images

সারাদেশ

চাঁদপুরের ৫০ গ্রামে ঈদুল আজহা উদযাপন

জেলা প্রতিনিধি

১৬ জুন ২০২৪, ০৮:১২ পিএম

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে চাঁদপুরের বিভিন্ন উপজেলার অর্ধশতাধিক গ্রামে ঈদুল আজহা পালিত হয়েছে। 

রোববার (১৬ জুন) সকাল ৯টায় হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরিফ মাঠে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এ জামাতে ইমামতি করেন দরবার শরিফের পীর মুফতি জাকারিয়া চৌধুরী আল মাদানি।

অন্যদিকে সাদ্রা হামিদিয়া ফাজিল মাদরাসা মাঠে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের নামাজ পড়া হয়। এতে ইমামতি করেন  - সাদ্রা দরবার শরিফের পীর মাওলানা আরিফ চৌধুরী।

আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুরের ১১ গ্রামে ঈদুল আজহা উদযাপন

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ১৯২৮ সালে আগাম ঈদুল আজহা, রোজা রাখাসহ ঈদুল ফিতর পালনের নিয়ম চালু করেন সাদ্রা দরবার শরিফের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইসহাক (রা.)। তার অনুসারীরা প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে রোজা রাখা ও ঈদ উদযাপন করা শুরু করেন। সেই থেকে বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দা আরব দেশসমূহের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল আজহা-সহ ধর্মীয় উৎসব পালন করেন। এর মধ্যে জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, সমেশপুর, অলীপুর, ভোলাচোঁ, ঝাকনি, সোনাচোঁ, প্রতাপপুর ও সুরঙ্গচাইল গ্রাম, ফরিদগঞ্জ উপজেলার সুরঙ্গচাউল, কাইতাড়া, উভারামপুর, টোরামুন্সিরহাট, মতলব উত্তর উপজেলার পাঁচানী, বাহেরচর পাঁচানী, আইটাদি পাঁচানী, দেওয়ানকান্দিসহ অর্ধশতাধিক গ্রামের মুসল্লিরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করছেন।

এসব এলাকার লোকেরা জানান, রোববার সকাল থেকে সমেশপুর ঈদগাহ মাঠ, সাদ্রা হামিদিয়া ফাজিল, মাদরাসা মাঠ সাদ্রা দরবার শরীফ মাঠসহ ১২টি ঈদগাহ মাঠে এবং উত্তর সাদ্রা বায়তুল সালাম জামে মসজিদ, দক্ষিণ সাদ্রা জামে মসজিদ, উত্তর অলিপুর বেপারী বাড়ি জামে মসজিদ, উত্তর অলিপুর ঢালী বাড়ি মসজিদ, দক্ষিণ বলাখাল হাজী বাড়ি, দক্ষিণ বলাখাল স্কুল বাড়ি, পাঁচানী দরগাম মসজিদ, পূর্ব পাঁচানী সরকার বাড়ি, দেওয়ানজিকান্দি প্রধানিয়াবাড়ী মসজিদ, সাড়ে পাঁচানী প্রধানিয়া জামে মসজিদ, দক্ষিণ মাথাভাঙ্গা ভেন্ডরবাড়ী মসজিদ, পাড়ে পাঁচানী উত্তরপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদসহ ১৮টি জেলার বিভিন্ন স্থানে মোট ৩০টি ঈদুল আজহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া স্ব-স্ব এলাকায় এ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তারা পশু জাবাই করেন।

মতলব উত্তরের দেওয়ানকান্দি গ্রামের রহিম উদ্দিন ডালিম বলেন, আমরা চট্টগ্রামের মির্জাখিল দরবার শরীফের অনুসারী। প্রতি বছর আমরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদসহ ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করে আসছি। এবারও দেশটির সঙ্গে মিল রেখে কোরবানি ঈদ উদযাপন করেছি।

আরও পড়ুন: গাইবান্ধার ২ গ্রামে ঈদুল আজহা উদযাপন

সাদ্রা এলাকার আবুল হোসেন বলেন, বুঝতে শেখার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রথম চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে রোজা, ঈদ পালন করে আসছি। আমরা বিশ্বের যেকোনো জায়গায় চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ঈদ পালন করি।

কামরুল নামে এক যুবক বলেন, আমাদের পূর্ব পুরুষরা এ রীতি-নীতি পালন করে এসেছেন। আমরাও তা পালন করছি।

হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরিফের পীর মুফতি জাকারিয়া চৌধুরী আল মাদানি বলেন, আমরা কুরআন-সুন্নাহের আলোকে সাদ্রা দরবার শরিফের প্রতিষ্ঠাতা পীর মাওলানা ইসহাক (র.)-এর নিয়ম অনুযায়ী প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে রোজা ও ঈদ পালন করে আসছি। এছাড়া কুরআন-সুন্নাহর ধর্মীয় উৎসবগুলো পালন করে আসছি।

হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা দরবার শরিফের পীর ও সাদ্রা হামিদিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আরিফ চৌধুরী বলেন, পৃথিবীতে চাঁদ একটাই। সুতরাং পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে চাঁদ দেখা গেলেই আমরা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান এবং ঈদুল আজহা পালন করি। এ বছরও একই সময়ে ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমানে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর হয়ে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে ঈদ উদযাপন করা হচ্ছে। আমাদের দরবার শরীফের পক্ষ থেকে পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা।

প্রতিনিধি/ এমইউ