বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:১৯ পিএম
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও অ্যাপ্লায়েড কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিকেল ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুরকে লাঞ্ছিত করেছেন শিক্ষার্থীরা। পরে ড. বাহাদুরসহ চার শিক্ষককে সব শিক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের নেতৃত্বে ছাত্ররা লাঞ্ছিত করে তাকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেন। এ ধরনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
আরও পড়ুন: সীমান্তে স্বর্ণা রানি হত্যার প্রতিবাদে শাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুপুরে ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুরকে ক্যাম্পসে পেয়ে ‘শেখ হাসিনার দালাল’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন ছাত্ররা। এ সময় তাকে ক্যাম্পাস থেকে বের হতে বললে তিনি তা না শোনায়, তাকে লাঞ্ছিত করে জোরপূর্বক ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেন আন্দোলনকারীরা।
অভিযোগ আছে যে সাবেক কোষাধ্যক্ষ ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী বলয় গড়ে তুলে ভিন্ন মতাবলম্বীদের জিম্মি করে রাখতেন। নিজের পছন্দের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার নিয়োগে তদবির করে শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারিদেরও জিম্মি করেন তিনি। এমনকি তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর গত জন্মদিনে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘শেখ হাসিনার সম্মোহনী নেতৃত্ব’ শিরোনামে কলাম লিখেছিলেন।
এছাড়া সাবেক এমপি একরামুল করিম চৌধুরী ও মামুনুর রশিদ কিরণের আস্থাভাজন হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প তিনি দেখাশোনা করতেন। এতে অনিয়মের মোটা অঙ্কের টাকায় ভাগ বসাতেন। অন্যদিকে নিয়োগ বাণিজ্যের কোটি কোটি টাকা তিনি নিজের কব্জায় রাখতেন। কেউ এসব বিষয়ে মুখ খুললে করতেন বহিষ্কার ও তিরস্কার।
আরও পড়ুন: ঢাকা মেইলের নিউজ প্রকাশের পর পদত্যাগ করলেন ড. মোর্শেদ
এদিকে বুধবারের ঘটনার পর রাসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুরসহ আওয়ামীপন্থী চার শিক্ষককে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনা পাওয়া অন্য শিক্ষকরা হলেন - ফিসারিজ অ্যান্ড মেরিন সায়ন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনিসুজ্জামান, শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক ড. বিপ্লব মল্লিক ও আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বাদশা মিয়া।
রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ তামজীদ হোসাইন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, দুপুরে ক্যাম্পাসে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর পৃথক পৃথক চিঠিতে তাদেরকে সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ১০ আগস্ট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে কোষাধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগ করেন অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর। ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে তাকে ওই পদে নিয়োগ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।
লাঞ্ছনার বিষয়ে জানতে অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুরকে বারবার ফোন দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
প্রতিনিধি/ এমইউ