images

সারাদেশ

আর চোখে পড়ে না গ্রাম বাংলার ঢেঁকি

জেলা প্রতিনিধি

০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৯ পিএম

images

‘ধান ভানিরে ঢেঁকিতে পাড় দিয়া, ঢেঁকি নাচে, আমি নাচি, হেলিয়া দুলিয়া। এ গান গেয়ে গ্রাম বাংলার নারীরা এক সময় ঢেঁকিতে পাড় দিতেন। ভানতেন ধান, চালসহ বিভিন্ন খাদ্যশস্য। 

কিন্তু কালের আবর্তন আর আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় দিনাজপুর থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের ঢেঁকি। আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া এখন দেশের প্রতিটা অঞ্চলে। বদলে যেতে বসেছে শহর থেকে গ্রামাঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান। মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ করতে তৈরি করা হয়েছে নানা আধুনিক যন্ত্রপাতি, ব্যবহার হচ্ছে নানা রকম প্রযুক্তি। 

thumbnail_1730445072199

জানা যায়, একসময় দিনাজপুরের ১৩টি উপ‌জেলার নারীরা ধান, গম, চালসহ বিভিন্ন খাদ্যশস্য ভাঙার কাজ ঢেঁকিতেই করতেন। বিশেষ করে নবান্ন উৎসব পৌষ পার্বণ, শীতকালসহ বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে পিঠা-পুলি খাওয়ার জন্য অধিকাংশ বাড়িতে ঢেঁকির নতুন ধানের চালের গুঁড়া তৈরিতে ধুম পড়ে যেত। সে সময় গ্রামের বধূদের ধান ভাঙার গান আর ঢেঁকির ছন্দময় শব্দে চারদিকে চলতো হৈ চৈ আর আনন্দ। অনেক পরিবার ঢেঁকিতে চাল ভাঙিয়ে হাট-বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

বোচাগঞ্জ উপ‌জেলার ইশা‌নিয়া গ্রা‌মের তাপ‌সী রানী ঢাকা মেইল‌কে ব‌লেন, এক সময় আমা‌দের গ্রা‌মে ঘরে ঘরে ঢেঁকি ছিল। কিন্তু বর্তমা‌নে সারা গ্রাম খুঁজলে দু’একটি বাড়িতে ঢেঁকি পাওয়া যাবে ন‌া। আর আগের মতো ঢেঁকির ব্যবহারও হয় না। তাই হারিয়ে যাচ্ছে ঢেঁকি।

আরও পড়ুন

রাজবাড়ীতে বৃষ্টিতে পিছিয়েছে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ, দুশ্চিন্তায় চাষিরা

একই উপ‌জেলার ছুটকুর‌ মোড় এলাকার সু‌ধির রায় ঢাকা মেইল‌কে ব‌লেন, ঢেঁকি হ‌চ্ছে বাঙালি সংস্কৃতির এক অপূর্ব নিদর্শন। যখন ধান ভানা কল ছিল না তখন ঢেঁকির কদর ছিল অনেক বে‌শি। আমা‌দের উপ‌জেলার গ্রামগঞ্জে এখন পুরোপুরি ঢেঁকি বিলীন হয়েগেছে।

সেতাবগঞ্জ ম‌হিলা ক‌লে‌জের ছাত্রী নিপা রায় ঢাকা মেইল‌কে ব‌লেন, আমি আমার দি‌দি মার কা‌ছে শু‌নে‌ছি ঢেঁ‌কির কথা। কিন্তু আমি এখনও চোখে দে‌খিনি। আমা‌দের প্রজন্মের জন‌্য য‌দি হা‌রিয়ে যাওয়া জি‌নিজগুলো‌কে নি‌য়ে মেলা বসানো হতো তাহ‌লে আমর‌া সেগুলো দেখ‌তে পেতাম।

thumbnail_1730445092235

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দুলাল ঢাকা মেইল‌কে বলেন, বর্তমা‌নে আধুনিক যন্ত্রপাতি হওয়ায় নারীদের আর তেমন কষ্ট কর‌তে হয় না। দিন বেধে ঢেঁকিতে কোনো কাজ করতে হয় না। এখন সব ধরনের কাজ করার জন‌্য বি‌ভিন্ন যন্ত্রপা‌তি বাজা‌রে এসে‌ছে।

প্রতিনিধি/এসএস