images

সারাদেশ

ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী হেনস্থা, হাতেনাতে ‘দালাল’ ধরলেন শিবির নেতা

জেলা প্রতিনিধি

১৩ জুলাই ২০২৫, ০৮:২৫ এএম

রাজশাহীতে বেসরকারি এক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগীদের হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে গিয়ে হাতেনাতে ‘দালাল’ সিন্ডিকেট ধরেছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজশাহী মহানগর শাখার সভাপতি মোহা. শামীম উদ্দীন।

শনিবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যায় নগরীর ক্লিনিকপাড়া হিসেবে পরিচিত লক্ষীপুর এলাকায় বেলভিউ ইমেজিং অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) রাজপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশরাফুল আলম ঢাকা মেইলকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, ক্লিনিকপাড়া হিসেবে পরিচিত লক্ষীপুর এলাকার বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসেন। এরপর দালালদের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত হতে হয় অনেককে। সিরিয়াল মোতাবেক রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করিয়ে ও চিকিৎসককে না দেখিয়ে দালালদের ধরে আনা রোগীদের আগে দেখানো হয়। এতে প্রায়ই হট্টগোল বাধে।

স্থানীয় কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, ‘রানার বয়’ হিসেবে অল্পবয়সী তরুণদের নিয়োগ দিয়ে থাকে ডায়াগনস্টিকের মালিকরা। তাদের দালাল হিসেবে কাজ করানো হয়। এতে পরীক্ষা নিরীক্ষার শতকরা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ভাগ পান দালালরা।

IMG-20250712-WA0014

ছাত্রশিবিরের রাজশাহী মহানগর শাখার সভাপতি মোহা. শামীম উদ্দীন বলেন, আমার এক আত্মীয়কে ডাক্তার দেখানোর পর বেলভিউ ডায়াগনস্টিকে পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাই। তার ব্লাডের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়ে এমআরআই করানোর জন্য সিরিয়াল দেই। আমাকে বলা হয়, ৫ নম্বর সিরিয়াল। রোগী রেখে আমার কাজের জন্য সেখান থেকে বাইরে চলে আসি। দুঘণ্টা পর শুনি, মাত্র একজনের এমআরআই করা হয়েছে। খবর পেয়ে আমি সেখানে ছুটে গিয়ে দেখি, দালালদের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পরীক্ষা নিরীক্ষা হচ্ছে। আমি এটার প্রতিবাদ জানাই।

শামীম উদ্দীন আরও বলেন, সেখানে বেলভিউ ডায়াগনস্টিকের লোকজন আমাদের রোগী ও রোগীর স্বজনদের সঙ্গে চরমভাবে দুর্ব্যবহার ও মারমুখী আচরণ করে। সেখানে গিয়ে হাতেনাতে তাদের নানা অস্বচ্ছতা পেয়েছি। রোগীরা অসহায় হয়ে রাজশাহীতে চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু তাদের অসহায়ত্বের এই সুযোগ নিয়ে এরকম কর্মকাণ্ড করা বড় ধরনের অপরাধ। এরকম যারা করে আসছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

এ সময় দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান বেলভিউ ইমেজিং অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্বত্বাধিকারী আবু হেনা মোস্তফা কামাল ফটিক। তিনি বলেন, কাজটা আমাদের মোটেও ঠিক হয়নি। আমরা কখনো আর এরকম করব না। এ সময় সংবাদ না করার অনুরোধ জানান তিনি।

এরপর ডায়াগনস্টিকটির আরেক স্বত্বাধিকারী মো. আখলাকুর রহমান বাবু বলেন, এটা আমি খতিয়ে দেখব, কেন এরকম হলো আমরা দেখছি বিষয়টা। সামনে আর এরকম হবে না। তবে ৭/৮ জন ‘রানার বয়’ ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।

এ বিষয়ে আরএমপির রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম ঢাকা মেইলকে, একটা ঝামেলা হয়েছিল। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠিয়েছি। পরে মিটমাট হয়েছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।

জানতে চাইলে রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. এস আই এম রাজিউল করিম বলেন, কোনোভাবেই রোগীদের হেনস্থা করা যাবে না। বিভিন্ন সময় আমাদের অভিযান চলে। দালালদের ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রতিনিধি/টিবি