images

সারাদেশ

ঘুষ বিতর্ক: চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ বক্স স্থাপন

জেলা প্রতিনিধি

১৮ মার্চ ২০২৫, ১০:৩০ এএম

images

শরীয়তপুর জেলা আদালতে কর্মচারীদের ঘুষ ও ফি নির্ধারণ নিয়ে চলমান বিতর্কের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি ও অনিয়ম রোধে অভিযোগ বাক্স স্থাপন করেছে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। আদালতের বিভিন্ন শাখায় ঘুষ নেওয়া এবং অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সোমবার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাশার মিঞা স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এজলাসের সামনে এই অভিযোগ বাক্স স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি মুঠোফোন, হোয়াটসঅ্যাপ (01778842949) এবং ইমেইলে অভিযোগ জানানোর সুযোগ রাখা হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির এক সভায় আদালতের পেশকার, পিয়ন ও কোর্ট পুলিশের জন্য ঘুষের নির্ধারিত হার ঠিক করার সিদ্ধান্তে বিতর্কের সৃষ্টি হলে, আদালত ঘুষ ও দুর্নীতি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত হিসেবে এই উদ্যোগ গ্রহণ করে।

IMG-20250317-WA0045

শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোটের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সামছুল হক সরকার বিজ্ঞপ্তি (পত্র) জারির বিষয়টি করেছেন।

সামছুল হক সরকার জানান, আদালতের কোনো কর্মচারী ঘুষ বা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন। বরং আইনজীবী সমিতি তাদের বদনাম করার জন্য বিভিন্ন ফি নির্ধারণ করেছে। তিনি বলেন, আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে আছি। আদালতের কর্মচারীদের নাম ব্যবহার করে কেউ বিচারপ্রার্থীদের হয়রানি করতে পারে। তাই এসব অভিযোগ গ্রহণ করতে এবং প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে জরুরি অপারেশন বন্ধ, ভোগান্তি চরমে

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী ও সাধারণ মানুষের জন্য অভিযোগ জানানোর সুবিধার্থে আদালতের দেয়ালে স্থাপিত অভিযোগ বাক্স ব্যবহার করতে বা নির্ধারিত নম্বরে ফোন, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমেইলের মাধ্যমে অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছে। কেউ ঘুষ গ্রহণ বা প্রদানের ঘটনা প্রত্যক্ষ করলে তার ভিডিও, অডিও, ছবি বা অন্য কোনো প্রমাণসহ অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছে। প্রতিটি অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

আদালতের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, গত ৬ মার্চ শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির এক সভায় আদালতের পেশকার, পিয়ন ও কোর্ট পুলিশের জন্য ঘুষের নির্ধারিত হার ঠিক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়। বিষয়টি সামনে আসার পর আদালত ঘুষ ও দুর্নীতি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়।

IMG-20250317-WA0044

বিতর্কের সূত্রপাত হওয়া ওই সভার কার্যবিবরণী আদালতের কর্মচারী, আইনজীবী ও তাদের সহকারীদের কাছে পাঠানো হয়, যা পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৬ মার্চ শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম কাশেম এবং সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ কামরুল হাসানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়।

চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাশার মিঞার স্বাক্ষরিত ওই নোটিশে আইনজীবী সমিতির এই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

এইদিকে, আইনজীবী সমিতির এই সিদ্ধান্ত ও আদালতের নেওয়া পদক্ষেপ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে। সাধারণ জনগণ এ ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে।

প্রতিনিধি/এসএস