সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

অজু দাঁড়িয়ে করা যাবে কি?

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০৫:২৭ পিএম

শেয়ার করুন:

অজু দাঁড়িয়ে করা যাবে কি?

অজু পবিত্রতা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। অজুর বিধান সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘হে মুমিনরা! যখন তোমরা নামাজের জন্য প্রস্তুত হবে তখন তোমাদের মুখ ও হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে এবং মাথা মাসেহ করবে আর পা টাখনু (গ্রন্থি) পর্যন্ত ধৌত করবে...।’ (সুরা মায়েদা: ৬)

প্রশ্ন হলো—অজু দাঁড়িয়ে করার ব্যাপারে শরিয়তে কোনো নিষেধাজ্ঞা আছে কি না। এর উত্তর হলো—বসে অজু করা উত্তম। তাই এই বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। তবে কেউ দাঁড়িয়ে অজু করলেও অজু হয়ে যাবে, এটি মাকরুহ নয়। (নুরুল ইযা: ৩৩)


বিজ্ঞাপন


অজু সংক্রান্ত হাদিসগুলোতে যে ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে সেটি হলো পূর্ণাঙ্গ অজু বা উত্তমরূপে অজু। তাই উত্তমরূপে অজু করা সুন্নত। এ ব্যাপারে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। এমন যেন না হয় যে, কুনই, মুখমণ্ডল বা পায়ের গোড়ালিতে ভালোভাবে পানি পৌঁছল না। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত।

আরও পড়ুন: অজু করে ঘুমানোর বিস্ময়কর ফজিলত

সুন্নত তরিকায় অজু করলে মহা-পুরষ্কারের ঘোষণা এসেছে হাদিসে। আমর ইবনে আবাসা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি একদিন প্রশ্ন করলাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! অজুর ফায়দা কী? তিনি বলেন, ‘যখন তুমি অজু করবে ও দুই হাতের কবজি পরিষ্কার করে ধৌত করবে, তখন গুনাহসমূহ আঙুলের অগ্রভাগ ও নখ দিয়ে বের হয়, যখন নাকের ছিদ্র পরিষ্কার করবে, মুখ ও হস্তদ্বয় কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে, মাথা মাসেহ করবে ও উভয় পা টাখনু পর্যন্ত ধৌত করবে, তখন তুমি যেন তোমার গুনাহগুলোকে ধুয়ে পরিষ্কার করে দিলে। এরপর যখন তুমি তোমার চেহারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে জমিনে রাখবে, তখন তুমি এমনভাবে গুনাহ থেকে নিষ্পাপ হয়ে যাবে, যেদিন তোমার মা তোমাকে জন্ম দিয়েছিল।’ (নাসায়ি: ১৪৭)

কেয়ামতের ময়দানে অজুকারী ব্যক্তিদের অঙ্গগুলো নুরের আলোয় ঝলমল করতে থাকবে। হাশরে উপস্থিত সকলে অজুকারী ব্যক্তির দিকে বারবার তাকাতে থাকবে। নোয়াঈম মুজমির (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবু হুরায়রা (রা) এর সঙ্গে মসজিদের ছাদে উঠলাম। তিনি অজু করলেন। তারপর বললেন, আমি রাসুল (স.)-কে বলতে শুনেছি, ‘নিশ্চয়ই কেয়ামত দিবসে আমার উম্মতকে এমন অবস্থায় ডাকা হবে, অজুর প্রভাবে তাদের হাত-পা ও মুখমণ্ডল উজ্জ্বল থাকবে। অতএব তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার ইচ্ছা রাখে, সে যেন তা করে নেয়।’ (বুখারি:১৩৬)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: ফরজ গোসলের পর নামাজের জন্য অজু করতে হবে কি?

তবে, অজু করার ক্ষেত্রে পানি ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে যেন অপচয় না হয়। কেননা অজুতে পানির অপব্যয় করা মাকরুহ। (ইবনে মাজাহ: ৪১৯, আবু দাউদ: ৮৮)। আবার অত্যধিক কার্পণ্য করাও মাকরুহ। (আবু দাউদ: ১১৬, মুসলিম: ৩৫৪)। এছাড়াও মুখে জোরে পানি মারা, দুনিয়াবি কথা বলা, অন্যের সাহায্য নেওয়া মাকরুহ। তবে অপারগ অবস্থায় অন্যের সাহায্য নেওয়াতে সমস্যা নেই। তিনবার মাথা মাসেহ করা ও প্রতিবার পানিতে হাত ভেজানোও মাকরুহ। (কানজুল উম্মাল: ৯/৪৭৩; ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ১/৯৮; মুসনাদে আবি ইয়ালা: ১/২০০; আল মুজামুল কাবির: ৩৮৫৭; আবু দাউদ: ১১৬, কানজুল উম্মাল: ২৭০২৪)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে অজুসহ যাবতীয় কাজ সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করে আল্লাহর পক্ষ থেকে কল্যাণ লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর