সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ, আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার কিংবা মত প্রকাশ, সব কিছুতেই সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম রয়েছে পাশে। তবে প্রশ্ন হলো, এই প্ল্যাটফর্মে ব্যক্তিগত তথ্য কতটা শেয়ার করা উচিত?
এই প্রশ্নের উত্তর জানা জরুরি, কারণ একবার তথ্য ইন্টারনেটে চলে গেলে তা পুরোপুরি মুছে ফেলা প্রায় অসম্ভব। ফলে অসতর্কতায় শেয়ার করা একটি সাধারণ তথ্যও হতে পারে আপনার নিরাপত্তা, গোপনীয়তা এমনকি আর্থিক ঝুঁকির কারণ।
বিজ্ঞাপন
কোন কোন তথ্য বিপজ্জনক হতে পারে?
ঠিকানা, ফোন নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর বা জন্ম তারিখ
– এসব তথ্য স্ক্যামার বা প্রতারকদের প্রধান টার্গেট। পরিচয় চুরি, ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রবেশসহ নানা অপরাধে ব্যবহৃত হতে পারে।

বিজ্ঞাপন
লোকেশন বা ভ্রমণের তথ্য (Live Location)
– ‘এখন ঢাকায়’, ‘বিদেশে যাচ্ছি’, ‘বাড়ি ফাঁকা’ ইত্যাদি তথ্য চোর বা অপরাধীদের সহায়তা করতে পারে।
ছোটদের ছবি ও তথ্য
– শিশুদের ছবি বা স্কুল সম্পর্কিত তথ্য ভবিষ্যতে সাইবার বুলিং বা শিশু সুরক্ষা সংক্রান্ত ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
ব্যাংক বা আর্থিক তথ্য
– বিকাশ, নগদ, অ্যাকাউন্ট নম্বর, ওটিপি স্ক্রিনশট—এসব কখনোই শেয়ার করা উচিত নয়।
কী ধরনের বিপদ হতে পারে?
ফিশিং ও স্ক্যাম: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে তথ্য নিয়ে আপনাকে ফোন বা মেসেজ দিয়ে প্রতারণা করা যায়।
আইডি হ্যাকিং: আপনার জন্মতারিখ বা ফোন নম্বর জানলে আইডি হ্যাক করা সহজ হয়।
আরও পড়ুন: ফোন চুরি হলে ছবি ও ভিডিও রিকভার করা সম্ভব?
চাকরির ক্ষেত্রে প্রভাব: অনেক নিয়োগদাতা প্রার্থীকে গুগল বা সোশ্যাল মিডিয়ায় খুঁজে দেখে। অতিরিক্ত বা বিতর্কিত তথ্য ভবিষ্যতে ক্ষতি করতে পারে।
সাইবার স্টকিং ও হয়রানি: ব্যক্তিগত ছবি বা অবস্থান জানলে অপরিচিতরা নজরদারি করতে পারে।

নিরাপদে থাকতে যা করবেন
প্রোফাইল প্রাইভেসি সেটিংস চেক করুন (বন্ধু ছাড়া কেউ দেখতে পাচ্ছে কিনা)
নিয়মিত অপ্রয়োজনীয় ছবি ও পোস্ট ডিলিট করুন
লোকেশন শেয়ারিং অফ রাখুন
ব্যক্তিগত তথ্য স্ক্রিনশটে তুলে শেয়ার করবেন না
পাসওয়ার্ড ও দুই ধাপের যাচাইকরণ চালু রাখুন
সোশ্যাল মিডিয়া আনন্দের জায়গা হলেও, এটি ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণের নিরাপদ জায়গা নয়। তাই ভাবুন, যাচাই করুন, তারপর শেয়ার করুন।
এজেড

