জেলা প্রতিনিধি
১৯ আগস্ট ২০২৫, ১১:৩৮ এএম
আহত জুলাই যোদ্ধাদের চিকিৎসা ব্যয় নিয়ে ফেসবুক পোস্টে বিরূপ মন্তব্য করার জেরে নেত্রকোনার মদন উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের কম্পিউটার অপারেটর ও মুদ্রাক্ষরিক পদে কর্মরত আব্দুল আউয়ালকে কারণ দর্শাতে (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) মদন উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা জোবায়েদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ৭ আগস্ট তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা।
তবে অভিযুক্ত অফিস সহকারী আব্দুল আওয়ালের দাবি- ওই পোস্ট তার স্ত্রী করেছে। এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তবে বিষয়টি দুঃখজনক বলে দাবি করেছেন আব্দুল আওয়াল।

শোকজ নোটিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট নিজের ফেসবুকে জুলাই যোদ্ধাদের চিকিৎসা ব্যয় নিয়ে কটাক্ষ করে পোস্ট দেন আব্দুল আওয়াল। এদিন ‘৭৮ জন জুলাই যোদ্ধার উন্নত চিকিৎসায় ব্যয় ১০০ কোটি টাকা’ এই শিরোনামে গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি সংবাদের ফটোকার্ড নিজের ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করে আব্দুল আওয়াল এর ক্যাপশনে লিখেন- ‘বাপ দাদার ভাগ্য যে ১০০০ কোটি লাগে নাই, মাত্র ১০০ কোটি লাগছে’। ওই ফটো কার্ডে শিরোনামের পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ছবি রয়েছে। পোস্টটি উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার নজরে পড়লে আব্দুল আওয়ালকে এ বিষয়ে কারণ দর্শাতে নোটিশ দেওয়া হয়।
উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা জোবায়েদ হোসেনের স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০২০ পরিপত্রে (জ) অনুযায়ী রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য সম্বলিত পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা রয়েছে। আপনি উক্ত নির্দেশনা অমান্য করে জুলাই যোদ্ধাদের চিকিৎসা ব্যয় সম্পর্কে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন যা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯ এর পরিপন্থি।
এমতাবস্থায়, এহেন আচরণের জন্য আপনার বিরুদ্ধে কেন সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা ২০১৯ অনুযায়ী শান্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে না তার সন্তোষজনক জবাব পত্র প্রাপ্তির দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রেরণের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।

এ বিষয়ে অফিস সহকারী আব্দুল আওয়াল বলেন, ওইদিন আমার মোবাইলফোনটি বাসায় রেখে এসেছিলাম। এক পর্যায়ে আমার স্ত্রী এমন একটি পোস্ট করেছে। গ্রামের সহজ-সরল মেয়ে না বুঝে এ কাজ করে ফেলেছে। এই পোস্ট করা ঠিক হয়নি। এ জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। সরকারি চাকরি করি তাই নিয়ম মেনে চলা উচিত। শোকজের জবাব যথাযথ নিয়মে অফিসে জমা দিয়েছি।
এ বিষয়ে মদন উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা জোবায়েদ হোসেন বলেন, আহত জুলাই যোদ্ধাদের চিকিৎসা ব্যয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিরূপ মন্তব্য করায় আব্দুল আওয়ালকে শোকজ করা হয়েছিল। তিনি লিখিতভাবে এর জবাব দিয়েছেন। এটি (জবাবপত্র) বিভাগীয় কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। বিভাগীয় কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিনিধি/এসএস