জেলা প্রতিনিধি
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ পিএম
ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কর্মসূচিতে গুলিতে মৃত্যুর হওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ১৬২ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৪০০-৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে মহিপালের হত্যাকাণ্ডে নিহত শিক্ষার্থী মাহবুবুল হাসান মাসুমের (২৫) ভাই মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় মামলাটি করেন।
মহিপালে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এ নিয়ে পৃথক সাতটি হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ দুই হাজার ৫৮৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সীমান্তে স্বর্ণা রানি হত্যার প্রতিবাদে শাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ
নিহত মাসুম সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া এলাকার নোমান হাসানের ছেলে। তিনি ছাগলনাইয়া আবদুল হক চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ থেকে অনার্স চতুর্থ বর্ষের ফলপ্রার্থী ছিল।
মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন — জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ফেনী-৩ সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি করতে প্ররোচনা, উস্কানি ও নির্দেশনার অভিযোগে তাদের আসামি করা হয়।
ফেনী মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় পৃথক সাতটি মামলায় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: নাটোরে ট্রেনে কাটা পড়ে প্রাণ গেল যুবকের
অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন - দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সভাপতি দিদারুল কবির রতন, পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল, সোনাগাজী উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন, ছাগলনাইয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. মোস্তফা, সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম পিটু, জিয়া উদ্দিন বাবলু প্রমুখ।
এর আগে এ ঘটনায় দায়েরকৃত ছয়টি মামলায় জেলার অন্তত অর্ধশতাধিক জনপ্রতিনিধিসহ আ.লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপাল এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন আন্দোলনকারীরা। একইসময়ে শহরের ট্রাংক রোডে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। দুপুর ২টার দিকে মিছিল নিয়ে আ.লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মহিপাল ফ্লাইওভারের দিকে এগোতে থাকলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৯ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
প্রতিনিধি/ এমইউ