শনিবার, ২২ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

মানুষকে ইফতার করালে যে সওয়াব

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ মার্চ ২০২৫, ০৪:০৬ পিএম

শেয়ার করুন:

মানুষকে ইফতার করালে যে সওয়াব

পবিত্র রমজানে অত্যধিক সওয়াব লাভের একটি আমল হলো রোজাদারকে ইফতার করানো। হাদিসের ভাষ্যমতে, এতে পরিপূর্ণ রোজার সওয়াব লাভ হয়। জায়েদ ইবনে খালেদ আল-জুহানি (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে রোজাদারের সমপরিমাণ সওয়াব পাবে; রোজাদারের সওয়াব থেকে একটুও কমানো হবে না।’ (তিরমিজি: ৮০৭; ইবনে মাজাহ: ১৭৪৬; ইবনে হিব্বান: ৮/২১৬; সহিহ আল-জামে: ৬৪১৫)

সলফে সালেহিন এই আমলকে খুব গুরুত্ব দিতেন। এমনকি নিজের ইফতার অন্যকে খাওয়াতেন। আবু সাওয়ার আল-আদাওয়ি বলেন, বনি আদি গোত্রের লোকেরা এই মসজিদে নামাজ পড়ত। তাদের কেউ কখনো একাকী ইফতার করেননি। যদি ইফতার করার জন্য কাউকে পাওয়া যেত, তাকে নিয়ে ইফতার করত। আর যদি কাউকে না পেত, তাহলে নিজের খাবার মসজিদে এনে মানুষের সঙ্গে খেত এবং মানুষকেও খেতে দিত। (আব্দুল্লাহ আস-সালেহ-১৫পৃ.)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: খেজুর খেয়ে কেন ইফতার করা হয়?

এক্ষেত্রে দরিদ্র রোজাদারদের প্রধান্য দেওয়া উত্তম। এই কাজের প্রতিদান হিসেবে জান্নাতের গ্যারান্টি রয়েছে। রমজান ছাড়া অন্য মাসেও যারা শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মানুষকে খাওয়ানো ও দান-সদকায় অভ্যস্থ তাদের জান্নাতের সুসংবাদ দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা বলে, ‘আমরা তো আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তোমাদের খাদ্য দান করি। আমরা তোমাদের থেকে কোনো প্রতিদান চাই না এবং কোনো শোকরও না। আমরা আমাদের রবের পক্ষ থেকে এক ভয়ঙ্কর ভীতিপ্রদ দিবসের ভয় করি। সুতরাং সেই দিবসের অকল্যাণ থেকে আল্লাহ তাদের রক্ষা করলেন এবং তাদের প্রদান করলেন উজ্জ্বলতা ও উৎফুল্লতা।’ (সুরা দাহর: ৮-১১)

মানুষকে খাওয়ানো অনেকগুলো ইবাদতের সমষ্টি। এখানে এক মুসলিমের প্রতি অন্য মুসলিমের হৃদ্যতা ও ভালবাসার বিষয় রয়েছে, দান সদকার সওয়াব রয়েছে, এতে বিদ্বেষ দূর হয়ে যায়, স্বজনদের খাওয়ালে আত্মীয়তার বন্ধন শক্ত হয়। অর্থাৎ এই এক আমলই অনেকগুলো জান্নাতি আমলের সমষ্টি। মাহে রমজানের মতো মহিমান্বিত মাসে স্বাভাবিকভাবেই এর গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। ফলে তা জান্নাতে যাওয়ার মাধ্যম হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ। এজন্যই ইসলামে মানুষকে খাবার দেওয়ার চেয়ে উত্তম কাজ নেই। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘এক ব্যক্তি রাসুল (স.)-কে প্রশ্ন করেন, ইসলামে কোন কাজটি শ্রেষ্ঠ? মহানবী (স.) বলেন, ‘ইসলামে সবচেয়ে ভালো কাজ হচ্ছে ক্ষুধার্তকে খাবার খাওয়ানো।’ (বুখারি: ১২; মুসলিম: ৩৯)

আরও পড়ুন: নবীজি সাহরিতে কী খেতেন


বিজ্ঞাপন


মাহে রমজানে সৌভাগ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য ফরজ ইবাদতগুলোর পাশাপাশি নফল ইবাদতকে গুরুত্ব দেওয়া বাঞ্ছনীয়। আর নফল আমলের মধ্যে মানুষকে ইফতার করানো সর্বাধিক ফজিলতের কাজ। এই কাজ মূলত সৌভাগ্যবানদের। আল্লাহ তাআলা সৌভাগ্যবানদের গুণাবলী বর্ণনা করতে গিয়ে ইরশাদ করেন, ‘অথবা খাদ্য দান করা দুর্ভিক্ষের দিনে। এতিম আত্মীয়-স্বজনকে। অথবা ধূলি-মলিন মিসকিনকে। অতঃপর সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়, যারা ঈমান এনেছে এবং পরস্পরকে উপদেশ দেয় ধৈর্যধারণের, আর পরস্পরকে উপদেশ দেয় দয়া-অনুগ্রহের। তারাই সৌভাগ্যবান।’ (সুরা বালাদ: ১৪-১৮)

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর