images

সারাদেশ

চট্টগ্রামে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি, সাগর উত্তাল, আতঙ্কে উপকূলের মানুষ

২৫ মে ২০২৪, ০৫:৩৯ পিএম

পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিন্মচাপটি গভীর নিন্মচাপে রুপ নিয়েছে। শনিবার (২৫ মে) সন্ধ্যার পর এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। আর এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম হবে রেমাল। 

ঘূর্ণিঝড়টি আগামী রোববার (২৬ মে) সন্ধ্যার পর বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এ সময় উপকূলবর্তি এলাকায় ৭ থেকে ১০ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। এর প্রভাবে শনিবার দুপুরের পর থেকে চট্টগ্রামের আকাশে ঘন মেঘমালা সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। সেই সাথে সাগরও উত্তাল রয়েছে। 

ফলে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী, আনোয়ারা, সীতাকুন্ড, সন্দ্বীপ, মিরসরাই উপকূলীয় মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপকূলবর্তী জুঁইদন্ডি এলাকার ফরিদুল আলম বলেন, অতীতের সবকটি ঘূর্ণিঝড়ের সময় জুঁইদন্ডির বিস্তীর্ণ এলাকা উঁচু জলোচ্ছ্বাসে ডুবে গিয়েছিল। এবারও সেই আতঙ্ক বিরাজ করছে মানুষের মনে। জলোচ্ছ্বাস হলে এলাকার অনেক অপরিপক্ক বোরো ধান নষ্ট হয়ে যাবে। নষ্ট হবে শত শত একরের সবজি ক্ষেত। মারা যাবে গরু-ছাগল। এছাড়া এই উপকূলের অনেক মানুষ মাছ ধরতে গিয়ে এখনো সাগর থেকে ফিরেনি। তাদের ভাগ্য কী হবে এ নিয়ে মানুষ বেশ চিন্তিত।

একই কথা বলেছেন বাঁশখালী উপকূলের গন্ডামারা ইউনিয়নের বাসিন্দা সামশুদ্দিন। তিনি বলেন, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে চট্টগ্রামের আকাশ ঘনমেঘে ঢেকে গেছে। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিও হচ্ছে। উত্তাল হয়ে পড়েছে সাগরও। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে এর আঘাতে এলাকার শত শত হেক্টর জমির লবণের মাঠ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। নষ্ট হতে পারে অপরিপক্ক বোরো ধান। তাছাড়া এলাকার কয়েক হাজার জেলে সাগরে মাছ ধরার উপর নির্ভরশীল। তাদের অনেকে এখনো ফিরেনি।

এদিকে সীতাকুন্ড উপকুলের বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা দিদার আশরাফ জানান, উপজেলার প্রায় ২৪ কিলোমিটার উপকূলে অনেক চাষাবাদ হয়েছে। রয়েছে সবজি ক্ষেত। যা ঘুর্ণিঝড়ের আঘাতে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন এলাকার মানুষ।

আরও পড়ুন

তবে আশার আলো হচ্ছে, এর আগের সবকটি ঘূর্ণিঝড়ের সময় উপকূল ছিল অরক্ষিত। এবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের ফলে অনেকটা সুরক্ষিত। কিন্তু ঘুর্ণিঝড় যদি প্রবল আঘাত হানে ওই বাঁধও উপরে যেতে পারে। আর জলোচ্ছ্বাস হলে তো ব্যাপক ফসলহানি ও প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।

ফসলহানির বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদফতর (চট্টগ্রাম অঞ্চল) উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবদুচ ছোবহান বলেন, চলতি মৌসুমের ৯০ শতাংশ বোরো ধান কাটা হয়ে গেছে। আগাম জাতের বোরো ফসলের চাষ করায় এবার ধান আগাম পেকেছে। ধান কাটা নিয়ে কৃষি অফিসের কর্মীরা মাঠে করছেন। 

