শয়তান সবসময় শয়তানিতে ব্যস্ত। ফাঁদ, ষড়যন্ত্র ও কুমন্ত্রণার মাধ্যমে মানবজাতীকে সত্যপথ থেকে সরিয়ে দেওয়াই তার লক্ষ্য। নতুন নতুন ফাঁদে আল্লাহর বান্দাদের আটকানোর চেষ্টা করে সে। এ কাজে শয়তান সফল হবে বলে চ্যালেঞ্জও করেছিল আল্লাহর সঙ্গে। মুমিনের উচিত সবসময় শয়তান থেকে সতর্ক থাকা এবং তাকে যতটা সম্ভব দূরে সরিয়ে দেওয়া।
শয়তান থেকে নিরাপদে থাকার বিভিন্ন আমল ও দোয়ার উল্লেখ রয়েছে হাদিসে। একটি আওয়াজ বা ধ্বনির ব্যাপারে বলা হয়েছে, ওই ধ্বনি উচ্চারিত হলেই শয়তানের ভোঁদৌড় শুরু হয়। যতক্ষণ ধ্বনি উচ্চারিত হয়, ততক্ষণ সে বায়ু ছাড়তে ছাড়তে পালায়। সেই ধ্বনিটা কী? সেটি হলো তাকবির ধ্বনি তথা ‘আল্লাহু আকবর’। এর অর্থ হলো আল্লাহ মহান। এই ধ্বনি মোটেও সহ্য করতে পারে না শয়তান। এজন্যই আজানের সময় শয়তান পালিয়ে যায়। আজান শেষ হলে আবার ফিরে আসে।
বিজ্ঞাপন
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, শয়তান পিছন ঘুরে বায়ু ছাড়তে ছাড়তে পালিয়ে যায় যেন আজানের শব্দ সে শুনতে না পায়। আজান শেষ হলে সে পুনরায় ফিরে আসে। আবার যখন ইকামত দেওয়া হয় তখন সে পলায়ন করে। ইকামাত শেষ হলে সে পুনরায় ফিরে আসে এবং নামাজ আদায়কারীদের মনে সন্দেহ-সংশয় সৃষ্টি করতে থাকে। সে তাকে বলে, এটা স্মরণ কর, এটা স্মরণ কর। সে কথাগুলো নামাজের আগে তার স্মরণও ছিল না। শেষ পর্যন্ত আদায় আদায়কারী দ্বিধায় পড়ে যে, সে বলতেও পারে না যে, কত রাকাত পড়ল। (সহিহ মুসলিম: ৭৪৩)
আরও পড়ুন: স্বামী-স্ত্রীর যে বিষয় শয়তানকে বেশি আনন্দ দেয়
শয়তান থামবে না। কেয়ামত পর্যন্ত তাকে এই কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। অবশ্য আল্লাহর প্রকৃত বান্দারা তার ফাঁদে পা দেন না। ফলে তারা শয়তান থেকে নিরাপদ ও মুক্ত থাকেন। শয়তানের সঙ্গী তারাই হয়, যারা আল্লাহু আকবর ধ্বনি সহ্য করতে পারে না। যারা আল্লাহর পথের পথিকদের বিভিন্ন ট্যাগ দিয়ে খাটো করার চেষ্টা করে। যারা ন্যাবিচারের পরিবর্তে অবিচারকেই পছন্দ করে। যাদের জন্য অপেক্ষা করছে খুব খারাপ পরিণতি। পবিত্র কোরআনে সে কথা স্পষ্টভাবে ঘোষিত হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যাও, তাদের মধ্যে যে কেউ তোমার অনুগামী হবে, জাহান্নামই হবে তোমাদের সকলের শাস্তি, পরিপূর্ণ শাস্তি। তাদের মধ্যে যার উপর তোমার ক্ষমতা চলে নিজ আহ্বানের দ্বারা বিভ্রান্ত কর, তোমার অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনী দ্বারা তাদের উপর চড়াও হও, তাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে অংশীদার হয়ে যাও এবং তাদেরকে যত পার প্রতিশ্রুতি দাও। বস্তুত শয়তান তাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয় তা ধোঁকা ছাড়া কিছুই নয়। নিশ্চয়ই আমার যারা বান্দা, তাদের উপর তোমার কোনো ক্ষমতা চলবে না...। (সুরা ইসরা: ৬৫)

