ইসলামে জেনা বা ব্যভিচার হারাম। ব্যভিচার থেকে বেঁচে থাকা মুমিনের গুণ। মুমিনের যেসব বৈশিষ্ট্য আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনের সুরা মুমিনুনে তুলে ধরেছেন তার একটি হলো- লজ্জাস্থানের হেফাজত তথা চারিত্রিক পবিত্রতা। ইসলাম ব্যভিচারের ধারেকাছে যেতেও নিষেধ করে।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘এবং ব্যভিচারের কাছেও যেও না। নিশ্চয়ই তা অশ্লীলতা ও বিপথগামিতা।’ (বনি ইসরাইল: ৩২) এজন্য ইসলাম মুসলিম নারী-পুরুষকে পর্দার বিধান দিয়েছে। দৃষ্টি হেফাজত করাও পর্দার অন্তর্ভুক্ত। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিন পুরুষদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। এটাই তাদের জন্য শুদ্ধতর। তারা যা কিছু করে আল্লাহ সে সম্পর্কে পরিপূর্ণ অবগত।’ (সুরা নুর: ৩০)
বিজ্ঞাপন
হাদিস শরিফে ব্যভিচারের ছয়টি ক্ষতি বা শাস্তির কথা বর্ণিত হয়েছে, যার তিনটি দুনিয়াতে এবং বাকি তিনটি পরকালের জন্য নির্ধারিত। হজরত হুজায়ফাতুন ইয়ামান (রা.)-এর সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘হে মুসলমানগণ, তোমরা ব্যভিচার থেকে বেঁচে থাকো, নিশ্চয়ই ব্যভিচারের ছয়টি ক্ষতি রয়েছে। তিনটি দুনিয়ায়, আর তিনটি পরকালে প্রকাশ পাবে। দুনিয়ায় যে তিনটি প্রকাশ পাবে, তা হলো ১. চেহারার উজ্জ্বলতা চলে যাবে, ২. রিজিকে সংকীর্ণতা দেখা দেবে এবং ৩. আয়ু কমে যাবে।
পরকালে যে তিনটি প্রকাশ পাবে, তা হলো ১. কেয়ামত দিবসে আল্লাহ তাআলা তার প্রতি ক্রোধান্বিত হবেন, ২. হিসাবে কড়াকড়ি করবেন এবং ৩. দীর্ঘকাল জাহান্নামে থাকতে হবে।’ (কানজুল উম্মাল: ৫/৪৬৪)
আরও পড়ুন: রোজার দিনে স্বামী-স্ত্রীকে যে নিয়ম কানুন মানতে হয়
উক্ত বর্ণনানুযায়ী, জেনাকারীদের চেহারার উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যায়, রিজিকের বরকত থাকে না এবং আয়ু কমে যায়। পরকালে তো কঠিন শাস্তি রয়েছেই। তাই, মুমিনদের অবশ্যই জেনা ব্যভিচার থেকে দূরে থাকা মুমিনের কর্তব্য।
বিজ্ঞাপন
পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে ব্যভিচারের কঠিন শাস্তির কথা বলা হয়েছে। এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘কেয়ামতের দিন তার আজাব বর্ধিত করা হবে এবং সেখানে সে অপমানিত অবস্থায় স্থায়ী হবে।। তবে কেউ তওবা করলে, ঈমান আনলে এবং সৎকর্ম করলে আল্লাহ এমন লোকজনের পাপরাশিকে পুণ্য দিয়ে বদলে দেবেন। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা ফুরকান: ৬৯-৭০)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জেনা-ব্যভিচার থেকে দূরে থাকার তাওফিক দান করুন। কেউ ইতিমধ্যে এই পাপে জড়িয়ে পড়লে অবিলম্বে তাওবা করার মাধ্যমে পবিত্র জীবন শুরু করার তাওফিক দান করুন। আমিন।