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি প্রাণহানিসহ ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত থেকে জানমাল রক্ষায় চট্টগ্রামের উপকূলীয় পাঁচ উপজেলাসহ জেলার ১৫ উপজেলা ও সিটি করপোরেশন এলাকায় ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত ও জানমাল রক্ষায় চট্টগ্রামের উপকূলীয় পাঁচ উপজেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩৮৮টি আশ্রয়কেন্দ্র ও সাত হাজার স্বেচ্ছাসেবক। দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রাথমিক চাহিদা মিটানোর জন্য ১৫টি উপজেলায় ত্রাণ হিসেবে চাল ও নগদ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।

এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের লক্ষ্যে প্রস্তুত রাখার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), জেলা মাধ্যমিক এবং প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকটি উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তারা জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতিমূলক সভা করছেন।

এছাড়া বাঁশখালী উপজেলায় ১১০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলার উপক‚লীয় এলাকা ছনুয়া, খানখানাবাদ, গন্ডামারা, সরল, বাহারছড়া, কাথরিয়া, সাধনপুর, পুকুরিয়া, পুইছড়ি, শেখেরখীল ও শীলকুপ এলাকায় সাইক্লোন শেল্টার এবং মুজিব কিল্লাসহ ১১০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সাগরে যে সব জেলে রয়েছেন তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ৭১টি ইউনিটে এক হাজার ৪২০ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে।

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি এড়াতে উপক‚লীয় এলাকার মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে এবং পাহাড় ধস এড়াতে পাহাড়ি এলাকার মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। এছাড়া প্রত্যেক মসজিদে জুমার নামাজের বয়ানে ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে বলার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সব ইমামকে বলার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আনোয়ারা উপজেলার ইউএনও মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় উপক‚লীয় ইউনিয়নগুলোতে এক হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। খোলা থাকবে ৫৮টি আশ্রয়কেন্দ্র। জেলা প্রশাসন থেকে ৪০ হাজার টাকা ও ১০ মেট্রিক টন খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সচেতনতার জন্য মাইকিং করে জনগণকে সতর্ক করা হচ্ছে।

সীতাকুন্ড উপজেলার ইউএনও মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত করা হয়েছে ৬৭টি আশ্রয়কেন্দ্র। পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি ভবনগুলোও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে জরুরি সেবা দিতে ১২টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের এক হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক।

আরও পড়ুন

সন্দ্বীপ উপজেলার ইউএনও সম্রাট খীসা বলেন, উপজেলায় ১১২টি সাইক্লোন শেল্টারসহ মাধ্যমিক স্কুল, মাদরাসা ও কলেজসহ মোট ১৬২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া উড়িরচরে তিনটি মুজিব কিল্লা ও মুছাপুর ইউনিয়নে একটি মুজিব কিল্লা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে তিন হাজার ভলান্টিয়ার। সঙ্গে প্রস্তুত রয়েছে যুব রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা। পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা রয়েছে।

অপরদিকে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় কন্ট্রোল রুমসহ জানমালের ক্ষতি কমাতে ৪১টি ওয়ার্ডে ৯০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চসিক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। 

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানলে যেন সাধারণ মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখা যায় এবং দুর্যোগপরবর্তী পুনরুদ্ধার কাজ সর্বোচ্চ গতিতে পরিচালিত হয় সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রস্তুতি সভা ও ঘূর্ণিঝড় মোখার গতিবেগ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে জরুরি যে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

প্রস্তুতি নিচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষও
গভীর নিন্মচাপের ফলে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। একই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিদ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়।

শনিবার (২৫ মে) আবহাওয়া অধিদফতরের সর্বশেষ ৭ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপর থেকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক।

