images

সারাদেশ / শিক্ষা

রাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে ছাত্রদল নেতাদের নিয়ে খেলা উদ্বোধন, বিতর্ক

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

১৯ জুলাই ২০২৫, ০৪:০৭ পিএম

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকলেও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে নিয়ে ফাইনাল খেলার উদ্বোধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও বহিরাঙ্গন পরিচালক ড. মো. ফেরদৌস রহমান। জন্ম দিয়েছে নতুন বিতর্ক।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, একজন সিন্ডিকেট মেম্বার হয়ে যিনি লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তিনি কীভাবে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে নিয়ে খেলা উদ্বোধন করেন? এটা কি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর মতোই হলো না?

শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ফুটবল মাঠে ১৪,১৫ ও ১৬ ব্যাচকে নিয়ে আয়োজিত খেলার ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- বৈষম্যবিরোধী নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু। প্রধান অতিথি হিসেবে ফাইনাল খেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও বহিরাঙ্গন পরিচালক ড. মো. ফেরদৌস রহমান, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মোল্লা মোহাম্মদ মুসা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালেহ মো. আদনান এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাইজুল খান। এছাড়াও ছিলেন শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আল আমিন ইসলামসহ দলের অন্যান্য কর্মীরা। তারা অতিথি হিসেবে খেলার মাঠে উপস্থিত থেকে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন ও খেলার শুভ কামনা জানান। খেলা শেষে খেলোয়াড়দের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতারা।

আরও পড়ুন

মেমোরি স্ট্যাম্পে আবু সাঈদের বিকৃত তথ্য, ঢেকে দিলেন শিক্ষার্থীরা

তবে অনুষ্ঠানটির ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।

এ বিষয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগের খেলায় কীভাবে বহিরাগত ছাত্র নেতাদের এনে পুরস্কার বিতরণ করেন, কীভাবে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে একটা দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বিশেষ অতিথি হয়? সেখানে ছাত্রদল নেতাদের নিয়ে এমন অনুষ্ঠানের অনুমতি কীভাবে দেওয়া হলো?

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এতদিন ধরে ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ রাখলেও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে নিয়ে প্রক্টরের এ ধরনের আয়োজনকে ঘিরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।

এ বিষয়ে বেরোবি শাখার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মো. শামসুর রহমান সুমন বলেন, লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধ থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ক্যাম্পাসে ডেকে আনা ক্যাম্পাসে অপরাজনীতি প্রবেশের প্রয়াস। আর সেখানে রাজনৈতিক ব্যক্তিরা থাকা স্বত্বেও প্রক্টরের উপস্থিত থাকাটা বিব্রতকর। প্রশাসনের এই হঠকারিতা শিক্ষার্থীরা মেনে নিবে না।

আরও পড়ুন

জামায়াতের সমাবেশ: শিক্ষার্থীদের জরুরি নির্দেশনা ঢাবি প্রশাসনের

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও বহিরাঙ্গন পরিচালক ড. মো. ফেরদৌস রহমান বলেন, অফিসিয়ালি আমি অতিথি ছিলাম। ভিসি স্যার থাকার কথা ছিল কিন্তু উনি দাফতরিক কাজে বাইরে থাকার কারণে থাকতে পারেননি। ওরা খেলা দেখতে এসেছিল। এই জন্য ছিল। ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে বহিরাগত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় বড় বড় নেতারা কীভাবে আসতে পারে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সাথে খেলা উদ্বোধন করতে পারে এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, খেলা পরিচালনার দায়িত্বে যারা ছিল তাদেরকে বললে ওরা বলতে পারবে। তারা আসতে পারে কিনা এ বিষয়ে তিনি বলেন, এটা আমার অনুমতি নিয়ে করেনি। কনফারেন্সে আছি পরে ফোন দিবে বলে ফোন কেটে দেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. শওকত আলী বলেন, আমি এ বিষয়ে জানি না। তারা (১৪ ব্যাচ) আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী। তারা যদি আয়োজন করে আমাদেরকে তাদের অনুমতি প্রশাসনের পক্ষ থেকে দিতে হয়। ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ার পরও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে আসেন। তারা যে এরকম করবে তারা কি অনুমতি নিয়েছেন? ছাত্রদেরকেও তো কিছু দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হয়। তাছাড়াও তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা যখন অনুমতি নেয় তখন কি বলছে অমুক অমুক আসবে।

প্রতিনিধি/এসএস