চ্যাটজিপিটি এখন আর চিকিৎসা, আইন বা আর্থিক বিষয়ে সরাসরি পরামর্শ দেবে না। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক এই চ্যাটবটকে এখন আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ‘শিক্ষামূলক মাধ্যম’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এটি আর কোনো পরামর্শদাতা নয়।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, চ্যাটজিপিটি কোনো ওষুধের নাম বা মাত্রা জানাবে না, মামলার খসড়া বা আদালতের কৌশলও দেবে না।
বিজ্ঞাপন
সংবাদমাধ্যম নেক্সটা (NEXTA) জানিয়েছে, চ্যাটজিপিটি এখন শুধু নীতিমালা ব্যাখ্যা করবে, সাধারণ প্রক্রিয়া তুলে ধরবে, এবং পরামর্শ দেবে ‘একজন চিকিৎসক, আইনজীবী বা আর্থিক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলুন।’
চ্যাটজিপিটির ভুল পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি রোগী
গত অগাস্ট মাসে এক ৬০ বছর বয়সী ব্যক্তি তিন সপ্তাহ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। কারণ তিনি চ্যাটজিপিটির পরামর্শে সাধারণ টেবিল লবণ (সোডিয়াম ক্লোরাইড)-এর বদলে সোডিয়াম ব্রোমাইড খাওয়া শুরু করেছিলেন।
বিজ্ঞাপন
অ্যানালস অব ইন্টারনাল মেডিসিন সাময়িকীতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ব্যক্তির আগে কোনো মানসিক বা বড় শারীরিক অসুস্থতার ইতিহাস ছিল না। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তিনি জানান, চ্যাটজিপিটির কাছ থেকে টেবিল লবণের সম্ভাব্য স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে জেনে তিনি খাদ্যতালিকা থেকে লবণ বাদ দেওয়ার জন্য একটি “ব্যক্তিগত পরীক্ষা” চালাচ্ছিলেন।
ক্যানসার শনাক্তে দেরি
সেপ্টেম্বর মাসে আয়ারল্যান্ডের কাউন্টি কেরির কিলার্নি এলাকার ৩৭ বছর বয়সী ওয়ারেন টিয়ার্নি নামের এক ব্যক্তি গিলতে সমস্যা দেখা দিলে চ্যাটজিপিটির পরামর্শ নেন। এআই চ্যাটবট তাকে জানায়, তার ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা ‘অত্যন্ত কম’।
চ্যাটজিপিটির উত্তরটি বিশ্বাসযোগ্য মনে হওয়ায় তিনি চিকিৎসকের কাছে যেতে দেরি করেন। পরে তার খাদ্যনালীতে চতুর্থ স্তরের অ্যাডিনোকারসিনোমা (ক্যানসার) ধরা পড়ে।
আরও পড়ুন: হোয়াটসঅ্যাপে এই ভুলগুলো কখনোই করবেন না
তিনি ব্রিটিশ দৈনিক মিরর-কে বলেন, ‘আমার মনে হয়, বিষয়টি শেষ পর্যন্ত বড় বিপদে পরিণত হয়েছিল। চ্যাটজিপিটির কথায় বিশ্বাস করে হয়তো আমি সময়মতো চিকিৎসা নিইনি। যা ঘটেছে, তার সম্পূর্ণ দায় আমি নিজেই নিচ্ছি।’
চ্যাটজিপিটির এই নতুন সিদ্ধান্তকে অনেকেই ‘এআই-এর দায়িত্বশীল পদক্ষেপ’ হিসেবে দেখছেন। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি এআই ব্যবহারে নিরাপত্তা ও সচেতনতার এক নতুন অধ্যায় খুলে দিয়েছে।
এজেড
