পবিত্র কোরআনে জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তির বিবরণ প্রসঙ্গে একটি অভিশপ্ত বৃক্ষের কথা বর্ণনা করা হয়েছে, যার নাম 'জাক্কুম'। এই বৃক্ষ জাহান্নামবাসীদের জন্য আল্লাহর বিশেষ শাস্তির ব্যবস্থা, যা সীমালঙ্ঘনকারীদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, আপ্যায়নের জন্য কি এটিই উত্তম, না জাক্কুম বৃক্ষ? সীমা লঙ্ঘনকারীদের জন্য আমি এ সৃষ্টি করেছি পরীক্ষাস্বরূপ; এ বৃক্ষ জাহান্নামের তলদেশ থেকে উদগত, এর গুচ্ছ শয়তানের মাথার মতো। সীমা লঙ্ঘনকারীরা তা ভক্ষণ করবে এবং তা দিয়ে উদর পূর্ণ করবে। তার ওপর অবশ্যই তাদের জন্য ফুটন্ত পানির মিশ্রণ থাকবে, তারপর অবশ্যই ওদের প্রত্যাবর্তন হবে জাহান্নামের দিকে।’ (সুরা সাফফাত: ৬২-৬৮)
বিজ্ঞাপন
তাফসিরবিদদের ব্যাখ্যানুযায়ী, জাক্কুম বৃক্ষের ফল অত্যন্ত দুর্গন্ধময়, তেতো ও ঘৃণ্য। এ প্রসঙ্গে তাফসিরবিদদের মধ্যে দুটি মত পাওয়া যায়:
কারও মতে, এটি পৃথিবীর একটি পরিচিত গাছ, যা তিহামা অঞ্চলে পাওয়া যায়
অন্যদের মতে, এটি পৃথিবীর কোনো সাধারণ গাছ নয়, বরং মানুষের কাছে অপরিচিত এক বিশেষ বৃক্ষ (ফাতহুল কাদির)
আরও পড়ুন: জান্নাতের ৬ আকর্ষণীয় নেয়ামত
বিজ্ঞাপন
সাঈদ ইবনে জুবাইর (রহ.) বর্ণনা করেন, ‘জাহান্নামিরা ক্ষুধার্ত অবস্থায় খাদ্য চাইলে তাদের জাক্কুম খাওয়ানো হবে, ফলে তাদের মুখের চামড়া সম্পূর্ণ খসে পড়বে। পরিচিত ব্যক্তিরা সেই মুখের চামড়া দেখেই তাদের চিনতে পারবে। অতঃপর পিপাসার্ত অবস্থায় তারা পানি চাইলে তাদের ফুটন্ত গরম তেল পান করতে দেওয়া হবে, যা মুখমণ্ডলের মাংস ঝলসে দেবে এবং পেটে গেলে নাড়িভুঁড়ি গলে যাবে।’ (তাফসিরে ইবনে কাসির: ১৬/২২২)
ভয়াবহতার চিত্র
রাসুল (স.) জাক্কুমের ভয়াবহতা সম্পর্কে সতর্ক করে বলেন, ‘ওই জাক্কুমের সামান্য পরিমাণ যদি জাহান্নাম থেকে পৃথিবীতে আসে তবে পৃথিবীর খাদ্য ও পানীয় তার বিষাক্ততায় বিনষ্ট হয়ে যাবে।’ (তিরমিজি: ২৫৮৫)
জাক্কুম বৃক্ষের এই বর্ণনা মুমিনদের জন্য একটি গভীর শিক্ষণীয় বিষয়। আমাদের উচিত জাহান্নামের এই ভয়াবহ শাস্তি থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাওয়া এবং যেকোনো ধরনের গুনাহ ও সীমালঙ্ঘনমূলক কাজ থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকা। মহান আল্লাহ আমাদের জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন এবং তাঁর নেয়ামতপূর্ণ জান্নাত দান করুন। আমিন।

