জেলা প্রতিনিধি
৩০ জুলাই ২০২৫, ০৪:৫৪ পিএম
মুন্সিগঞ্জ সদরের চরাঞ্চলের কালিরচর গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা নদীর পাড় ঘেঁষে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। এতে ফসলি জমি ও বসত ভিটা রক্ষায় গ্রামবাসীর ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিক্ষুব্ধ জনতা আগুন দিয়ে দু’টি লোড ড্রেজার পুড়িয়েছে।
এছাড়াও একই দিন সদর বালু মহালে নদীর পার ঘেঁষে বালু উত্তোলনের দায়ে উপজেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করে আব্দুর রহমান ও মো. জাকির নামে দুই ড্রেজার শ্রমিককে আটক করেছে। পরে তাদের ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
![]()
বুধবার (৩০ জুন) সকাল ১০টার দিকে জেলা সদরের আধারা ইউনিয়নের কালিরচর গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা নদীতে গ্রামবাসী বালু উত্তোলনকারীদের ধাওয়া দেয়।
কালিরচর গ্রামবাসীর দাবি, বালু মহালের নির্ধারিত স্থান ছেড়ে গ্রাম ঘেঁষে বালু উত্তোলন করার ক্ষোভ থেকেই আজ ধাওয়া দেওয়া হয়েছে। ওরা যেখানে বালু উত্তোলন করছে, তা আমাদের সম্পত্তি।

একাধিক স্থানীয়রা জানান, জেলা প্রশাসনের দেওয়া মেঘনা নদীর ভাষানচর বালু মহালের ইজারাদারের লোকজন কয়েকদিন ধরেই গ্রাম ঘেঁষে বালু উত্তোলন করছিলেন। এতে গ্রামের নদীতীরবর্তী ফসলি জমি ও বসতভিটা ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দেয়। এ পরিস্থিতিতে গ্রামবাসীর মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করে। এতে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী বালু উত্তোলনে বাধা দিতে মহালে ছুটে যান। এসময় লোড ড্রেজারগুলো ছোটাছুটি করে পালিয়ে যায়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত গ্রামবাসী দু’টি থেমে থাকা লোড ড্রেজারে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ভাষানচর বালু মহালের ইজারাদার জিএস মনিরুজ্জামান মনির বলেন, আমরা বৈধ মহাল ইজারা নিয়েছি। আমাদের প্রশাসন থেকে বুঝিয়ে দেওয়া স্থানে বালু উত্তোলন করছি।
তবে ভুক্তভোগী কালিরচর গ্রামের এক বাসিন্দা খলিল মিজি (৬৫) এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে জানান, বালু মহাল ইজারা হয়েছে ভাসানচর মৌজায়। আর ওরা আমাদের কালিরচর মৌজায় বালু কাটছে। এখানে সর্বশেষ জরিপে নদী ঘেঁষা রেকর্ডিং জমি রয়েছে। এখানে তিন ফসিল জমি রয়েছে। তাই গ্রামবাসী জমি রক্ষায় প্রতিহত করেছে, যাতে বাপদাদার সম্পদ রক্ষা হয়।

কালিরচর গ্রামের বাসিন্দা রিনা বেগম বলেন, গ্রামের মানুষ অসহায়। বাড়িঘর ভেঙে গেলে কই গিয়া থাকব। যারা বালু কাটে তারা বড়, গ্রামের নিরীহ মানুষের কথা কেউ বলে না। আমরা এর প্রতিকার চাই।
সদরের চরআব্দুল্লাহ নৌ-ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহবুব আলম বলেন, আমরা আজ সকালে ওই এলাকায় অভিযান করেছি। তাদের দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনিয়ম হলে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ কে এম হাসানুর রহমান বলেন, আমরা আজ বালু মহালের বিষয়ে স্থানীয়দের অভিযোগের বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করি। এসময় নদীর পার ঘেঁষে বালু তোলার দায়ে দু’জনকে আটক করা হয়। পরে দুই লাখ জরিমানা করে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে কেউ আইন অমান্য করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিনিধি/এসএস