images

সারাদেশ

নাক-কান-গলা ডাক্তার করলেন সিজার, জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে নারী

জেলা প্রতিনিধি

০৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৫৭ পিএম

যশোর জেনারেল হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের ডাক্তার শাহীন রেজার অপচিকিৎসায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছেন ডলি খাতুন নামে একজন রোগী। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য তিনি নাক-কান-গলা বিভাগের ডাক্তার হয়েও দেশ ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ওই নারীকে সিজার করিয়েছেন। অপারেশনের সময় কেটে খেলেছেন খাদ্য ও মূত্রনালী। এ ঘটনায় রোববার বিকেল সাড়ে ৫টায় ওই ক্লিনিকে যেয়ে রোগীর স্বজনরা ডাক্তার শাহীন রেজাকে অপারেশন কক্ষে আটকে রেখে বিচার দাবি করেন। উত্তেজিত জনতা ডাক্তারকে মারতে উদ্যত হয়। তখন পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন।

রোগীর স্বজনরা জানান, ২৯ মে বাঘারপাড়া উপজেলার চানপুর গ্রামের মইনুল ইসলামের প্রসূতি স্ত্রী ডলি খাতুন যশোর জেনারেল হাসপাতালের সামনে ওই ক্লিনিকে ভর্তি হন। এ সময় সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর যশোর জেনারেল হাসপাতালের নাক-কান গলা বিভাগের ডাক্তার শাহীন রেজা তার সিজার করান। এ সময় ওই প্রসূতি একটি মেয়ে প্রসব করেন। সেখানে তিন দিন চিকিৎসা শেষে রোগীর স্বজনরা বাড়িতে চলে যান। কিছু দিন পর রোগীর অবস্থার অবনিত হলে স্বজনরা তাকে অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার করে জানানো হয় যে রোগী অপচিকিৎসার শিকার হয়েছেন। তার খাদ্য ও মূত্রনালী সিজারের সময় কেটে ফেলা হয়েছে। পরে খাদ্য ও মূত্র নালী একসঙ্গে সেলাই করে দেওয়া হয়েছে। যার কারণে মূত্রনালী নিয়ে রোগীর টয়লেট বের হচ্ছে।

আরও পড়ুন: শরীয়তপুরে নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে জেলের মৃত্যু

রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, অপারেশনের সময় ডাক্তার শাহীন রেজা নিজেকে গাইনি ডাক্তার পরিচয় দিয়ে রোগীর অপারেশন করেছেন। পরবর্তীতে রোগীর সমস্যা দেখা দিলে খোঁজ-খবর নিয়ে তারা জানতে পারেন যে ওই ডাক্তার সদর হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগের চিকিৎসক। তিনি কোনো গাইনি ডাক্তার নন। তাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।

অপর একটি সূত্র জানায়, ডাক্তার শাহীন রেজা যশোর জেনারেল হাসপাতালের ইএনটি বহির্বিভাগে রোগী দেখেন। তিনি কোনো সার্জারি ডাক্তার নন। কিন্তু শহরের ৪-৫টি ক্লিনিকে বিভিন্ন ধরনের সার্জারি করেন। ১৫ দিন আগেও তিনি একটি ক্লিনিকে এক রোগীর পিত্তথলির পাথর অপরেশন করে বির্তকে পড়েন। ওই রোগীও অপচিকিৎসার শিকার হন। বর্তমান রোগীটি ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে সাপের কামড়ে নারী ও শিশুর মৃত্যু

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই জাহিদুল ইসলাম জানান, ক্লিনিকে ডাক্তার ও রোগীর স্বজনদের হট্টগোল হচ্ছে মর্মে খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন। রোগীর স্বজনরা মৌখিক অভিযোগ করেছেন যে ডাক্তারের অপচিকিৎসার শিকার হয়েছে ওই নারী। অপরদিকে ডাক্তার বলছেন, তাকে আটকে রেখে নির্যাতন করতে চেয়েছিলেন রোগীর স্বজনরা। কোনো পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযুক্ত ডাক্তার শাহীন রেজা জানান, তিনি গাইনি বা সার্জারি বিভাগের ডাক্তার নন সত্যি। যশোর জেনারেল হাসপাতালের ইএনটি বিভাগে কর্মরত আছেন। এমবিবিএস ডাক্তার সব চিকিৎসা ও অপারেশন করতে পারেন বলে দাবি করেন তিনি। 

প্রতিনিধি/ এমইউ