images

সারাদেশ

মিশ্র পদ্ধতিতে সবজি চাষে ইলিয়াসের সফলতা

জেলা প্রতিনিধি

১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:১৬ পিএম

মাচায় নাইসগ্রীন জাতের লাউ চাষ আর মাচার নিচে মিশ্র পদ্ধতিতে মুলা, বেগুন, পুঁইশাকহ বিভিন্ন রকমের নিরাপদ সবজি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার মির্জাপুর দিয়ার গ্রামের কৃষক মো. ইলিয়াস শেখ।

কয়েক মাস আগে ১২ কাঠা জমিতে মিশ্র পদ্ধতিতে নাইসগ্রীন জাতের লাউয়ের চারা রোপণ করেন। একই সঙ্গে মাচার নিচে মুলা, বেগুন পুইশাক রোপণ করেন। পোকামাকড় থেকে ফসল রক্ষায় এবং কীট নাশকবিহীন ফসল উৎপাদনে জৈব বালাইনাশক ফাঁদসহ ১৪ থেকে ১৫টি আঠালো ফাঁদ, ৬টি ফেরোমিন ফাঁদ তৈরি করে চাষ করতে থাকেন। এসব ফসলের নিবির পরিচর্যা করে তিনি সফল হয়েছেন। এসব মিশ্র সবজি চাষে তার খরচ প্রায় ১৫ হাজার টাকা। আর এ পর্যন্ত তিনি ৪৫ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেছেন। এরমধ্যে ১২০০ পিচ লাউ ৩৬ হাজার টাকা, মুলা ৬ হাজার টাকা এবং পুঁইশাক ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। এর আগে তিনি গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ ও মাচায় কালো জাতের তরমুজ চাষ করে ব্যাপক সফলতা পান।

এছাড়াও তার নার্সারি, পলিনেট হাউজ পদ্ধতিতে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক বিহীন সবজির চারা উৎপাদন, বিপণন ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার চারা বিক্রি করে থাকেন। কৃষি কাজ করে মাসে লাখ টাকা আয় করেছেন এ কৃষক।

Nicegreen_gourd_cultivation_in_mixed_system_at_Natore_=17-09-2024_=

কৃষক মো. ইলিয়াস শেখ জানান, পড়ালেখা করে চাকরির আশা না করে কৃষিকেই পেশা বেছে নিয়েছি। ১২ কাঠা জমিতে মিশ্র পদ্ধতিতে সবজি চাষ শুরু করেন। তিন মাসে তিনি ৩৬ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। এখন আরও তিন মাস পর্যন্ত এই লাউয়ের ফলন আসবে। লাউয়ের জমিতে তিনি শীতকালীন সবজি টমেটোর চারা রোপণ করেছেন। ফলে এবার লাউয়ের সঙ্গে শীতকালিন টমেটোও বিক্রি করতে পারবেন তিনি।

তিনি আরও জানান, একই জমিতে এক সঙ্গে একাধিক ফসল ফলানো সম্ভব, পাশাপাশি খরচও একই। কারণ আলাদা করে কৃষককে কোনো উৎপাদন খরচ করতে হয় না। ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচসহ পরিবারের যাবতীয় খরচ এখান থেকেই মিটছে তার।

বিপ্রবেলঘড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান আলী ঢাকা মেইলকে বলেন, ইলিয়াস শেখ একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা এবং কৃষক। তার সফলতা দেখে অনেকেই কৃষি কাজে এগিয়ে আসছেন। তিনি স্বল্প জমি ব্যবহার আর নতুন নতুন কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে যে সফলতা অর্জন করেছেন তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। নতুন নতুন অনেকে মিশ্র সবজি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

নলডাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসার ফৌজিয়া ফেরদৌস ঢাকা মেইলকে বলেন, কৃষি উদ্যোক্তা ইলিয়াস হক একজন সফল ব্যক্তি। তাকে দিয়ে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করিয়েছিলাম, তিনি সফল হয়েছিলেন। তিনি মাচায় কালো জাতের তরমুচ চাষ করেও বেশ ভালো করেন। তিনি বর্তমানে মিশ্র পদ্ধতিতে সব ধরনের ফসল চাষাবাদ করছেন। হাইব্রিট জাতের লাউ মাচায় চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। নিচে শীতকালীন বিভিন্ন সবজি চাষ শুরু করেছেন। এতে কম জমিতে বেশি বিভিন্ন মিশ্র সবজি ফলানো সম্ভব। যেহেতু আমাদের জমির পরিমাণ কম। এতে সবজির চাহিদা পূরণ হবে। এ পদ্ধতিতে নলডাঙ্গা উপজেলায় অন্তত ১২০০ থেকে ১৩০০ জন কৃষক মিশ্র পদ্ধতিতে সবজি চাষাবাদ করছেন।

তিনি আরও বলেন, চলতি মৌসুমে নলডাঙ্গা উপজেলায় ৩০ হেক্টর জমিতে নাইসগ্রীন জাতসহ বিভিন্ন হাইব্রিড জাতের লাউ চাষ হয়েছে। যার গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ২৮ থেকে ৩০ মেট্রিক টন।

প্রতিনিধি/টিবি