রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

মসজিদে নববী: নবীজির হাতে গড়া ইসলামি সমাজের কেন্দ্র

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৬ পিএম

শেয়ার করুন:

মসজিদে নববী: নবীজির হাতে গড়া ইসলামি সমাজের কেন্দ্র
প্রতীকী ছবি

মহানবী (স.) মদিনায় হিজরতের পর প্রথম গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ ছিল মসজিদে নববী নির্মাণ। তিনি আল্লাহর ইঙ্গিতে সেই স্থান বেছে নেন, যেখানে উটনি বসে পড়েছিল।

নির্মাণের ইতিহাস

জায়গাটি ছিল দুই এতিম বালক, সাহল ও সুহাইলের মালিকানায়, যারা নবীজি (স.)-এর মাতৃকূলের আত্মীয়। তারা জমি দান করতে চাইলেও নবীজি (স.) উপযুক্ত মূল্য পরিশোধ করে গ্রহণ করেন। আবু বকর (রা.) ১০ দিনার প্রদান করেন। মসজিদ নির্মাণের আগে স্থানটি থেকে খেজুরগাছ কেটে নেওয়া ও মুশরিকদের কবর স্থানান্তর করা হয়। (সিরাতে মোস্তফা: ১/৪০৯)

নির্মাণশৈলী ও নবীজির অংশগ্রহণ

মসজিদটি নির্মিত হয় কাঁচা ইট, পাথর, কাদা-মাটি, খেজুরগাছের ডাল ও পাতা দিয়ে। দৈর্ঘ্য ছিল ১০০ হাত এবং প্রস্থ কিছুটা কম। দরজা তিনটি ছিল। নবীজি (স.) নিজে নির্মাণকাজে অংশ নেন এবং ইট ও পাথর বহনকালে দোয়া করতেন- ‘হে আল্লাহ! আখেরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন। আপনি আনসার ও মুহাজিরদের ক্ষমা করুন।’ (আর-রাহিকুল মাখতুম: পৃ. ১৯৩)

হুজরা

মসজিদের পাশে নবীজি (স.) নিজের ও স্ত্রীদের জন্য ছোট কাঁচা ঘর (হুজরা) তৈরি করেন। ছাদটি এতই নিচু ছিল যে দাঁড়িয়ে হাত দিয়েই স্পর্শ করা যেত। এই ঘর নবীজি (স.)-এর উচ্চ বিনয় ও দুনিয়াবিমুখতার প্রতীক। তিনি স্থায়ীভাবে এখানে আবু আইয়ুব আনসারি (রা.)-এর বাড়ি থেকে চলে আসেন। (আস-সিরাতুন নববিয়্যাহ, পৃ. ৩০১)

মসজিদের বহুমাত্রিক ভূমিকা

মসজিদে নববী কেবল নামাজের স্থান ছিল না; এটি ছিল সম্পূর্ণ ইসলামি সমাজের কেন্দ্র। যেমন-

  • ইসলামি শিক্ষা ও হেদায়াতের কেন্দ্র
  • রাষ্ট্র প্রশাসন ও শাসনের কেন্দ্র
  • সামরিক পরিকল্পনা ও অভিযান পরিচালনার কেন্দ্র
  • শুরা ও পরামর্শ সভার স্থান
  • সামাজিক সম্প্রীতি ও ঐক্যের প্রতীক

আল্লামা সফিউর রহমান মোবারকপুরী উল্লেখ করেছেন, ‘এই মসজিদ এমন একটি কেন্দ্র, যেখান থেকে নবগঠিত রাষ্ট্রের সকল কার্যক্রম পরিচালিত হতো। এটি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে গোত্রীয় দ্বন্দ্বে জর্জরিত মানুষ পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যে বসবাস করত।’ (আর-রাহিকুল মাখতুম, পৃ. ১৯৪)

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর