সোমবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

সাহসীরা আল্লাহর প্রিয়

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৫:০৪ পিএম

শেয়ার করুন:

সাহসীরা আল্লাহর প্রিয়

সাহসিকতা ও বীরত্ব মুমিনের স্বভাবজাত ভূষণ। এখানে সাহস বলতে সৎসাহসই উদ্দেশ্য। আর সৎসাহস শুধু ইতিবাচক অর্থেই ব্যবহৃত হয়। ভালো কাজের প্রবল ইচ্ছা এবং পার্থিব পরিণতি উপেক্ষা করাই সৎসাহস। (তারিফাত, পৃষ্ঠা-৩২০)

ইসলামের দৃষ্টিতে সৎসাহস হলো- পরকালীন কল্যাণ লাভে মুমিনের অব্যাহত প্রচেষ্টা। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা মুমিন হয়ে পরকাল কামনা করে এবং তার জন্য যথাযথ চেষ্টা করে তাদের প্রচেষ্টা পুরস্কারযোগ্য।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ১৯)


বিজ্ঞাপন


মহান আল্লাহ শক্তিশালী ও দৃঢ় মানসিকতার মুমিনদের বেশি ভালোবাসেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (স.) বলেন, ‘শক্তিমান মুমিন দুর্বল মুমিনের তুলনায় উত্তম এবং আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়। অবশ্য উভয়ের মধ্যে কল্যাণ আছে। তোমাদের জন্য উপকারী প্রতিটি উত্তম কাজের প্রতি আগ্রহী হও এবং অলস বা গাফেল হয়ো না। কোনো কাজ তোমাকে পরাভূত করলে তুমি বলো, আল্লাহ নির্ধারণ করেছেন এবং নিজ মর্জিমাফিক করে রেখেছেন। ‘যদি’ শব্দ সম্পর্কে সাবধান থাকো। কেননা ‘যদি’ শয়তানের কর্মের পথ উন্মুক্ত করে।’ (ইবনে মাজাহ: ৪১৬৮)

ইসলামের শিক্ষা হলো- মুমিন আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করবে না। সবসময় ন্যায়ের পক্ষে থাকবে, সত্যের পথে দৃঢ় থাকবে। একসময় পুরো পৃথিবীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মুসলিম শাসকরা। সেদিনকার খ্যাতনামা বীরদের মেধা, রণকৌশল আধুনিক যুগের বীরযোদ্ধাদেরও বিস্মিত করে। তাঁরা নিন্দুকের নিন্দার ভয় করতেন না। যা করতেন আল্লাহর জন্যই করতেন। আল্লাহর পথে সত্যবাদিতা, অটল-অবিচল থাকাকেই নিজেদের জন্য আবশ্যক করে নিয়েছিলেন তাঁরা। উবাদাহ ইবনে সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘যেখানেই থাকি না কেন, সত্যের ওপর দৃঢ় থাকব কিংবা বলেছিলেন, সত্য কথা বলব এবং আল্লাহর কাজে কোনো নিন্দুকের নিন্দার ভয় করব না।’ (বুখারি: ৭২০০)

কৃপণতা, ভীরুতা, কাপুরুষতা ইসলামে পছন্দনীয় নয়। বরং এগুলো ঈমানকে ত্রুটিযুক্ত করে। মানুষকে সত্য থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। ভীরু, কাপুরুষ ও কৃপণ মানসিকতা দ্বারা সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়, জমিনে আল্লাহর একত্ববাদের দাওয়াত দেওয়াও সম্ভব নয়। এ কারণে মহানবী (স.) সর্বদা এই ত্রুটিগুলো থেকে মহান আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতেন।

মুসআব (রহ.) থেকে বর্ণিত, সাদ (রা.) পাঁচটি জিনিস থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করার নির্দেশ দিতেন এবং তিনি এগুলো মহানবী (স.) থেকে উল্লেখ করতেন। তিনি এগুলো থেকে আল্লাহর আশ্রয় চেয়ে এ  দোয়া পড়তে নির্দেশ দিতেন যে, ‘হে আল্লাহ! আমি কৃপণতা থেকে আপনার আশ্রয় চাইছি। আমি কাপুরুষতা থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি, আমি অবহেলিত বার্ধক্যে উপনীত হওয়া থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি, আর আমি দুনিয়ার ফেতনা অর্থাৎ দাজ্জালের ফেতনা থেকেও আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি এবং আমি কবরের আজাব থেকেও আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’ (বুখারি: ৬৩৬৫)


বিজ্ঞাপন


তাই আমাদের উচিত, অলসতা, দুর্বলতা ও ভীরুতার জাল ছিঁড়ে শক্তি-সামর্থ্য, সাহসিকতা ও বীরত্ব অর্জন করা। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সেই তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর