বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রী সরাসরি সাক্ষাৎ করার আগে একে অপরের ছবি দেখার প্রচলন রয়েছে আমাদের সমাজে। এই তথ্য প্রবাহের যুগে সহজেই একে অপরের কাছে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, মেসেঞ্জার বা বিভিন্ন চ্যাট মাধ্যমে শেয়ার করে থাকেন।
বিয়ের উদ্দেশ্যে পাত্র-পাত্রীর সরাসরি দেখা হওয়া মোস্তাহাব হলেও ছবি দেখার ক্ষেত্রে কিছু শর্ত প্রযোজ্য। এ বিষয়ে আলেমরা বলেন, শরিয়তের দৃষ্টিতে ছবি দেখার বিষয়টি কিছু শর্তসাপেক্ষে জায়েজ। যেমন- ছবি শালীন হতে হবে। ছবি অন্যকোনো গায়রে মাহরাম ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করা যাবে না এবং প্রস্তাবদাতা ছবি নিজের কাছে স্থায়ীভাবে রাখবে না। এসব শর্ত মেনে পাত্র-পাত্রী একে অপরের ছবি দেখতে পারবে।
বিজ্ঞাপন
মনে রাখতে হবে, বিয়ের উদ্দেশ্যে কনেকে সরাসরি দেখার কথা রয়েছে হাদিসে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (স.)-কে বললেন, আমি আনসারদের এক মেয়েকে বিয়ে করতে চাই। তিনি বললেন, তুমি তাকে প্রথমে দেখে নাও। কারণ আনসার মহিলাদের চোখে দোষ থাকে। (মুসলিম: ১৪২৪, মিশকাত: ৩০৯৮ ‘বিবাহ’ অধ্যায়)
আরও পড়ুন: পাত্রী দেখার ইসলামি পদ্ধতি কেমন
আরেক হাদিসে নবীজি বলেন, যখন তোমাদের কেউ কাউকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়, সম্ভব হলে সে যেন পাত্রীকে দেখে নেয়। যা বিয়ের জন্য সহায়ক হবে (আবু দাউদ: ২০৮২; মিশকাত: ৩১০৬; ৯৯) অন্য বর্ণনায় রয়েছে, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, পাত্রী দেখার মাধ্যমে পরস্পরের ভেতর মহববত সৃষ্টি হয়। (ইবনু মাজাহ: ১৮৬৫; মিশকাত: ৩১০৭;৯৬)
হাদিসের আলোকে বলা যায়, বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীর সরাসরি দেখা হওয়াই সুন্নত পদ্ধতি। তবে শরয়ি শর্ত মেনে পাত্র-পাত্রী একে অপরের ছবি দেখতে পারবে। যা উপরে আলোচনা করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: পাত্রের যেসব গুণ দেখে বিয়ে করতে বলেছেন নবীজি
পাত্রী দেখার নিয়ম হলো- পাত্রীর শুধু কবজি পর্যন্ত হাত, টাখনু পর্যন্ত পা ও মুখমণ্ডল দেখা পাত্রের জন্য বৈধ। নির্জনে পাত্র-পাত্রীর একত্র হওয়া বৈধ নয়। পাত্র-পাত্রী একে অন্যের সঙ্গে কথা বলতে পারবে; স্পর্শ করা জায়েজ নেই। পাত্রপক্ষের কোনো পুরুষ, যেমন—বাপ-ভাই, বন্ধুবান্ধব প্রমুখ কেউ থাকতে পারবে না। তাদের পাত্রী দেখা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ও কবিরা গুনাহ। তবে পাত্রের বাড়ির মহিলারা পাত্রীকে দেখতে পারবে। (আল-মাওসুআতুল ফিকহিয়্যাহ: ২২/১৭)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রত্যেক বিষয়ে শরিয়তের বিধি-বিধান যথাযথ পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।