images

সারাদেশ / শিক্ষা

সেই আওয়ামী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ১ যুগ পর উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠন

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

২৯ জুন ২০২৫, ০৮:২২ পিএম

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাবিউর রহমান প্রধানের ২০১২ সালের নিয়োগ জালিয়াতির মাধ্যমে হয়েছে—এমন অভিযোগে তদন্তে নেমেছে বিশ্ববিদ্যালয়।

হাইকোর্টের রুল ও দুদকের চিঠির প্রেক্ষিতে শনিবার (২৮ জুন) বর্তমান উপাচার্য ড. মো. শওকাত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বেরোবি ১১৩তম সিন্ডিকেট সভায় এই তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।

20250301192812_big_730x400_42

তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের প্রফেসর ড. এবিএম শাহিদুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের প্রফেসর (অব) শামসুল আলম সরকার এবং সদস্য সচিব বেরোবি রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন অর রশিদ। 

জানা যায়, নিয়োগ বাছাইবোর্ডের সুপারিশপত্র ‘জালিয়াতি করে’ ২০১২ সালে প্রভাষক পদে নিয়োগ নিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ‌্যাপক তাবিউর রহমান প্রধান ১৩ বছর ধরে চাকরি করে যাচ্ছেন। এই অবৈধ চাকরি করে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের শিক্ষক ফোরাম হলুদ দলের দাপট দেখিয়ে, এর নেতা হয়ে, আন্দোলনের ভয় দেখিয়ে।

image-276894-1581341985

সর্বশেষ আবু সাঈদ নিহত হওয়ার পর বিশ্ববিদ‌্যালয় শিক্ষক সমিতির মিটিংয়ে হাসিনা সরকারের পতন ঠেকাতে জোরালো বক্তব‌্য দেন যা গণমাধ‌্যমে প্রকাশিত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা ফুঁসে আছে তার এ অবৈধ নিয়োগ বাতিল করতে। এরই প্রেক্ষিতে তাবিউর রহমান প্রধানের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের আদেশ ও রুল অনুযায়ী তার প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ জালিয়াতি তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ‌্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন

সনদের দাবিতে এনটিআরসির সামনে ‘ফেল করা’ প্রার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায় ,আওয়ামী লীগ সমর্থক হিসেবে বেশ কয়েকবার শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন তাবিউর রহমান। লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) ও লালমনিরহাট-২ (কালীগঞ্জ-আদিতমারী) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নুরুজ্জামান আহমেদ ও মোতাহার হোসেনের পক্ষে নৌকা মার্কার নির্বাচনী প্রচারণা করেছেন তাবিউর। আওয়ামীপন্থি শিক্ষক হিসেবে তাবিউর একাধিকবার শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বে ছিলেন এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে চাকরি টিকিয়ে রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

image-276894-1581341985

শিক্ষক তবিউর রহমানের বিরুদ্ধে গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকৃতভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থী মো. মাহামুদুল হককে বঞ্চিত করে তাবিউরকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ বোর্ডের সুপারিশে কাটাছেঁড়া করে ‘যে কাউকে’ বলে তাবিউরের নাম কলমে বসানো হয়।

১৩ বছর ধরে অবৈধভাবে চাকরি করে যাওয়া তাবিউরকে কেন এখনও বরখাস্ত করা হয়নি—এ প্রশ্ন তুলে মাহামুদুল হক বলেছেন, এটা শুধু একজনের নয়, বিগত সব উপাচার্যের দায়।বিশ্ববিদ্যালয় তাবিউর রহমানকে জালিয়াতি করে চাকরি দিয়েছে এবং আবার এর ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং রিপোর্ট বলছে তার চাকরি অবৈধ। তাহলে তাকে সাসপেন্ড করে না কেন? তিনি কি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অতি প্রয়োজনীয় নাকি তাকে বিশ্ববিদ্যালয় ভয় পায়- কোনটি? তার একদিনও চাকরি করার অধিকার নাই।

images

এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব বেরোবি রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন অর রশিদ বলেন, এ বিষয়ে আগে থেকেই তদন্ত কমিটি ছিল। তবে কিছু সিন্ডিকেট সদস্যরা চেঞ্জ হওয়ার কারণে কমিটি পুনরায় গঠন করা হয়েছে। শিক্ষক তাবিউর রহমানের নিয়োগ জালিয়াতের বিষয়ে ইউজিসি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে অবগত করার প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুতই এর সত্যতা বেরিয়ে আসবে।

প্রতিনিধি/এসএস