অটোমোবাইল ডেস্ক
১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:০৬ এএম
মোটরসাইকেল চালানোর সময় নিরাপত্তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর একটি হলো ব্রেকিং সিস্টেম। গতি যতই থাকুক, প্রয়োজনের মুহূর্তে ঠিকভাবে থামতে না পারলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কয়েক গুণ বেড়ে যায়। আর এই ব্রেক ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ব্রেক প্যাড। যা ডিস্ক ব্রেকে থাকে। অনেক চালক নিয়মিত সার্ভিসিং করলেও ব্রেক প্যাডের বিষয়টি উপেক্ষা করেন। অথচ সময়মতো ব্রেক প্যাড না বদলালে জীবনঝুঁকির পাশাপাশি বাইকের অন্যান্য যন্ত্রাংশেরও ক্ষতি হতে পারে।
কত দিন পরপর ব্রেক প্যাড বদলানো প্রয়োজন
মোটরসাইকেলের ব্রেক প্যাড বদলানোর নির্দিষ্ট কোনও সময়সীমা নেই। এটি মূলত নির্ভর করে চালানোর অভ্যাস, রাস্তার ধরন এবং ব্রেক ব্যবহারের ওপর। শহরের ব্যস্ত রাস্তায় নিয়মিত চলাচল করলে ব্রেক প্যাড দ্রুত ক্ষয় হয়। সাধারণভাবে দেখা যায়, গড়ে ১৫ হাজার থেকে ২৫ হাজার কিলোমিটার চালানোর পর ব্রেক প্যাড বদলানোর প্রয়োজন পড়ে। তবে রুক্ষ রাস্তা বা অতিরিক্ত ব্রেক ব্যবহারে এর আগেও প্যাড শেষ হয়ে যেতে পারে।

ব্রেক প্যাড ক্ষয়ের লক্ষণ
ব্রেক প্যাড ক্ষয় হতে শুরু করলে কিছু স্পষ্ট লক্ষণ দেখা যায়। ব্রেক চাপার সময় কিচকিচে বা ঘষার মতো শব্দ শোনা গেলে সতর্ক হওয়া জরুরি। একই সঙ্গে আগের তুলনায় বেশি জোরে ব্রেক ধরাতে হলে সেটিও ক্ষয়ের ইঙ্গিত। অনেক সময় ব্রেক ঠিকমতো কাজ না করায় বাইক থামতে দেরি হয়, যা সরাসরি নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
সামনের ও পেছনের ব্রেক প্যাডের পার্থক্য
সাধারণত সামনের ব্রেক বেশি ব্যবহার করা হয়, তাই সামনের ব্রেক প্যাড দ্রুত ক্ষয় হয়। পেছনের ব্রেক প্যাড তুলনামূলক ধীরে শেষ হয়। এ কারণে শুধু একটি দিক বদলালেই দায়িত্ব শেষ নয়। নিয়মিত সার্ভিসিংয়ের সময় সামনের ও পেছনের উভয় ব্রেক প্যাডের অবস্থাই পরীক্ষা করা উচিত।
আরও পড়ুন: শীতকালে মোটরসাইকেলে এই কাজগুলো না করলে বাড়বে খরচ
সময়ে ব্রেক প্যাড না বদলানোর ক্ষতি
ব্রেক প্যাড একেবারে ক্ষয় হয়ে গেলে ব্রেক ডিস্কের সঙ্গে ধাতব অংশের সরাসরি ঘর্ষণ শুরু হয়। এতে ডিস্কে দাগ পড়ে এবং ব্রেকিং ক্ষমতা মারাত্মকভাবে কমে যায়। এক পর্যায়ে পুরো ব্রেক ডিস্ক বদলাতে হতে পারে, যা ব্রেক প্যাডের তুলনায় অনেক বেশি ব্যয়বহুল। তাই সময়মতো প্যাড বদলানোই সবচেয়ে সাশ্রয়ী ও নিরাপদ সিদ্ধান্ত।

ব্রেক প্যাডের আয়ু বাড়ানোর উপায়
ব্রেক প্যাড দীর্ঘদিন ভালো রাখতে হলে চালানোর অভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনতে হয়। হঠাৎ জোরে ব্রেক না করে ধীরে ও নিয়ন্ত্রিতভাবে ব্রেক ব্যবহার করলে প্যাড কম ক্ষয় হয়। অকারণে বারবার ব্রেক চাপা থেকে বিরত থাকা উচিত। এছাড়া কাদা, পানি বা বালিযুক্ত রাস্তায় চালানোর পর ব্রেক অংশ পরিষ্কার ও পরীক্ষা করলে প্যাডের কার্যক্ষমতা বজায় থাকে।
মোটরসাইকেলের ব্রেক প্যাড কোনও নির্দিষ্ট তারিখ দেখে নয়, বরং অবস্থার ভিত্তিতে বদলানোই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। নিয়মিত পরীক্ষা, সচেতন চালনা এবং সময়মতো ব্রেক প্যাড পরিবর্তনের মাধ্যমেই নিজের ও অন্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব।
এজেড