সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

জুমার দিন ভালোভাবে গোসল করার সওয়াব

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১:৫৮ এএম

শেয়ার করুন:

জুমার দিন ভালোভাবে গোসল করার সওয়াব

মুসলমানদের জন্য জুমার দিন হচ্ছে সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। এই দিনের ফজিলত সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘জুমার দিন সপ্তাহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং তা আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত’ (ইবনে মাজাহ: ১০৮৪)। আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন।’ (ইবনে মাজাহ: ১০৯৮)

তাই জুমাবার ও জুমার নামাজ মুসলমানের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনরা! জুমার দিন যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে এসো এবং বেচাকেনা বন্ধ করো, এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বুঝ..।’ (সুরা জুমা: ৯)

আরও পড়ুন: জুমার আজান শুনলেই কি বেচাকেনা বন্ধ করতে হবে?

জুমার দিনের বিশেষ কিছু আমল ও আদব রয়েছে। এর মধ্যে গোসল করাও অন্তর্ভুক্ত। এরপর আগেভাগে পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়া, ইমামের পাশে বসা, অনর্থক কথা-কাজ থেকে নিজেকে রক্ষা করা এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনা খুব গুরুত্বপূ্র্ণ ও ফজিলতপূর্ণ আমল। 

আউস ইবনে আউস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (স.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করাবে এবং নিজেও গোসল করবে অথবা উত্তমরূপে গোসল করবে এরপর ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে আসবে, আসার সময় হেঁটে আসবে, কোনো বাহনে চড়বে না, ইমামের কাছাকাছি বসবে, এরপর দুটি খুতবা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং (খুতবার সময়) কোনো অনর্থক কাজকর্ম করবে না, সে মসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপে একবছর নফল রোজা ও একবছর নফল নামাজের সওয়াব পাবে।’ (আবু দাউদ: ৩৪৫)

আরও পড়ুন: নফল ইবাদত কোনটার পর কোনটার বেশি সওয়াব?


বিজ্ঞাপন


সুবহানাল্লাহ! উল্লেখিত হাদিসে বর্ণিত সহজ কিছু কাজে প্রতি কদমে কদমে মিলবে পূর্ণ এক বছর নফল রোজা ও নফল নামাজের সওয়াব। এই সুযোগ অন্তত মুমিন বান্দাদের হাতছাড়া করার কথা নয়। অন্য হাদিসে সালমান ফারসি (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, সাধ্যমতো পবিত্র হলো, তেল ব্যবহার করল, ঘর থেকে সুগন্ধি ব্যবহার করল, অতঃপর মসজিদে এলো, সেখানে দুজন মুসল্লির মধ্যে ফাঁক করে সামনে এগিয়ে যায় না, নির্দিষ্ট পরিমাণ নামাজ পড়ল, অতঃপর ইমাম কথা শুরু করলে চুপ থাকল; তাহলে আল্লাহ তাআলা তাঁর দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করবেন।’ (সহিহ বুখারি: ৮৮৩)

হাদিসটি খেয়াল করলে দেখবেন- দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের সব গুনাহ মাফের জন্য জুমার নামাজের আগে উত্তমরূপে গোসল করা ও সাধ্যমতো পবিত্র হওয়া অন্যতম আমল। এরপর বাকি আমলগুলোর ব্যাপারে সচেতন থাকলে জুমার সকল বরকত ও রহমত হাসিল হবে ইনশাআল্লাহ।

জুমার দিন তাড়াতাড়ি মসজিদে যাওয়ার গুরুত্ব বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যখন জুমার দিন উপস্থিত হয় ফেরেশতারা মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে প্রথম থেকে পর্যায়ক্রমে আগন্তুকদের নাম লিখতে থাকে। যে সবার আগে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি উট সদকা করে। তারপর যে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি গাভী সদকা করে। তারপর আগমনকারী মুরগি সদকাকারীর মতো। তারপর আগমনকারী একটি ডিম সদকাকারীর মতো। এরপর যখন ইমাম খুতবা দিতে বের হন, তখন ফেরেশতারা তাদের দফতর বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগ  দিয়ে খুতবা শুনতে থাকেন।’ (বুখারি: ৮৮২)

আরও পড়ুন: খুতবার সময় দানবাক্স চালানো জায়েজ?

সুতরাং মুসল্লিদের উচিত- আগেভাগে জুমার নামাজের জন্য মসজিদে উপস্থিত হওয়া। এর প্রস্তুতি হিসেবে সুন্দরভাবে গোসল করে বাড়ি থেকে নামাজের উদ্দেশ্যে বের হয়ে যাওয়া। জুমার দিন মসজিদে পাশে কেউ কথা বললে তাকে ‘চুপ করো’ বলতেও নিষেধাজ্ঞা এসেছে হাদিসে। ব্যাপারটি গুরুত্বের সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, জুমার দিন খুতবা চলা অবস্থায় যদি তোমার পাশের সাথীকে বলো- চুপ করো, তাহলে তুমি একটি অনর্থক কাজ করলে। (সহিহ বুখারি: ৯৩৪, সহিহ মুসলিম: ৯৩১)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে কোরআন-হাদিসের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী জুমার দিনের সকল আদব ও আমল যথাযথ পালন করার তাওফিক দান করুন। সুন্দরভাবে ইখলাসের সঙ্গে জুমার নামাজ পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর