images

সারাদেশ

নেত্রকোনায় ফের বাড়ছে পানি, নতুন দুই উপজেলা প্লাবিত, মৃত্যু ১

জেলা প্রতিনিধি

০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৪৩ পিএম

নেত্রকোনার সদর ও বারহাট্টা উপজেলার ৪-৫টি ইউনিয়নের ১০-১২টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। অনেক ঘর-বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। গোয়ালে পানি ওঠায় অনেকে গরু-বাছুর নিয়ে কোনরকম এক ঘরে বসবাস করছেন। রান্না বন্ধ অনেক পরিবারে। অনেকে বাড়ি-ঘর ছেড়ে অন্যত্র যাচ্ছেন।

thumbnail_Screenshot_2024-10-08-19-27-17-610_com.miui.mediaviewer-edit

এর আগে জেলার পূর্বধলা, দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলার ২০-২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়। সব মিলিয়ে জেলায় লাখো মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন।

এদিকে বন্যার পানিতে ডুবে দুর্গাপুরে রুসমত খান (৬০) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন।

আরও পড়ুন

রেখে আসা ঘরবাড়ি এখন পুরোটাই যেন ধ্বংসস্তূপ

গত ২৪ ঘণ্টা বৃষ্টিপাত না হলেও আজ সকাল থেকে বৃষ্টি পাত শুরু হয়েছে। এতে নতুন করে বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জেলা প্রশাসন দুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বললেও ভুক্তভোগীদের অনেকে বলছেন তারা কোনো সহায়তা পাননি।

thumbnail_Screenshot_2024-10-08-19-27-43-099_com.miui.mediaviewer-edit

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান জানান, উজানে বৃষ্টিপাত না থাকায় জেলার সবগুলো নদীর পানি কমে বিপদসীমার নিচ দিয়ে বইছে। শুধুমাত্র উপদাখালী নদীর পানি বিপদসীমায় ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যদি ভারতে বৃষ্টিপাত না হয় তবে জেলায় পানি কমতে থাকবে। ঢলের পানি মূলত পানি বৃদ্ধির প্রধান করাণ।

এদিকে বৃষ্টি ও ঢলের পানিতে জেলায় ২২ হাজার ৬৪১ হেক্টর জমির আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। ১৭৭ হেক্টর জমির শীতকালীন সবজি নষ্ট হয়েছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন

শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, নিহত বেড়ে ১০

অন্যদিকে পানি উঠায় জেলার ১৮৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান সাময়িক বন্ধ রয়েছে।

সরেজিমনে সদর উপজেলার বাইশধার গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির উঠানের ওপর দিয়ে যাচ্ছে ঢলের পানির স্রোত। গরু বাছুর নিয়ে এক ঘরে বসবাস করছে কয়েকটি পরিবার।

বাইশধার গ্রামের সিরাজুল ইসলাম ফকির বলেন, ৫ একর জমির আমন ধান পানিতে তলিয়ে সব শেষ। রান্না ঘর পানির নিচে, গতকাল থেকে খাওয়া দাওয়া বন্ধ। গোয়ালে পানি। গরু-বাছুর নিয়ে বিপদে আছি। এখন পর্যন্ত আমাদের কেউ খবর নেয়নি।

thumbnail_Screenshot_2024-10-08-19-24-48-045_com.miui.mediaviewer-edit

একই গ্রামের শাহানা আক্তার বলেন, রান্না ঘরে পানি, দুদিন ধরে রান্না নেই। আত্মীয় স্বজনরা খাবার দিয়ে যাচ্ছে সেইগুলো খাচ্ছি। গরুগুলো বারান্দায় রেখেছি। এখন ঘরেও পানি উঠছে। কাল সকালে গাড়িতে করে গরু বাছুর ও জিনিসপত্র নিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যাব। পোলাপান নিয়ে খুবই বিপদে আছি। তার অভিযোগ-এখনও পর্যন্ত প্রশাসন বা অন্য কেউ কোনো ত্রাণ সহায়তা তাদের দেননি।

একই অবস্থা প্রতিবেশী রীনা আক্তার ও ইলিয়াস মিয়ার অবস্থাও একই রকম। তারা জানান, ৮-৯ একর জমির ফসল শেষ। রান্না খাওয়া বন্ধ। পোলাপানসহ গরু-বাছুর নিয়ে এক ঘরে বসবাস করছি। এমনকি টয়েলেটে পানি উঠায় টয়লেটে যেতে পারছেন না তারা। ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ তাদেরও।

thumbnail_Screenshot_2024-10-08-19-25-27-441_com.miui.mediaviewer-edit

জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জানান, জেলা প্রশাসনের টিম নতুন করে প্লাবিত এলাকায় ভিজিট করছে। ত্রাণ সহায়তাও দেওয়া হচ্ছে। যারা আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে চাইবে তাদের আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হবে। এছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।

প্রতিনিধি/এসএস