ইসলামে মুকিম ও মুসাফিরের নামাজের বিধান ভিন্ন। মুসাফির চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ দুই রাকাতে আদায় করেন, যাকে কসর বলা হয়। এটি জরুরি বিধান। কিন্তু বাস্তবে অনেক সময় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় যখন একজন মুসাফির মুকিম ইমামের সঙ্গে জামাতে অংশ নেন, কিংবা জামাতে যোগ দিতে দেরি হয়ে কয়েক রাকাত ছুটে যায়। তখন প্রশ্ন জাগে- এ অবস্থায় মুসাফির কত রাকাত নামাজ পড়বেন? এ বিষয়ে ফুকাহায়ে কেরামের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা রয়েছে।
মুসাফির মুকিম ইমামের পেছনে নামাজ পড়লে বিধান কী
ফুকাহায়ে কেরামের মতে, মুসাফির ব্যক্তি যখন মুকিম ইমামের পেছনে চার রাকাতবিশিষ্ট নামাজের ইক্তেদা করেন, তখন তার জন্য চার রাকাত পূর্ণ আদায় করা জরুরি হয়ে যায়। অর্থাৎ ইমাম মুকিম হলে, বিধানটি ইমামের ওপর নির্ভর করে; ইমামের বিধান অনুসরণ করাই তার দায়িত্ব।
আবু মিজলাজ (রহ.) বলেন, ‘আমি আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, মুসাফির অবস্থায় যদি আমি মুকিমের পেছনে এক রাকাত পাই তাহলে করণীয় কী?’ ইবনে ওমর (রা.) উত্তরে বললেন- ‘মুকিমের মতো (পুরা) নামাজ পড়বে।’
অর্থাৎ এক রাকাতই পান, তবুও উঠে বাকি তিন রাকাত সম্পন্ন করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
এ থেকে জানা যায়, মুসাফির জামাতে যোগ দিয়ে যদি পূর্ণ চার রাকাতও পায়, তবে চার রাকাতই পড়বে। এক বা একাধিক রাকাত ছুটে গেলে, অর্থাৎ মাসবুক হলে উঠে বাকি রাকাতগুলো মুকিমের মতো পূর্ণ চার রাকাত সম্পন্ন করতে হবে।
উল্লেখ্য, মাসবুক বলা হয় তাকে, যার এক বা একাধিক রাকাত ইমামের সাথে ছুটে গেছে।
অতএব, মুসাফির নিজে একা নামাজ পড়লে কসর করা জরুরি; অর্থাৎ চার রাকাত ফরজ দুই রাকাতে আদায় করবে। কিন্তু মুকিম ইমামের পেছনে ইক্তেদা করলে কসর করার অধিকার থাকে না; বরং ইমামের অবস্থার ওপর নির্ভর করে নামাজ পূর্ণ পড়তে হয়। তাই জামাতে শরিক হলে মুসাফিরের জন্য চার রাকাত পূর্ণ করা জরুরি, এমনকি মাসবুক হলেও। ইসলামি ফিকহের নির্ভরযোগ্য সূত্রসমূহে এই বিধানই বর্ণিত হয়েছে।
(মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ৪৩৮১; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ৩৮৭৫; কিতাবুল আছল: ১/২৫৬; বাদায়েউস সানায়ি: ১/২৭৬)

