০৬ জুলাই ২০২৫, ১২:৩৬ পিএম
পদ্মাতীরের এক কুঠিবাড়ি থেকে যাত্রা শুরু করে দেশের শীর্ষ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটি হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) পার করেছে ৭২টি বছর। পদার্পণ করেছে ৭৩ বছরে। ১৯৫৩ সালের ৬ জুলাই প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা, গবেষণা ও সংস্কৃতিতে রেখে চলেছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। উত্তরাঞ্চলের উচ্চশিক্ষার প্রাণকেন্দ্র এই বিশ্ববিদ্যালয়টি আজ দেশের অন্যতম মূল্যবান বিদ্যাপীঠ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
তবে প্রতিষ্ঠার সাত দশকে উল্লেখযোগ্য অনেক অর্জন থাকলেও এখনো শিক্ষকের ঘাটতি, আবাসন সংকট ও সেশনজটের মতো সমস্যাগুলো কাটেনি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, মাত্র ১৬১ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করা প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০ হাজারেরও বেশি। শিক্ষক রয়েছেন ১ হাজার ১২ জন এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা হাজারেরও বেশি। ৭৫৩ একরজুড়ে বিস্তৃত ক্যাম্পাসে রয়েছে ১২টি অনুষদ, ৫৯টি বিভাগ ও ছয়টি গবেষণা ইনস্টিটিউটসহ আধুনিক অবকাঠামো। এছাড়াও রয়েছে ১৪টি একাডেমিক ভবন, ১৭টি আবাসিক হল, আন্তর্জাতিক ডরমিটরি, গ্রন্থাগার, আইসিটি সেন্টার, জাদুঘর, স্টেডিয়াম, সুইমিং পুলসহ নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা।
গবেষণায় গৌরবজনক অবস্থান
শিক্ষা ও গবেষণায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গৌরবজনক অবস্থান গড়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। গবেষণার সাফল্যের মধ্যে রয়েছে:
সম্প্রতি দেশে প্রথমবারের মতো লবণ ছাড়া চামড়া সংরক্ষণের টেকসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন রাবির একজন অধ্যাপক। আরেকজন অধ্যাপক প্লাজমা প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষিতে ফলন বৃদ্ধিতে সফলতা পেয়েছেন। এসব গবেষণা দেশের বাস্তব ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
আরও পড়ুন—
উচ্চশিক্ষা ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি
গত ছয় মাসে ৩৪ জন শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য গেছেন। সম্প্রতি পাঁচজন শিক্ষার্থী আমেরিকার চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রামে ফুল-ফান্ডেড স্কলারশিপ পেয়েছেন।
গবেষণায় রাবি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে।
বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বাড়ছে
২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষে ৯টি দেশের ৩৩ জন বিদেশি শিক্ষার্থী স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি পর্যায়ে ভর্তি হয়েছেন।
বিসিএস ও বিচার বিভাগে সাফল্য
চলমান সংকট ও উন্নয়নের পদক্ষেপ
তবে এসব অর্জনের পাশাপাশি শিক্ষক ও আবাসন সংকট এখনো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে রয়েছে। তৃতীয় বর্ষে পড়েও অনেক শিক্ষার্থী হলে সিট পাচ্ছেন না। বর্তমানে ১৭টি আবাসিক হল থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে:
শ্রেণীকক্ষ সংকট নিরসন
২০ তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজ চলছে, উদ্বোধনের পর শ্রেণীকক্ষ সংকট দূর হবে।
প্রশাসনের মতামত
ভিসি ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘গবেষণা, র্যাংকিং ও উচ্চশিক্ষায় রাবি ভালো করছে। শিক্ষকদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে টিচার ইভালুয়েশন চালু হচ্ছে। পরীক্ষা মূল্যায়নে নাম ও রোলবিহীন কোডিং-ডিকোডিং পদ্ধতি চালু হচ্ছে। প্রতিটি বিভাগে কারিকুলাম আধুনিকায়নের কাজ চলছে।’
ড. মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান, প্রো-ভিসি (শিক্ষা)। তিনি বলেন, ‘সেশনজট নিরসনে প্রতিটি বিভাগের সেমিস্টার ও পরীক্ষা যেন নির্ধারিত সময়ে হয়, তা মনিটরিং করা হচ্ছে। আশা করছি, দ্রুতই এ সমস্যা কেটে যাবে।’
প্রতিনিধি/একেবি