অটোমোবাইল ডেস্ক
১৯ জুন ২০২৫, ১২:৫০ পিএম
আপনার মোটরসাইকেল প্রতিদিনের চলাফেরার নির্ভরযোগ্য বাহন। তবে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ না করলে ছোট ছোট যান্ত্রিক সমস্যা গড়াতে পারে বড় বিপদে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হলো চেইন ও স্পোকেট। এগুলো ঠিকঠাক না থাকলে পারফরম্যান্স কমে যায়, বাড়ে জ্বালানি খরচ, এমনকি দুর্ঘটনারও আশঙ্কা তৈরি হয়।
এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হলো—মোটরসাইকেলের চেইন ও স্পোকেট বদলানোর সময় হয়েছে কিনা, কীভাবে বুঝবেন।
চেইন স্বাভাবিক অবস্থায় শব্দ করে না। কিন্তু যদি শুনতে পান ধাতব খচখচ শব্দ বা ঘর্ষণের আওয়াজ, তাহলে বুঝবেন চেইন ঢিলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে। অনেক সময় স্পোকেটের দাঁতের সঙ্গে চেইন ঠিকভাবে বসছে না—এটি একটি বড় সতর্ক সংকেত।

চেইনের স্বাভাবিক টেনশন নির্দিষ্ট পরিমাণে থাকে। যদি লক্ষ্য করেন বারবার চেইন ঢিলে হয়ে যাচ্ছে এবং বারবার টান দিতে হচ্ছে, তাহলে সেটি পরার লক্ষণ। অনেক সময় চেইন টানলেও ঠিকভাবে টানছে না—তখন চেইন এবং স্পোকেট দুটিই পরিবর্তন দরকার হতে পারে।
স্পোকেটের দাঁত যদি ধারালো হয়ে যায় বা বাঁকা দেখা যায়, তবে এটি স্পষ্ট সংকেত যে সেটি ক্ষয়প্রাপ্ত। অনেক সময় দাঁতগুলো হুকের মতো দেখতে হয়—এটিও পরিবর্তনের সময় হয়ে আসার ইঙ্গিত।
গাড়ির গতি কমে যাওয়া বা থ্রটল দিলে গতি না বাড়া চেইন-স্পোকেট সমস্যার একটি বড় লক্ষণ। চেইন স্লিপ করলে এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, যার ফলে মোটরসাইকেল সাড়া দিতে দেরি করে।

চেইন ও স্পোকেট ক্ষয় হলে মুভমেন্টে ভারসাম্য নষ্ট হয়, যার ফলে রাইডিংয়ের সময় হালকা ঝাঁকুনি বা কম্পন অনুভব হতে পারে। অনেক সময় সিটে অথবা ফুটরেস্টে তা টের পাওয়া যায়।
চেইনে যদি মরিচা পড়ে অথবা লিংকগুলোতে মসৃণতা না থাকে (জ্যাম হয়ে যায়), তাহলে সেটিও পরিবর্তনের ইঙ্গিত। চেইন পরিষ্কার ও লুব্রিকেট করেও যদি সমস্যা না মেটে, তবে তা বদলানো উত্তম।
সাধারণত ১৫ হাজার থেকে ২৫ হাজার কিলোমিটার চালানোর পর চেইন-স্পোকেট সেট বদলানো উচিত।
তবে আপনার চালানোর ধরন, রাস্তার অবস্থা এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভ্যাসের উপর নির্ভর করে এটি দ্রুত নষ্টও হতে পারে।
অনেকেই শুধু চেইন অথবা শুধু স্পোকেট বদলান। কিন্তু এতে নতুন অংশ পুরনোটির সঙ্গে সঠিকভাবে মানিয়ে নিতে পারে না। তাই চেইন, ফ্রন্ট স্পোকেট ও রিয়ার স্পোকেট—তিনটি একসঙ্গে বদলানোই সবচেয়ে কার্যকর ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান।
আরও পড়ুন: নতুন মোটরসাইকেল কেনার আগে যে বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন
চেইন ও স্পোকেট এমন যন্ত্রাংশ যা প্রতিদিনের ব্যবহারে ক্ষয় হয়। কিন্তু আপনি যদি লক্ষণগুলো আগে থেকে বুঝে ব্যবস্থা নেন, তাহলে বড় সমস্যা এড়ানো সম্ভব। সময়মতো পরিবর্তন করলে আপনি পাবেন মসৃণ রাইড, কম জ্বালানি খরচ এবং ঝুঁকিমুক্ত যাত্রা।
প্রতি ৫০০-৭০০ কিমি পরপর চেইনে গ্রিজ বা চেইন লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করুন এবং প্রতি সার্ভিসে চেইনের টেনশন চেক করান।
এজেড