images

সারাদেশ

২ টাকার হোটেল: গোশত ভাতের সঙ্গে আজ মিষ্টি-পান সুপারি

জেলা প্রতিনিধি

০২ আগস্ট ২০২৫, ০২:১৩ পিএম

ডেকোরেটর থেকে আনা হয়েছে চেয়ার, টেবিলসহ সামিয়ানা। অতিথিদের জন্য করা হয়েছে সুন্দর আপ্যায়নের ব্যবস্থা। খাবারের মেনুতে আজ হয়েছে খাশির মাথা দিয়ে ঘন ডাল, মুরগির গোশত, সাদা ভাত, মিষ্টি। সঙ্গে রয়েছে পান সুপারি।

এমন আয়োজন কোনো বিয়ে বাড়ি বা সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য নয়। এটি রাজবাড়ী জেলা শহরের কয়েক জন তরুণ সমাজ সেবকের উদ্যোগের ‘২ টাকার হোটেল’।

২ টাকার হোটেল হলেও এখানে সম্পূর্ন বিনা খরচে পেটভরে খেতে পারেন সমাজের অসহায়, হতদরিদ্র, ছিন্নমূল, ভাসমান, দিনমজুরসহ নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। প্রতি সপ্তাহে দুই দিন রাজবাড়ী রেল স্টেশনের পাশে ফুলতলায় বসে এই বিনামূল্যের ‘২ টাকার হোটেল’।

thumbnail_1000011738

এখানে খেতে আসা দিনমজুর করিম শেখ বলেন, আমরা অন্য জেলা থেকে রাজবাড়ীতে কাজের সন্ধানে এসেছি। গত কয়েকদিন বৃষ্টি থাকায় কাজ জোটেনি। তাই কদিন ধরে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটিয়েছি। আজ এখানে ২ টাকার হোটেলে পেট ভরে গোশত দিয়ে গরম ভাত খেলাম। মনে শান্তি পেয়েছি।

৬৫ বছর বয়সী বৃদ্ধা করিমন বেগম বলেন, আমি মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেড়াই। যে যা দেয় তাই খাই। ছেলেরা এখানে গরীব মানুষদের খাওয়াচ্ছে, তাই খেতে পারছি। অনেক দোয়া রইলো ছেলেদের জন্য।

thumbnail_1000011717

রাজবাড়ী রেল স্টেশন প্লাটফর্মে থাকেন জব্বার মন্ডল। তিনি বলেন, আজ এখানে খাসির মাথা দিয়ে ডাল, মুরগির গোশত দিয়ে ভাত খাওয়াচ্ছে। খাবার শেষে আবার মিষ্টি ও পান সুপারি দিয়েছে। মনে হলো যে, বিয়ে বাড়িতে দাওয়াত খেলাম।

আয়োজকদের একজন মাহিন শিকদার জানান, আমরা কয়েক বন্ধু মিলে দীর্ঘদিন ধরেই অসহায় মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। তারই ধারাবাহিকতায় আজ এই ‘২ টাকার হোটেল’ এর আয়োজন। যদিও নাম ২ টাকার হোটেল, তবে এখানে সবাই বিনামূল্যে খেতে পারবেন। সপ্তাহে দুই দিন আমরা এই আয়োজন চালিয়ে যাব।

thumbnail_1000011675

মনিরুল হক সাগর নামে আরেক আয়োজক বলেন, আজ আমরা ৬০ জন মানুষের জন্য ভাত, মুরগির গোশত ও খাসির মাথা দিয়ে ডালের ব্যবস্থা করেছি। নিজেদের জমানো টাকা ও কয়েকজন বড় ভাইয়ের সাহায্যে এই আয়োজন চলছে।

 

রাজবাড়ী জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সাংবাদিক কাজী তানভীর মাহমুদ বলেন, ২ টাকার হোটেল একটি মানবিক কাজের প্লাটফর্ম। এখানে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সমাজের অসহায়, হতদরিদ্র, ছিন্নমূল, ভাসমান, দিনমজুরসহ নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষ সপ্তাহে দুই দিন পেট ভরে খেতে পারছেন। প্রতিবারে খাবারের আয়োজনে ভিন্নতা থাকে। আমি নিজেও এই আয়োজনে তরুণদের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছি। তরুণরা আজ যে আয়োজন করেছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। সমাজের সব স্তরের মানুষের উচিত অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো। আল্লাহ আমাদের সবাইকে মানুষের সেবা করার তৌফিক দিন।

প্রতিনিধি/টিবি