শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

মানুষকে তাচ্ছিল্য করার গুনাহ

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ নভেম্বর ২০২২, ০৭:৩৪ পিএম

শেয়ার করুন:

মানুষকে তাচ্ছিল্য করার গুনাহ

তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা মুমিনদের অভ্যাস হতে পারে না। আল্লাহ তাআলা এই নোংরা ও ঘৃণিত কাজ থেকে তাঁর মুমিন বান্দাদের দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। উপরন্তু সুন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের সুনাম, মর্যাদা অক্ষত রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! কোনো সম্প্রদায় যেন অন্য সম্প্রদায়কে ঠাট্টা-বিদ্রূপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রূপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর নারীরা যেন অন্য নারীদের ঠাট্টা-বিদ্রূপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রূপকারিণীদের চেয়ে উত্তম। তোমরা একে অন্যের নিন্দা করো না, একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। ঈমান গ্রহণের পর (ঈমানের আগে কৃত অপরাধকে যা মনে করিয়ে দেয় সেই) মন্দ নাম কতই না নিকৃষ্ট! (এ সব হতে) যারা তাওবা করে না, তারাই জালিম।’ (সুরা হুজরাত: ১১)


বিজ্ঞাপন


মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ তাকি ওসমানি এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘তাসখীর’-এর অর্থ হলো এমনভাবে কারো দোষ বর্ণনা করা, যাতে মানুষ তাকে নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা করে, এতে ওই ব্যক্তি কষ্ট পায়। এ ধরণের কাজ অনেক রকম হতে পারে। যেমন— কারো চলাফেরা, ওঠাবসা, কথাবার্তা, অঙ্গভঙ্গি ইত্যাদি নিয়ে ব্যঙ্গ করা, কারো শারীরিক গঠন ও আকার-আকৃতি নিয়ে কটূক্তি করা, তার কোনো কথা বা কাজের ব্যাপারে ঠাট্টা করা, চোখ-হাত-পা দ্বারা টিকা-টিপ্পনী মারা এর অন্তর্ভুক্ত।

তাচ্ছিল্যকারীকে নিকৃষ্ট লোক বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে হাদিসে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির মন্দ প্রমাণিত হওয়ার জন্য এতটুকু যথেষ্ট যে, সে তার মুসলমান ভাইকে তুচ্ছজ্ঞান করে।’ (ইবনে মাজাহ: ৪২১৩)

আরও পড়ুন: মুসলিম ভাইয়ের জন্য দোয়া করার সওয়াব

আখেরাতে উপহাসকারীদের সঙ্গে উপহাস করা হবে। এ সম্পর্কে নবীজি বলেছেন, ‘একজন উপহাসকারীর জন্য বেহেশতের দরজা খুলে দেয়া হবে এবং তাকে বলা হবে ‘এসো।’ সে তার দুঃখ ও অসহায়ত্ব নিয়ে সামনে অগ্রসর হবে এবং যখন সে ভেতরে প্রবেশ করতে চাইবে, তখনই তার সামনে বেহেশতের দরজা বন্ধ হয়ে যাবে।’(কানজুল উম্মাল: ৮৩২৮)


বিজ্ঞাপন


বিদ্রূপকারীরা পরকালে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য আফসোস করবে। এ স্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যাতে কাউকেও বলতে না হয়, হায় আফসোস! আল্লাহর প্রতি আমার কর্তব্যে আমি যে শৈথিল্য করেছি তার জন্য! আর আমি তো ঠাট্টাকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম।’ (সুরা জুমার: ৫৬)

আরও পড়ুন: হাশরের দিন আমলনামা পেয়ে কার প্রতিক্রিয়া কেমন হবে

নবীজি (স.) আরও বলেন, তোমাদের কোনো ভাই যাতে অন্য মুসলিম ভাইকে ছোট না করে অর্থাৎ তার মান-সম্মান ক্ষুণ্ন না করে। কেননা প্রত্যেক মুসলিমের প্রতি অন্য ভাইয়ের রক্ত, মাল ও সম্মানকে ক্ষুণ্ন করা হারাম করা হয়েছে।’ (সহিহ মুসলিম ৪/১৯৮৬, হাদিস:২৫৬৪)

অতএব আমাদের উচিত, এসব মন্দ অভ্যাস ত্যাগ করা। অতীতে যাদের ঠাট্টা বিদ্রূপ করা হয়েছে তাদের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া এবং তাওবা করা, যাতে পরকালে এর জন্য অনুতপ্ত হতে না হয়। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর