স্বামীর ওপর অভিমান করা স্ত্রীদের দোষ নয়, বরং এটি তাদের সৌন্দর্য এবং শরীয়তপ্রদত্ত অধিকার। নবীজির (স.) ওপর তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রীদের ভালোবাসা, মান-অভিমান নিয়ে সুন্দর সুন্দর হাদিস আছে। আম্মাজান আয়েশা (রা.)-এর অভিমান সম্পর্কিত এক হাদিসে এসেছে, প্রিয়নবী (স.) একবার হজরত আয়েশা (রা.)-কে লক্ষ করে বলেন, যখন তুমি আমার উপর অসন্তুষ্ট হও তখন তা আমি অনুভব করতে পারি।
আয়েশা (রা.) জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কোরবান হোক, আপনি কীভাবে অনুভব করতে পারেন যে, আমি আপনার ওপর রাগ করে আছি?
বিজ্ঞাপন
হুজুর (স.) বললেন, যখন তুমি আমার ওপর কোনো কারণে অসন্তুষ্ট থাকো, তখন কোনো বিষয়ে শপথ করার প্রয়োজন পড়লে বলো যে, ‘ইবরাহিমের প্রতিপালকের কসম’। অর্থাৎ তখন তুমি আমার নাম উচ্চারণ করো না। আর যখন আমার ওপর সন্তুষ্ট থাকো তখন বলো, ‘মুহাম্মদ (স.)- এর প্রতিপালকের কসম’।
এ কথা শুনে আম্মাজান আয়েশা (রা.) হেসে দিলেন এবং বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি একদম ঠিক কথা বলেছেন। হাদিসটি সহিহ বুখারির বর্ণনায় প্রসঙ্গটি এভাবে এসেছে—
আরও পড়ুন: নবীজির চরিত্র সম্পর্কে আয়েশা (রা.) যা বলেছেন
আয়েশা (রা.) বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (স.) আমাকে বলেন, ‘আমি তোমার রাগ ও অনুরাগ বুঝতে পারি।’ আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ‘আল্লাহর রাসুল! কিভাবে বুঝতে পারেন?’ তিনি বলেন, ‘তুমি যখন আমার ওপর সন্তুষ্ট থাকো, তখন বলে থাকো—‘বালা ওয়া রাব্বি মুহাম্মদ’ (মুহাম্মদের রবের কসম!...) আর অসন্তুষ্ট হলে বলে থাকো—‘লা ওয়া রাব্বি ইবরাহিম’ (ইবরাহিমের রবের কসম!...। )’ আমি বললাম, ‘আল্লাহর রাসুল! আপনি ঠিক বলেছেন। তবে আমি শুধু আপনার নামটিই ত্যাগ করি। (অন্তর আপনার ভালোবাসায় পূর্ণ থাকে।’) (বুখারি: ৫২২৮)
বিজ্ঞাপন
উল্লিখিত হাদিস থেকে এ কথা প্রমাণিত হলো যে, স্ত্রীদের কিছুটা রাগ-অভিমান করার অধিকার আছে। যদি তাদের এ অধিকার না থাকত, তাহলে নবী কারিম (স.) আয়েশা (রা.)-কে অবশ্যই বারণ করতেন। তাই স্ত্রী রাগ করলে বা মুখ ভার করে থাকলে তাকে কটু কথা কিংবা ধমক দেওয়া মুমিনের জন্য শোভনীয় নয়। বরং যেকোনো উপায়ে খুশি করার চেষ্টা করা উচিত।
এই হাদিস থেকে আরও বোঝা যায়, স্ত্রীর স্বাভাবিক মান-অভিমানকে সহজভাবে গ্রহণ করা উচিত। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সীরাত থেকে শিক্ষা নেওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

