমাণ এসব পিঠার দোকান। এসব দোকানে ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, ডিম চিতই পিঠা ও পাটিসাপটা পিঠা বানানো হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে ভাপা পিঠা ও চিতই পিঠা বেশি জনপ্রিয়। উপজেলার পিঠার দোকানগুলোতে প্রতি পিস চিতই পিঠা ৫ টাকা ও ভাপা পিঠা ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কোনো কোনো জায়গায় ১৫ টাকায় বিক্রি হয় স্পেশাল ভাপা পিঠা। আবার অনেক দোকানি চিতই পিঠার মধ্যে ডিম দিচ্ছেন। এই ডিম চিতই পিঠা প্রতি পিস ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
![]()
ভাপা পিঠা বানালেও চিতই পিঠার সঙ্গে এসব দোকানিরা দিচ্ছে সরিষার ভর্তা, শুঁটকি ভর্তা, মরিচের ভর্তা ও ধনেপাতা ভর্তা। এসব দোকানে পিঠা খেতে আসা মানুষেরা বলেন, শীতের আমেজে পিঠা খেতে ভালো লাগে।
বিক্রেতারা জানান, শীতের মৌসুম এলেই তারা কেবল এই ব্যবসায় জড়ান। বছরের অন্যান্য সময় তারা ভিন্ন ভিন্ন পেশায় শ্রম দেন। তারা বলেন, এ বছর শীতের আগমনে পিঠা বিক্রি শুরু হয়েছে এক-দেড় মাস ধরেই।
বিজ্ঞাপন
নড়াইল শহর ছাড়াও লোহাগড়া উপজেলার পোদ্দার পাড়া, লক্ষীপাশা পোস্ট অফিসের সামনে মশলার দোকানের পাশে, লক্ষীপাশা চৌরাস্তায়, আলা মুন্সীর মোড়, লোহাগড়া জামরুলতা সুইচ গেটের পাশে, ফয়েজ মোড়, কুন্দশী চৌরাস্তায় এসব শীতের পিঠার দোকান জমে উঠেছে। সারাবছর কম বেশি পিঠা বিক্রি হলেও শীত এলে বেড়ে যায় ক্রেতাদের আনাগোনা। পিঠা প্রেমিকদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে এসব দোকান। পুরুষের পাশাপাশি অনেক নারীরাও দোকানে পিঠা বিক্রি করছেন।
![]()
মাহাফুজ ও সুমি আক্তার পপি নামের দু’জন ক্রেতা ঢাকা মেইলকে বলেন, আমরা প্রায়ই এখানে পিঠা খাই। চাল ভেঙে গুড়া করে পিঠা বানানোর সময় সুযোগ হয় না। ঝামেলা ছাড়া স্বল্প দামে হাতের নাগালে এখন পিঠা পাই। তাই এসব পিঠাই আমাদের ভরসা।
![]()
লোহাগড়া পৌরসভাধীন পোদ্দার পাড়ার বাসিন্দা সুজিত পোদ্দার ঢাকা মেইলকে বলেন, বাসায় পিঠা তৈরি করা অনেক কষ্টকর ও ঝামেলা মনে হয়। তাই আমি আমার পরিবারের সদস্যদের জন্য বাজার থেকে চিতই ও ভাপা পিঠা কিনে নিয়ে যাই। আমার পরিবারের সদস্যরা এই পিঠা খুব পছন্দ করে।
লক্ষীপাশা পোস্ট অফিসের সামনে পিঠা বিক্রেতা মোসা. রেবা বেগম ঢাকা মেইলকে বলেন, আমার বাড়ি লোহাগড়া পোদ্দার পাড়া। আমার এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ে সপ্তম শ্রেণিতে এবং ছেলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। আমি প্রতিদিন এক হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করি। যা দিয়ে ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচসহ আমার সংসার চলছে। তবে শীত শেষ হলেই আমরা আবার অন্য পেশায় চলে যাই।
প্রতিনিধি/এসএস

