১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় চূড়ান্ত ফলাফলে ‘অনুত্তীর্ণ’ দেখানো প্রার্থীরা সনদ প্রদানের দাবিতে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। রোববার (২৯ জুন) সকাল থেকে রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেন রোডে অবস্থিত বোরাক টাওয়ারে এনটিআরসিএ কার্যালয়ের সামনেই বিক্ষুব্ধ প্রার্থীরা অবস্থান নেন।
আন্দোলনরত প্রার্থীদের দাবি, ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের চূড়ান্ত ফলাফল ‘বৈষম্যমূলক ও অস্বচ্ছ’ পদ্ধতিতে প্রকাশ করা হয়েছে। ফলে হাজার হাজার মেধাবী, পরিশ্রমী পরীক্ষার্থী পাস থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এ অবস্থায় ফলাফল সংশোধন করে তাদের সনদ প্রদান করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
বিজ্ঞাপন
এক প্রার্থী বলেন, লিখিত পরীক্ষায় পাস করার পর ভাইভায়ও অংশ নিয়েছি। আমাদের অনেকের ভাইভা সনদে ১২ নম্বর পর্যন্ত রয়েছে। তারপরও কীভাবে ফেল করা হলো, তা বোঝা যাচ্ছে না।
আরেকজন প্রার্থী প্রশ্ন তোলেন, যখন লিখিত পরীক্ষায় নির্ধারিত কাঠামো ও মানবণ্টন অনুযায়ী প্রশ্ন না দিয়ে বিকল্প প্রশ্নবিহীন পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া হয়, তখন তার দায় কি আমাদের?
তারা অভিযোগ করেন, এনটিআরসিএ লিখিত পরীক্ষায় নিজেদের ঘোষিত মানবণ্টন অনুসরণ করেনি। পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে বিকল্প প্রশ্ন না থাকায় পরীক্ষার্থীরা একটি বাধ্যতামূলক প্রশ্ন সেট দিয়েই পরীক্ষা দিতে বাধ্য হন। ওই পরীক্ষা থেকেই শুরু হয় বিভ্রান্তি ও অসঙ্গতির অভিযোগ।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। এতে আবেদন করেন রেকর্ডসংখ্যক প্রার্থী— প্রায় ১৯ লাখ। এরপর ২০২৪ সালের ১৫ মার্চ প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে পাস করেন ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯৮১ জন।
বিজ্ঞাপন
পরবর্তীতে লিখিত পরীক্ষার ফলাফলে উত্তীর্ণদের ভাইভা নেওয়া হয় এবং ২০২৪ সালের ৪ জুন চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। সেই ফলাফলে ৬০ হাজার ৫২১ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হন, আর ফেল করেন ২০ হাজার ৬৮৮ জন। তবে ২৩ জুন সংশোধিত ফলাফল প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ, যেখানে ফলাফল ঘোষণার তারিখ উল্লেখ করা হয় ১৫ জুন।
ফেল করা প্রার্থীরা বলছেন, ভাইভা বোর্ডের সদস্যদের সাক্ষরের ভিত্তিতে তারা পূর্ণ নম্বর পেয়ে থাকলেও চূড়ান্ত ফলাফলে হঠাৎ তাদের অনুত্তীর্ণ দেখানো হয়েছে। তারা এনটিআরসিএ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে মানবিক বিবেচনায় বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিক্ষোভকারীদের ভাষায়, এই সিদ্ধান্ত না বদলালে শিক্ষাক্ষেত্রে আস্থার সংকট সৃষ্টি হবে এবং বহু তরুণ শিক্ষকের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হবে।
প্রতিবাদকারীরা জানিয়েছে, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা শান্তিপূর্ণভাবে এনটিআরসিএ কার্যালয়ের সামনেই অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
এএসএল/এইউ

