বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

কেয়ামত পর্যন্ত নবীজির দোয়ায় অন্তর্ভুক্ত হবেন যারা 

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ নভেম্বর ২০২২, ০৪:৩৪ পিএম

শেয়ার করুন:

কেয়ামত পর্যন্ত নবীজির দোয়ায় অন্তর্ভুক্ত হবেন যারা 

প্রিয়নবী (স.)-এর দোয়ালাভের কিছু আমল রয়েছে। আমলগুলো উম্মতকে বাতলে দিয়েছেন তিনি। সেসব আমলের বিনিময়ে কেয়ামত পর্যন্ত যে কেউ মহানবী (স.)-এর দোয়ায় শামিল হতে পারেন। নিচে এমন কিছু আমল উল্লেখ করা হলো—

পাওনা আদায় ও ক্রয়-বিক্রয়ে সহনশীল হওয়া
লেনদেন, ক্রয়-বিক্রয়, দেনা-পাওনা আদায়ে যারা সহনশীলতা ও কোমলতা দেখায়, রাসুল (স.) তাদের জন্য রহমত ও জান্নাতলাভের দোয়া করেছেন। জাবের (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ সেই বান্দার প্রতি রহমত বর্ষণ করেন, যে বান্দা ক্রয়-বিক্রয়ের সময় উদারচিত্ত হয় এবং (ঋণের) পাওনা আদায়ের ক্ষেত্রে সহনশীল হয়।’ (ইবনে মাজাহ: ২২০৩)


বিজ্ঞাপন


অধীনস্থ লোকের ওপর কোমল হওয়া
অধীনস্থ ব্যক্তির ওপর কোমলতা ও নম্রতা প্রদর্শনের মাধ্যমে রাসুলুল্লাহ (স.)-এর দোয়া লাভ করা যায়। নবী করিম (স.) তাঁর উম্মতের কোমলতা প্রদর্শনকারী ব্যক্তিদের জন্য দোয়া করে বলেন, ‘হে আল্লাহ, যে ব্যক্তি আমার উম্মতের কোনোরূপ কর্তৃত্ব লাভ করে এবং তাদের প্রতি কঠোরতা আরোপ করে, তুমি তার প্রতি কঠোর হও। আর যে আমার উম্মতের ওপর কোনোরূপ কর্তৃত্ব লাভ করে তাদের প্রতি কোমল আচরণ করে, তুমিও তার প্রতি কোমল ও সদয় হও।’ (মুসলিম: ১৮২৮)

আরও পড়ুন: যারা আল্লাহর ভয়ে কাঁদে, তাদের সম্পর্কে নবীজি যা বলেছেন

জামাতের প্রথম বা দ্বিতীয় কাতারে নামাজ আদায় 
যারা জামাতের প্রথম বা দ্বিতীয় কাতারে সালাত আদায় করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। ইরবাজ ইবনে সারিয়া (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (স.) প্রথম কাতারের মুসল্লিদের জন্য তিনবার এবং দ্বিতীয় কাতারের মুসল্লিদের জন্য একবার ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।’ (ইবনু মাজাহ: ৯৯৬)

তাহাজ্জুদ আদায়ে স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সহযোগিতা
তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য কোনো দম্পতি পরস্পরকে উৎসাহিত করলে সেই স্বামী-স্ত্রী রাসুলুল্লাহ (স.)-এর রহমতের দোয়া লাভের সৌভাগ্য অর্জন করতে পারে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘আল্লাহ ওই ব্যক্তির ওপর অনুগ্রহ করুন, যে রাত জেগে সালাত আদায় করে; অতঃপর সে তার স্ত্রীকে ঘুম থেকে জাগ্রত করে। আর যদি সে ঘুম থেকে উঠতে না চায়, তাহলে সে তার মুখে পানি ছিটিয়ে দেয় (নিদ্রাভঙ্গের জন্য)। আর আল্লাহ ওই নারীর ওপরও অনুগ্রহ করুন, যে রাতে উঠে সালাত আদায় করে এবং নিজের স্বামীকে জাগ্রত করে। যদি সে ঘুম থেকে উঠতে অস্বীকার করে, তখন সে তার মুখে পানি ছিটিয়ে দেয়।’ (আবু দাউদ: ১৩০৮; ইবনু মাজাহ: ১৩৩৬)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: উম্মতের জন্য নবীজির দুশ্চিন্তার ছয় কারণ

আজান দেওয়া ও ইমামতি করা
রাসুলুল্লাহ (স.) ইমামদের জন্য হেদায়াতের দোয়া করেছেন এবং মুয়াজ্জিনদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘ইমাম হচ্ছে জামিনদার এবং মুয়াজ্জিন আমানতদার। হে আল্লাহ, তুমি ইমামদের সৎপথে পরিচালিত করো এবং মুয়াজ্জিনদের ক্ষমা করো।’ (আবু দাউদ: ৫১৭; তিরমিজি: ২০৭)

সকালবেলাকে কাজে লাগানো
সকালবেলায় সম্পাদিত যাবতীয় কাজে বরকত নাজিল হয়। রাসুল (সা.) প্রভাতকালে বরকত নাজিলের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘হে আল্লাহ, আমার উম্মতের ভোরবেলার মধ্যে তাদের বরকত দান করুন।’ যখন রাসুলুল্লাহ (স.) কোথাও কোনো ক্ষুদ্র বা বিশাল বাহিনী প্রেরণের সিদ্ধান্ত নিতেন, তখন সকালবেলায়ই পাঠাতেন। (তিরমিজি: ১২১২)

হাদিস মুখস্থ ও প্রচার করা
রাসুলুল্লাহ (স.)-এর দোয়ালাভের আরেকটি উল্লেখযোগ্য উপায় হলো, হাদিস মুখস্থ করা এবং তা প্রচার করা। নবী কারিম (স.) বলেছেন, ‘আল্লাহ ওই ব্যক্তিকে মর্যাদামণ্ডিত করেন, যে আমার কথা শুনেছে, তা মুখস্থ করেছে, সংরক্ষণ করেছে এবং অন্যের কাছে তা পৌঁছে দিয়েছে। (তিরমিজি: ২৬৫৮)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রিয়নবী (স.)-এর দোয়ায় শামিল হওয়ার জন্য উল্লেখিত আমলগুলো করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর