জেলা প্রতিনিধি
২২ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৫১ পিএম
কেটে ফেলা হচ্ছে শত বছরের পুরনো একটি বটবৃক্ষ। এতে প্রচণ্ড রোদে আর কখনও বটবৃক্ষের নিচে বসে শীতল বাতাস পাবে না শিক্ষার্থী ও পথচারীরা।
ঘটনাটি শেরপুরের শ্রীবরদী সরকারি কলেজ মাঠের দেয়াল ঘেঁষে পুরনো এই বটবৃক্ষ।
কলেজের পৃথক আরেকটি গেইটের অজুহাতে বিনা অনুমতিতে সোমবার (২১ অক্টোবর) কেটে ফেলা হচ্ছে বটবৃক্ষটি। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। আর পরিবেশবাদীরা বলছেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি শত শত পাখির অভয়ারণ্য এ গাছ। এটা কাটা যাবে না।
শ্রীবরদী সরকারি কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী ও পথচারীসহ অনেকে জানান, শেরপুর-বকশীগঞ্জ সড়কের পাশে শ্রীবরদী সরকারি কলেজ মাঠের দেয়াল ঘেঁষে রয়েছে শত বছরের পুরোনো বটগাছটি। প্রচণ্ড রোদে ওই বট বৃক্ষের নিচে বসে শীতল বাতাস পেতেন শিক্ষার্থী ও পথচারীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। এখন কেটে ফেলা হচ্ছে সড়কের পাশে সৌন্দর্য বর্ধিত দাঁড়িয়ে থাকা ওই বটবৃক্ষটি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কোনো প্রকার নিয়মের তোয়াক্কা না করে কলেজের পৃথক আরেকটি গেইট নির্মাণের অজুহাতে শ্রীবরদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর একেএম আলিফ উল্লাহ ১৫ হাজার ৪২৬ টাকা মূল্যে নিলামে বট গাছটি বিক্রি করেন। সোমবার বটগাছটির ডালপালা কাটা হচ্ছে। পরে কাটা হবে গোড়ালি। এতে বিলুপ্তি ঘটবে শ্রীবরদী পৌর শহরের কলেজ রোডের ঐতিহ্যবাহী শত বছর আগের বটগাছটির।
পরিবেশবাদীরা জানান, বৃক্ষটি রাস্তার পাশে। প্রচণ্ড রোদে অনেকে এই গাছের নিচে ছায়ায় বসে থাকতো। তাছাড়া সৌন্দর্যের দিক থেকেও বৃক্ষটি অনেকটাই চোখে পড়ার মতো। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি শত শত পাখির অভয়ারণ্য এ গাছ। এভাবে বৃক্ষটি একেবারে কেটে না ফেললেও হয়তো কলেজের গেইটের কোনো বাধা সৃষ্টি হতো না। তারা গাছটি কাটা বন্ধ করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, সড়কের পাশে থাকা বৃক্ষটি এলজিইডির। এটা কলেজ কর্তৃপক্ষ কীভাবে বিক্রি করেন- এ নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
প্রাচীন বটবৃক্ষ কাটা প্রসঙ্গে শ্রীবরদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর একেএম আলিফ উল্লাহ বলেন, কলেজের গেইট নির্মাণে বটগাছটির কারণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। এ জন্য বন বিভাগের কাছ থেকে পরিমাপ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মৌখিক অনুমতি সাপেক্ষে বৃক্ষটি বিক্রি করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, উন্নয়নের স্বার্থে গাছটি কাটা হচ্ছে।
আরও পড়ুন
বন বিভাগের বালিজুরি রেঞ্জ অফিসার সুমন মিয়া বলেন, বট বৃক্ষের কাঠের মূল্য কম। এটা সাধারণত লাকড়ি হেসেবে বিক্রি হয়। তাছাড়া বৃক্ষটির ৪০ শতাংশ ডালপালা মরে গেছে। এ জন্য তুলনামূলক এর মূল্য কম হয়েছে।
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মশিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।
শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাবের আহমেদ বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ বৃক্ষটি কাটার জন্য অনুমতি চেয়েছে। আমি তাকে রেজুলেশন করে আনতে বলেছিলাম। সংবাদ পেয়ে বৃক্ষটি কাটা বন্ধ করে দিয়েছি। পরবর্তীতে সঠিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিনিধি/এসএস