সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

রমজানের আগে মারা গেলেও রোজার সওয়াব পাবেন যারা 

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:২১ পিএম

শেয়ার করুন:

রমজানের আগে মারা গেলেও রোজার সওয়াব পাবেন যারা 

পবিত্র রমজানের অল্প ক’দিন বাকি। ইতিমধ্যে রমজানের প্রস্তুতি শুরু করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা। আল্লাহর অনেক বান্দা বুকভরা আশা নিয়ে আছেন, যেন রমজানের রোজা রাখার তাওফিক লাভ হয়। কিন্তু হায়াত মওতের মালিক আল্লাহ তাআলা। রমজান শুরুর আগেই যে কারো মৃত্যু হতে পারে। তারা কি রমজানের রোজার সওয়াব পাবেন?

এর জবাব হলো- অবশ্যই রমজানের রোজা রাখার আশা যারা করেছিলেন, তারা রোজা রাখার সুযোগ না পেলেও ২৯ বা ৩০ রোজার সওয়াব লাভ করবেন।


বিজ্ঞাপন


কারণ, কেউ কোনো ভালো কাজের নিয়ত করলে সেটি করতে না পারলেও শুধু নিয়তের কারণে এর সওয়াব আমলনামায় লেখা হয়। আংশিক নয়, পূর্ণ সওয়াব লেখা হয়। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো ভালো কাজের আশা করল, অতঃপর তা করতে পারল না, তবুও তার জন্য পূর্ণ সওয়াব লেখা হবে।’ (বুখারি: ৬৪৯১)

আরও পড়ুন: রমজানে কবর আজাব কি মাফ থাকে?

এই হাদিস প্রমাণ করছে, যদি আপনি ৩০টি রোজা রাখার আশা রাখেন, কিন্তু তার আগেই আপনার মৃত্যু হয়, তবুও আপনি ৩০টি রোজার সওয়াব পাবেন। সুবহানাল্লাহ! আর যদি আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখেন এবং রোজা রাখার তাওফিক লাভ হয়, তাহলে আপনার জন্য প্রতিটি রোজার সওয়াব ১০ গুণ থেকে (আন্তরিকতা অনুপাতে) ৭০০ গুণ পর্যন্ত নেকি লিপিবদ্ধ করা হবে। এছাড়াও রোজার বড় প্রতিদান স্বয়ং আল্লাহ তাআলাই দেবেন। আল্লাহ তাআলা বলেছেন- রোজার ব্যাপারটি ভিন্ন। কারণ রোজা আমার জন্য। সুতরাং এর প্রতিদান আমি নিজেই প্রদান করব। (দ্র: সহিহ মুসলিম: ১১৫১/১৬৪; সহিহ বুখারি: ১৮৯৪)

আসুন আমরা নবীজির শেখানো এই দোয়া পড়ি— اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي رَجَبٍ، وَشَعْبَانَ، وَبَلِّغْنَا رَمَضَانَ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবান ওয়াবাল্লিগনা রমাদান।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমাদের জন্যে রজব ও শাবান মাসকে বরকতময় করুন এবং রমজান মাস পর্যন্ত আমাদের হায়াত বৃদ্ধি করুন।’ (নাসায়ি: ৬৫৯; মুসনাদে আহমদ: ২৩৪৬, আলমুজামুল আওসাত: ৩৯৩৯)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: পিরিয়ডের দিনগুলোতে নারীরা কি রোজার সওয়াব পান?

অতএব, রমজানের রোজা রাখার আশা থাকলে, নিশ্চয় তা হবে অনেক বড় একটি আমল। আসলে আল্লাহ তাআলা বান্দাকে সওয়াব দিতে কার্পণ্য করেন না। শুধু ভালো কোনো নিয়তের কারণেই আল্লাহ তাআলা বান্দাকে পূর্ণ আমলের সওয়াব দিয়ে থাকেন। এর আরও অসংখ্য দলিল রয়েছে। এক হাদিসে নবীজি (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি শয়নকালে রাতের বেলায় তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার নিয়ত করে শুয়েছে, কিন্তু অতিরিক্ত ঘুমের চাপে ভোর হয়ে গেছে সে তার নিয়ত অনুযায়ী সওয়াব পাবে। তার ঘুমই আল্লাহর পক্ষ থেকে ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে।’ (নাসায়ি: ৩/২৫৮)

আরেকটি হাদিসে এসেছে, নবী (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সততার সঙ্গে (আল্লাহর পথে) শহীদ হওয়ার কামনা করবে, আল্লাহ তাকে শাহাদাতের মর্যাদা দেবেন, যদিও সে বিছানায় মৃত্যুবরণ করে।’ (মুসলিম: ৪৮২৪)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে রমজান পর্যন্ত হায়াত বৃদ্ধি করুন। রমজানের সবগুলো রোজা রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর