প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ফরজ। দাঁড়িয়ে, বসে, শুয়ে, ইশারায়—যে অবস্থায় সম্ভব নামাজ ছাড়া যাবে না। একজন মুমিন ঘরে-বাইরে, পথে-ঘাটে, দেশে-বিদেশে, সাগরে-মহাকাশে যেখানেই অবস্থান করে, তাকে নামাজ পড়তেই হবে। কেননা আল্লাহ তাআলার নির্দেশ, ‘...নির্ধারিত সময়ে সালাত আদায় করা মুমিনদের জন্য অবশ্যকর্তব্য।’ (সুরা নিসা: ১০৩)
যানবাহনে থাকা অবস্থায় নামাজ পড়ার সময় হয়ে গেলে অনেক ক্ষেত্রে নেমে নামাজ পড়ার সুযোগ থাকে না। ওই অবস্থায় বাহনে নামাজ পড়ার নিয়ম কী? প্রথমেই জানতে হবে- যানবাহনে তখনই নামাজ পড়া জায়েজ, যদি সঙ্গী ও বাস চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে অথবা বাসে আর উঠতে না পারার আশঙ্কা থাকে।
বিজ্ঞাপন
দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার সুযোগ থাকলে বসে নামাজ পড়া যাবে না। সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কেউ বসে নামাজ পড়লে তার নামাজ হবে না।
আরও পড়ুন: নামাজ জামাতে পড়ার তাগিদ কেন?
যানবাহনে নামাজ পড়ার সময় যথাসাধ্য চেষ্টা করবে কেবলামুখি হতে। যদি গাড়ি কেবলামুখ থেকে অন্যদিকে ঘুরে যায়, তখন নামাজে থাকা অবস্থায় কেবলার দিকে ঘুরে যাবে। যদি সম্ভব না হয়, তাহলে যেদিকে মুখ থাকে, সেদিকে মুখ রেখেই নামাজ শেষ করবে। কিন্তু ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কেবলামুখি হয়ে নামাজ আদায় না করলে, পরে ওই নামাজ পুনরায় পড়ে নেওয়া আবশ্যক।
যদি অজু না থাকে এবং অজুর পানিও না থাকে, তাহলে তায়াম্মুম করে নামাজ আদায় করে নেবে। পরে এই নামাজ পুনরায় পড়তে হবে না। আর যদি তায়াম্মুম করারও সুযোগ না থাকে, তবুও ইশারায় নামাজ পড়ে নেবে। অবশ্য পরে এই নামাজের কাজা করতে হবে।
আরও পড়ুন: ফজরে দেরিতে ঘুম ভাঙলে উঠেই যা করবেন
এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—নামাজ যেহেতু সময়মতো পড়া ফরজ, তাই গাড়ি বা বাহনে উঠার আগে সময়ের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যাতে নামাজ কাজা না হয়। আর নামাজের ব্যাপারে ভালো সার্ভিস দেয় এমন পরিবহন বা যানবাহন চয়েস করা মুসলমানদের উচিত।
অনেক সময় পুরুষরা বাস থামিয়ে নামাজ পড়লেও নারীরা পর্দার কারণে কিংবা লজ্জার দরুন নামাজ পড়েন না। অথচ এটি গুনাহের কাজ। তারাও মসজিদের একপাশে বা অন্য কোনো স্থানে বোরকা পরিহিত অবস্থায় নামাজ আদায় করে নিতে পারেন।
তাদের জন্য নিরাপদ ও আরামদায়ক নামাজের স্থান রাখা যানবাহন বা পরিবহন কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নামাজের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বনের তাওফিক দান করুন। জীবনের প্রত্যেক ক্ষেত্রে, প্রত্যেক বিষয়ে শরিয়তের নির্দেশনা মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।
(তথ্যসূত্র: মাআরিফুস সুনান: ৩/৩৯৪-৯৬; আহসানুল ফতোয়া: ৪/৮৮ ও ১/২৯১; রদ্দুল মুহতার: ২/১০২,৪৯১; ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/২৮, ১৪৪)

