জেলা প্রতিনিধি
১৬ জুলাই ২০২৫, ০৯:১১ এএম
‘পরিকল্পিত বনায়ন করি, সবুজ বাংলাদেশ গড়ি’ প্রতিপাদ্যে সার্কিট হাউজের টেনিস কোর্ট প্রাঙ্গণ জুড়ে এখন চলছে জাতীয় বৃক্ষমেলা ২০২৫। এই মেলাকে শুধু বৃক্ষ বিক্রির একটি বার্ষিক আয়োজন বললে ভুল হবে। এটি হয়ে উঠেছে প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের নিবিড় সম্পর্কের সেতুবন্ধন। গাছের পাতায় পাতায় লেখা এক নিঃশব্দ ভালোবাসার কবিতা।
গত ৭ জুলাই থেকে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে ২১ দিনব্যাপী। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত উন্মুক্ত এই আয়োজন যেন ধূসর শহরের বুকে উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে সবুজের এক নিঃশব্দ উৎসব হিসেবে। মেলায় ফুল, ফল, বনজ, ওষুধি, ইনডোর, ক্যাকটাসসহ শতশত রকম গাছের মেলা বসেছে। কেউ কিনছেন ছাদবাগানের জন্য ফলের গাছ, কেউ ছোট্ট বারান্দার কোণে রাখবেন বলে নিয়েছেন বনসাই, কেউবা স্রেফ শখে কিনেছেন অর্কিড। চারদিক জুড়ে গাছেদের রাজত্ব।
বৃক্ষমেলার নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানা যায়, এবার মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৬১টি। এর মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে ১০টি।
![]()
সোমবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন জাতের চারা বিক্রি হয়েছে ৮,৩৯৪টি। যার আর্থিক মূল্য ১২ লাখ ৭৬ হাজার ৭শত ৮৫ টাকা। এর মধ্যে রয়েছে বনজ, ফলজ, ওষধি, শোভাবর্ধনসহ নানা ধরনের গাছ। গতবছর জুলাই আন্দোলনের কারণে প্রায় সপ্তাহখানেক টোটাল বেচাকেনা বন্ধ ছিল। সে বছর ২৯ হাজার ২৫৬টি বৃক্ষের মূল্য ছিল ৩৩ লাখ ৮২ হাজার ৪৫০ টাকা।
বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখা যায়, সফেদা, ডেউয়া, লটকন, জলপাই, লেবু, জাম্বুরা, আতা, গাব, কাজুবাদাম, করমচা, জামরুল, আমলকী, আঙুর, অড়বড়ই, কাউফলসহ বিভিন্ন দেশি ফলের চারা ও বড় গাছ আছে স্টলগুলোতে। বিদেশি ফলের মধ্যে আছে অ্যাভোকাডো, পার্সিমন, রাম্বুটান, লঙ্গান, ডুরিয়ান, প্রভৃতি। শ্রীলঙ্কান, ভিয়েতনামি, কেরালাসহ নানা ধরনের নারকেলের চারা বিক্রি করতে দেখা গেল কিছু স্টলে। মেলায় নানা রকম মসলার চারা শোভা পাচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে এলাচি, চুইঝাল, গোলমরিচ, দারুচিনি, তেজপাতা।
![]()
নয়নতারা নার্সারির বিক্রেতা জানালেন, বিভিন্ন ধরনের গাছ রয়েছে আমাদের নার্সারীতে। ফুলের মধ্যে গোলাপ, জবা, জুঁই, চামেলি, বেলি, হাসনাহেনা, টগর, রঙ্গন,বাগান-বিলাস, করবী, কাঠগোলাপ, মাধবীলতা। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রজাতির আমসহ ফলজ,বনজ, ওষধি বৃক্ষ বেচাকেনা হচ্ছে।
আরও পড়ুন
খুলনা নার্সারি মালিক সমিতির সভাপতি এস এম বদরুল আলম রয়েল বলেন, দেশি-বিদেশি, ছাদবাগানসহ বিভিন্ন ধরনের বৃক্ষ পাওয়া যাচ্ছে। প্রথম থেকে ক্রেতা সমাগমও বেশ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। তবে বর্ষার কারণে কেনাবেচা কিছুটা কমেছে।
মেলায় সরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট ম্যানগ্রোভ সিলভিকালচার বিভাগের আয়োজন সুন্দরবন নিয়ে আগ্রহীদের প্রত্যাশা পূরণ করবে। স্টলটি সাজানো হয়েছে সুন্দরবনের নানান রকমের বৃক্ষ, কাঠ, প্রাণীর দেহবশেষ, মাছ, পোকামাকড়, জলজ উদ্ভিদ দিয়ে।
প্রতিনিধি/টিবি