জেলা প্রতিনিধি
১১ মে ২০২৫, ০৩:২৬ পিএম
গত কয়েকদিন ধরে গাইবান্ধায় বেড়েছে প্রখর রোদ আর ভ্যাপসা গরম। এ জেলার চরাঞ্চলসহ প্রত্যন্ত অঞ্চল তপ্ত রোদে খাঁ-খাঁ করছে। অসহনীয় দাবদাহে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। তারা একটু স্বস্তি পেতে ছুটছেন গাছ তলায়, ছায়াযুক্ত স্থানে। তীব্র গরমে তৃষ্ণা মেটাতে শিশুসহ সবাই শরবত ও ঠান্ডা পানীয় পানে প্রাণজুড়ানোর চেষ্টা করছে।
রোববার (১১ মে) দুপুরে গাইবান্ধার নিভৃত গ্রামাঞ্চলে দেখা যায় গরমে অতিষ্ঠ মানুষের হাঁসফাঁসের চিত্র। এ সময় ধানকাটা শ্রমিকসহ শ্রমজীবী মানুষেরা ঘাম ঝরা দেহ নিয়ে গাছের নিচে বসে হাঁপাচ্ছিলেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, গাইবান্ধা জেলায় পাঁচ দিন ধরে দিনের বেলায় প্রখর রোদের ঝলকানি। আর এই রোদে পুড়ছে কৃষকের মাঠসহ বাসা-বাড়ি, পথঘাট। দেখা নেই বৃষ্টির। যার ফলে বেড়েছে দাবদাহ। অসহনীয় গরমে মানুষের মাঝে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এর প্রভাবে খেটে খাওয়া মানুষসহ সব শ্রেণি পেশার মানুষেরা কোনো কাজই মনোযোগী হতে পারছে না। অফিস-আদালতের কর্মজীবীদেরও ওষ্ঠাগত অবস্থায়। তীব্র গরমের ঠেলায় তারা ঠিকভাবে করতে পারছে না কাজকর্ম।
গোবিন্দগঞ্জের বোরো ধানকাটা শ্রমিক খয়বর রহমান জানান, কয়েক দিনের প্রখর কাঠফাটা রোদ আর অসহনীয় গরমে কৃষক মাঠে কাজ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। সেই সঙ্গে সিএনজি, আটোরিকশা ও ভ্যান চালকদেরও একই অবস্থা।

কাজল মিয়া নামের এক কৃষক জানান, মাঠে পাটসহ নানা ধরণের সবজি খেত রয়েছে। অনাবৃষ্টির কারণে পুড়ে যাচ্ছে খেত। এতে ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ফুলছড়ির অটোভ্যান চালক আজগর আলী বলেন, জীবিকার তাগিদে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। কিন্তু অসহ্য গরমের ঠেলায় বোতলের ঠান্ডা পানি মাথায় ঢেলে কিছুটা স্বস্তি পেলাম। এ কারণে শ্রমজীবী মানুষের থমকে গেছে জীবনযাত্রা।
রাসেল কনফেকশনারি মালিক এনায়েতুল মোস্তাফিজ বলেন, সম্প্রতি তীব্র দাবদাহের কারণে ব্যবসা বেড়েছে কনফেকশনারী দোকানিদের। এসব দোকানে ফ্রিজে রাখা পানীয়, আইসক্রিম, দই, শরবত ও ইত্যাদি জাতিয় ঠান্ডা খাবার কিনতে ভিড় করছে গরমের কবলে পড়া মানুষ।
সাদুল্লাপুর শহরে ভ্রাম্যমাণ শরবত বিক্রেতা জানান, প্রতি বছরে গরম মৌসুমে শরবত তৈরি করে দর্শনীয় স্থানে বিক্রি করেন। যা শিশুসহ সব বয়সের মানুষের তৃষ্ণাপূরণের উপযোগী। সম্প্রতি বৈশাখের তীব্র তাপপ্রবাহের কবলে পড়া মানুষ শরবতের দিকে ঝুঁকছেন। এতে বিক্রি বেড়েছে দ্বিগুন।
গাইবান্ধা জেলা সিভিল সার্জন রফিকুজ্জামান জানান, গরমে পানি স্বল্পতাসহ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি রয়েছে। তাই তীব্র তাপদাহে মানুষের খুব জরুরি কাজ ছাড়া বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহম্মেদ বলেন, রোববার (১১ মে) দুপুর পর্যন্ত এ জেলার তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতে করে জনজীবনে অস্থিরতা বিরাজ করছে। তারা যেন তীব্র গরম থেকে সুরক্ষায় থাকেন সে বিষয়ে সতর্কবার্তা জারি করা হয়।
প্রতিনিধি/এসএস