images

সারাদেশ

হাসপাতালের লিফটে ৪৫ মিনিট আটকে থেকে রোগীর মৃত্যু

জেলা প্রতিনিধি

১২ মে ২০২৪, ০২:৪৫ পিএম

গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লিফটে আটকে থাকার পর এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এমনটি হতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

রোগীর স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা রানীগঞ্জ বাড়িগাও গ্রামের শারফুদ্দিনের স্ত্রী মমতাজ বেগম (৫৩) দুদিন ধরে বুকে ব্যথা অনুভব করেন। রোববার (১২ মে) সকালে তাকে নেওয়া হয় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। প্রথমে মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করে পরীক্ষা করা হয়। সেখানে পরীক্ষার পর জানা যায়, তার হার্টে সমস্যার কথা। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে সকাল সাড়ে ৯টায় ১১ তলা থেকে লিফটের ৪ তলার হৃদরোগ বিভাগে নেওয়া হচ্ছিল মমতাজ বেগমকে। এক পর্যায়ে লিফটে উঠলে ৯ তলার মাঝামাঝি গিয়ে লিফট হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়।

স্বজনদের অভিযোগ, লিফটে রোগীর স্বজনসহ অন্যান্য লোকজন ছিল। এসময়  লিফটে থাকা ৩ জন লিফটম্যানকে ফোন দেয় কিন্তু তারা গাফিলতি করেন। ফোনে তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। পরে ৯৯৯ কল করলে ৪৫ মিনিট পর ফায়ার সার্ভিস এসে তাদের উদ্ধার করে। কিন্তু এর মধ্যেই মমতাজ বেগম মারা যান।

নিহতের মেয়ে শারমিন বলেন, আমার মা সকালে অসুস্থ হয়ে যায়। পরে সকাল ৬টায় তাজউদ্দীন হাসপাতালে নিয়ে আসি। প্রথমে মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করে পরীক্ষা করা হয়। সেখানে পরীক্ষার পর জানা যায়, তার হার্টে সমস্যা। পরে ১১ তলা থেকে লিফটে ৪ তলার হৃদরোগ বিভাগে নেওয়ার কথা বলে। তাদের কথামতো লিফটে উঠলে ৯ তলার মাঝামাঝি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। এসময় আমি, আমার মামা, ভাইসহ কয়েকজন মাকে নিয়ে ভেতরে ছিলাম। আমাদের দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। আমরা লিফটে থাকা ৩ জন লিফটম্যানকে ফোন দেই, কিন্তু তারা গাফিলতি করে। ফোনে আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে।

 

তিনি আরও বলেন, ৪৫ মিনিট আমরা ভেতরে অবস্থান করেছি, উপায় না পেয়ে ৯৯৯ ফোন দেই। ফোন পেয়ে ফায়ার সার্ভিস এসে উদ্ধার করে। লিফটম্যানদের গাফিলতির কারণে আমার মায়ের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে কোনো দায়িত্ববোধ নেই।

গাজীপুর তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সকালে মমতাজ বেগমকে বুকে ব্যাথা অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে মেডিসিন বিভাগ হতে ৪ তলায় নেওয়ার জন্য লিফটে তোলা হয়। এ সময় লিফটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এতে দীর্ঘ সময় লিফট আটকে থাকে। পরে লিফটম্যান ও ফায়ার সার্ভিসের লোক এসে সবাইকে উদ্ধার করে। লিফটে আটকে থাকা সবাই সুস্থ ছিল কিন্তু মমতাজ বেগম মারা গেছেন। আমরা পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।

উল্লেখ্য, এর আগে গত শুক্রবার হাসপাতালের ১২ তলার নামাজের কক্ষের দেয়ালের পাশের ফাঁকা স্থান দিয়ে নিচে ১০ তলায় পড়ে গিয়ে হাসপাতালে চিকিসাধীন জিল্লুর রহমান নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ করেন স্বজনরা।

প্রতিনিধি/টিবি