মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২১ জুন ২০২৩, ০৬:৩০ এএম

শেয়ার করুন:

ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ

সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় হাসিনা বেগম নামে এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগ করেছেন স্বজনরা।

স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালে ভর্তির পর কোনো ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা, এমনকি পর্যবেক্ষণ ছাড়াই রোগীকে নেওয়া হয় অপারেশন থিয়েটারে। পাকস্থলীর টিউমার অপারেশন করা হয়। এর দুদিন পর রোগীর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। হাসপাতালের দায়িত্বরত হেপাটোবিলিয়ারি অ্যান্ড প্যানক্রিয়াটিক সার্জারি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. আখতার আহমেদ শুভ কয়েক দিন পর আবারও ওই রোগীর অপারেশন করেন। তাতেও বন্ধ হয়নি রক্তক্ষরণ। পরে ল্যাব এইডের চিকিৎসকের সহায়তায় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে মারা যান হাসিনা বেগম নামে ওই রোগী।


বিজ্ঞাপন


জানা যায়, পাকস্থলীতে টিউমার অপারেশন করতে হাসিনা বেগমকে গত ১৭ মে ল্যাব এইড ক্যান্সার হাসপাতাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারে ভর্তি করা হয়। সেখানে ডা. আখতার আহমেদ শুভর তত্ত্বাবধানে তাকে ভর্তি করা হয়। তবে ওই চিকিৎসক নিজে রোগীকে দেখেননি। আগের করা পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে ১৮ মে হাসিনা বেগমকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে টিউমার অপসারণের ব্যবস্থা করেন। অপারেশনের দুদিন না যেতেই রোগীর কাটা জায়গা থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এজন্য তাকে ১৩০ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়। এতেও রোগীর রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় ২৯ মে রোগীর দ্বিতীয় অপারেশন করেন ডা. আখতার আহমেদ শুভ। তবে হাসিনা বেগমের অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি।

এ অবস্থায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে রোগীকে রিলিজ করতে বলা হয়। স্বজনরা রাজি না হওয়ায় ওই চিকিৎসক নিজেই কেবিন ব্যবস্থা করে হাসিনা বেগমকে  মুমূর্ষু অবস্থায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সেখানে গত ১৭ জুন ভোরে তার মৃত্যু হয়।

রোগীর মৃত্যুর পর ওই হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা এবং কর্তব্যরত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ তুলে মৃত রোগীর স্বামী মো. রাসেল রাজধানীর কলাবাগান থানায় মামলা করতে চাইলে পুলিশ তা নেয়নি বলে অভিযোগ করেন। শুধু তা-ই নয়, জিডি হিসেবেও প্রথমে গ্রহণ করা হয়নি। পরে লিখিত অভিযোগ আকারে সেটি গ্রহণ করা হয়। তবে, ১৭ জুন ওই রোগীর মৃত্যুর পর গতকাল (২০ জুন) সেই অভিযোগ জিডি হিসেবে নথিভুক্ত করার কথা জানায় কলাবাগান থানা পুলিশ।

হাসিনার স্বামী রাসেল গণমাধ্যমকে বলেন, চিকিৎসকের খামখেয়ালিপনা, অবহেলা ও চিকিৎসায় আমার স্ত্রী মারা গেছে। এজন্য আমি হাসপাতাল ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। আমি চাই এটার তদন্ত হোক, দোষীদের শাস্তি হোক।


বিজ্ঞাপন


চিকিৎসকদের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রী মারা যাওয়ার দুদিন পর চিকিৎসক ফোন করে জিজ্ঞেস করে, আমাদের কোনো ক্ষোভ বা রাগ আছে কি না? তিনিও নাকি আমাদের মতো সমব্যথী।’

কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘এমন একটি ঘটনায় রোগীর স্বজনরা সাধারণ ডায়েরি করেছেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। এর সত্যতা পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এমএইচ/এমআইকে/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর