ইন্টারনেট আমাদের দৈনন্দিন জীবনের এক অপরিহার্য অংশ। ভিডিও কল, অনলাইন গেমিং, স্ট্রিমিং—সব কিছুর জন্যই দ্রুত এবং স্থিতিশীল ওয়াই-ফাই সংযোগ প্রয়োজন। ওয়াইফাই স্লো হলে এসব কাজে বাধা সৃষ্টি হয়, যা ব্যবহারকারীর জন্য অত্যন্ত বিরক্তিকর। কিন্তু ওয়াইফাই কেন স্লো হয় এবং এর সমাধান কী, তা জানা অত্যন্ত জরুরি। এই প্রতিবেদনে ওয়াইফাই ধীর গতির হওয়ার মূল কারণগুলো চিহ্নিত করা এবং তা দ্রুত করার কার্যকরী উপায়গুলো তুলে ধরা হলো।
বিজ্ঞাপন
ওয়াইফাই স্লো হওয়ার মূল কারণসমূহ
ওয়াই-ফাই ধীর গতির হওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি সাধারণ কারণ রয়েছে:
১. রাউটার থেকে দূরত্ব ও অবস্থান: ডিভাইস থেকে রাউটারের দূরত্ব বেশি হলে বা সিগনাল বাধা পেলে গতি কমে যায়।
২. হার্ডওয়্যারের পুরোনো হয়ে যাওয়া: পুরোনো মডেলের রাউটার বা অন্যান্য ডিভাইস আধুনিক ইন্টারনেটের গতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারে না। এছাড়া, রাউটারের ফার্মওয়্যার পারফরম্যান্সের সমস্যা থেকেও গতি কমতে পারে।
বিজ্ঞাপন
৩. ইলেক্ট্রনিক হস্তক্ষেপ: ২.৪ GHz ফ্রিকোয়েন্সি ব্র্যান্ড ব্যবহার করলে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস (যেমন: মাইক্রোওয়েভ, বেবি মনিটর) এবং প্রতিবেশীর ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের সিগন্যালের সঙ্গে সংঘর্ষের কারণে ওয়াই-ফাই সিগন্যালে ব্যাঘাত ঘটে।
৪. একাধিক সংযোগ ও অ্যাপ্লিকেশন: একসঙ্গে অনেকগুলো ডিভাইস নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকলে বা ব্যান্ডউইথ-হগিং অ্যাপ্লিকেশন (Bandwidth Hogging Application) চালু থাকলে গতি কমে যায়।
৫. ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের (ISP) সমস্যা: অনেক সময় ইন্টারনেট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কোনো সমস্যা থাকলেও নেট স্লো হতে পারে।
স্লো ওয়াই-ফাই ফাস্ট করার কার্যকরী উপায়
ধীর গতির ওয়াই-ফাই সংযোগকে দ্রুত ও স্থিতিশীল করতে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা যেতে পারে:
১. রাউটারের সঠিক স্থান নির্ধারণ:
* ঘরের মাঝামাঝি রাউটার রাখা উচিত, যাতে সব ডিভাইসের কাছে সিগনাল সমানভাবে পৌঁছাতে পারে।
* ডিভাইস এবং রাউটারের মধ্যে দূরত্ব যেন কম থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: ওয়াইফাই রাউটারের এক মাসের বিদ্যুৎ খরচ কত জানেন না অনেকেই
২. ৫GHz ব্যান্ড ব্যবহার ও চ্যানেল পরিবর্তন:
* রাউটার ডুয়াল-ব্যান্ড ফ্রিকোয়েন্সি সাপোর্ট করলে, ভিড় কম এবং স্পিড বেশি পাওয়ার জন্য ৫GHz ব্যান্ডে স্যুইচ করা উচিত।
* প্রতিবেশীর নেটওয়ার্ক থেকে হস্তক্ষেপ এড়াতে ম্যানুয়ালি রাউটারের চ্যানেল পরিবর্তন করা যেতে পারে। আধুনিক রাউটারে এই বৈশিষ্ট্যটি থাকে।
৩. নিয়মিত আপডেট ও আপগ্রেড:
- রাউটারের ফার্মওয়্যার নিয়মিত আপডেট করা প্রয়োজন। এতে নিরাপত্তা এবং পারফরম্যান্স উভয়ই ভালো থাকে।
- পুরোনো রাউটার থাকলে তা আধুনিক মডেলে আপগ্রেড করার কথা ভাবা উচিত। বিশেষ করে, ওয়াই-ফাই ৬ (Wi-Fi 6)-এর মতো লেটেস্ট স্ট্যান্ডার্ড সাপোর্ট করে এমন রাউটার ব্যবহার করা বাঞ্ছনীয়।
ওয়াইফাই স্লো হওয়ার কারণগুলো চিহ্নিত করে সঠিক স্থানে রাউটার স্থাপন, ৫GHz ব্যান্ড ব্যবহার এবং হার্ডওয়্যার নিয়মিত আপডেট করার মাধ্যমে ইন্টারনেটের গতি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো সম্ভব। এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করলে ব্যবহারকারী নির্বিঘ্নে দ্রুত গতির ইন্টারনেট উপভোগ করতে পারবেন।
এজেড

