images

সারাদেশ

ঘূর্ণিঝড় রেমাল: কক্সবাজার ছাড়ছেন পর্যটকরা, বিমান ওঠা-নামা বন্ধ

জেলা প্রতিনিধি

২৬ মে ২০২৪, ০৯:০১ এএম

ঘূর্ণিঝড় রেমালের উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে কক্সবাজার ছাড়ছেন পর্যটকরা। এছাড়া কক্সবাজার বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামা বন্ধ ঘোষণা করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। এই পরিস্থিতিতে কক্সবাজারে দেখা দিয়েছে টিকিট সংকটও। কক্সবাজারের কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না বাসের টিকিট। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে কক্সবাজারে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

কক্সবাজার বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক গোলাম মর্তুজা বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে রোববার (২৬ মে) বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামীকাল সোমবার বিমান ওঠানামা বন্ধ করার জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ৬ নম্বর বিপদ সংকেত যেহেতু চলছে সেহেতু বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে।

কক্সবাজারের কলাতলী ডলফিন মোড়ে বাস কাউন্টারের ম্যানেজার মিজানুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে পর্যটকরা ভয়ে কক্সবাজার ছেড়ে যাচ্ছেন। আজকে কোনো টিকিট নেই। বেশিরভাগ বাস চলে গেছে। কালকেও সব টিকিট বুকিং রয়েছে। বিমান চলাচল বন্ধ করায় টিকিটের চাহিদা আরও বেড়েছে।

এদিকে, কক্সবাজারের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মাইকিং করে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে অনুরোধ জানাচ্ছে প্রশাসন। কক্সবাজারে ৬৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। মহেশখালী, টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিতে শুরু করেছে মানুষ।

thumbnail_images_-_2024-05-26T083827.809

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় সিপিপির ৮৬০০ এবং রেডক্রিসেন্টের ২২০০সহ ১০ হাজার ৮০০ স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ৬৩৮টি আশ্রয় কেন্দ্র। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। এছাড়া সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ৪শ ৮৬ মেট্রিক টন জি আর চাল, ২ লাখ ৭৫ হাজার নগদ টাকা, জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তহবিল ১৮ লাখ ২৩ হাজার টাকা, ২৯ বান্ডিল ঢেউটিন সঙ্গে গৃহ নির্মাণ মজুরি অর্থ ৬৯ হাজার টাকা মজুদ আছে।

কক্সবাজার ছাড়াও চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরেও ৬ নম্বর বিপদ সংকেত এবং মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

 

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, উপকূলীয় এলাকার মানুষদের নিরাপদ স্থানে নেওয়ার পূর্ব প্রস্তুতি নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে রেডক্রিসেন্ট, স্কাউট, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে সচেতনতা বাড়াতে উপকূলে মাইকিং করা হচ্ছে।

জেলা বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমদ বলেন, ২০ মে হতে সরকারিভাবে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেকারণে আগে থেকেই মাছ ধরার ট্রলারগুলো তীরে নোঙ্গর করা রয়েছে। ছোটখাট যেসব ট্রলার তীরের আশপাশে মাছ ধরে তাদেরকেও সাগরে না যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

এদিকে, শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত এবং দমকা হাওয়া শুরু হয়। পূর্বাভাস দেওয়া হলেও কক্সবাজারে এখনো এর কোনো বড় প্রভাব দেখা যায়নি। তবে, সাগরে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানির উচ্চতা কিছুটা বেড়েছে। সম্ভাব্য দুর্যোগ বিবেচনায় সৈকতে আসা পর্যটকদের গোসলে নিরুৎসাহিত করছে টুরিস্ট পুলিশ ও জেলা প্রশাসন।

প্রতিনিধি/টিবি