সচিব বলেন, এর আগে সমুদ্র বন্দরসমূহকে ১নং হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হলেও বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। তবে তিন নম্বর সংকেত দেখাতে বলার পর ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়েছে। বন্দরের স্টান্ডিং কমিটির মিটিং ও অন্যান্য বিষয়ে বিভিন্ন কমিটিকে অ্যালার্ট করা হচ্ছে। সব ধরনের লাইটার জাহাজকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হচ্ছে। ৫ নং সংকেত দেখাতে বললে জেটিতে থাকা জাহাজ বহির্নোঙরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

ss

পাউবোর ছুটি বাতিল, কন্ট্রোল রুম চালু
সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় রেমাল বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কায় ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলা সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।

সংস্থাটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিন্মচাপ ও সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় রেমাল বাংলাদেশ উপক‚লে আঘাত হানতে পারে। সেজন্য বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের গ্রিন রোডের পানি ভবনের লেভেল-২ এবং কক্ষ নম্বর ২১৪ এ বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। যার কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চলবে। এর সার্বিক দায়িত্বে থাকবেন দফতরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী পার্থ প্রতীম বড়ুয়া।

এতে আরও জানানো হয়, কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর ও আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সংস্থা থেকে হতে সার্বক্ষণিক ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ, পূর্বাভাস ও জলোচ্ছ্বাস সংক্রান্ত তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হবে। প্রতিষ্ঠানটির মাঠ পর্যায়ের দফতর থেকে উপক‚লীয় বাঁধ, পোল্ডার ইত্যাদির ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ সংগ্রহ করা হবে।

সেজন্য মাঠ পর্যায়ের সব কর্মকর্তা ও নির্বাহী প্রকৌশলীর ঘূর্ণিঝড়ের সময় জরুরি তথ্য ই-মেইল বা ফোনের মাধ্যমে কন্ট্রোল রুমে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত এই দফতরের সব কর্মকর্তা এবং কর্মচারীর সবধরনের ছুটিও বাতিল করা হয়েছে।

কন্ট্রোল রুমের টেলিফোন ০২-২২২২৩০০৭০, মোবাইল ফোন ০১৭৬৫৪০৫৫৭৬, ০১৫৫৯৭২৮১৫৮। তথ্য পাঠানোর ই-মেইল : ffwcbwdb@gmail.com,  ffwc05@yahoo.com 

ঘূর্ণিঝড় রেমালের সর্বশেষ খবর
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গভীর নিম্নচাপে রূপ নেওয়ার পর শনিবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল এটি। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে ঘনীভ‚ত হচ্ছে। 

এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চরণশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত আছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপক‚লীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সাগর উত্তাল রয়েছে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে অতিদ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এর অগ্রভাগের প্রভাব আগামীকাল রবিবার দুপুরের পর থেকে উপক‚লে বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন রকম হবে জানিয়ে চট্টগ্রাম আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক আবদুল বারেক বলেন, এর প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা আছে দুই মিটার বা সাত ফুট পর্যন্ত। এটি বাড়তে পারে। যদি জোয়ার থাকে তখন ১০ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। ভাটার সময় সাধারণ ঢেউ থেকে দুই মিটার পর্যন্ত বাড়বে। উপকূলের ওই সব এলাকায় ভাটা হয় সন্ধ্যা ৬টার পরে আর জোয়ার আসে রাত ১২টার পর। 

আরও পড়ুন

gg

আবদুল বারেক জানান, ঘূর্ণিঝড়টি ধেয়ে আসলে সতর্কসংকেত বাড়ানো হবে। এখন ৩ নম্বর স্থানীয় সংকেত আছে, তখন ৫, ৬ বা ৭ করা হবে। যদি সিভিয়ার সাইক্লোন বা প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়, তবে ৮, ৯ বা ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানো হবে। 

রেমালের প্রভাবে সারা দেশে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হবে উল্লেখ করে এই আবহাওয়াবিদ বলেন, ২৪ ঘণ্টায় ৩০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। বিশেষ করে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার জেলাতে বৃষ্টি বেশি হবে। এসব এলাকায় ভূমিধসের সতর্কবার্তা দেওয়া হবে।

প্রতিনিধি/একেবি