অশ্লীলতা মানুষের দুনিয়া ও আখেরাত ধ্বংস করে। মহান আল্লাহ বান্দাদের ওপর গোপনীয়-প্রকাশ্য সবরকম অশ্লীলতা নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন। (সুরা আরাফ: ৩৩) অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেও না, নিশ্চয়ই তা অশ্লীল ও মন্দ পথ।’ (সুরা বনি ইসরাঈল: ৩২)
অশ্লীলতায় লিপ্ত হলে বা প্রসার করলে এর শাস্তি দুনিয়া থেকেই শুরু হয়। কোরআন-হাদিসের বিভিন্ন বর্ণনা থেকে জানা যায়, কোনো সমাজে অশ্লীলতার প্রসার হলে সেখানে নতুন নতুন রোগব্যাধি দেখা দেয়। মহামারি আকারে প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তাছাড়া এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা আগেকার লোকদের মধ্যে দেখা যায়নি। আর কোনো অঞ্চলের শাসক যখন আল্লাহর কিতাব মোতাবেক মীমাংসা করে না এবং আল্লাহর নাজিলকৃত বিধানকে গ্রহণ করে না, তখন সেখানে আল্লাহ বিভিন্ন আজাব দিয়ে থাকেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে, তাদের জন্য আছে দুনিয়া ও আখেরাতে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আর আল্লাহ জানেন, তোমরা জানো না।’ (সুরা নুর: ১৯)
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: নতুন বছরে সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য যে দোয়া করবেন
অশ্লীলতার প্রসার কেয়ামতের অন্যতম আলামত। হাদিস শরিফে এসেছে, নিশ্চয়ই এসব কেয়ামতের আলামত যে একসময় কৃপণতা ও অশ্লীলতা প্রকাশ পাবে। খেয়ানতকারীকে আমানতদার মনে করা হবে। আমানতদারকে খেয়ানতকারী মনে করা হবে। নারীদের নতুন নতুন পোশাকের উদ্ভব ঘটবে, যেগুলো পরিধান করে নারীরা বস্ত্রাবৃত হয়েও নগ্ন থাকবে। নিকৃষ্ট লোকেরা অভিজাত লোকদের ওপর প্রভাব বিস্তার করবে। (তাবরানি আওসাত: ৭৪৮৯)
অন্য হাদিসে নবী করিম (স.) ইরশাদ করেছেন, জাহান্নামিদের মধ্যে দুটি দলকে আমি দেখিনি। (কেয়ামতের আগে তাদের আবির্ভাব ঘটবে) এক দলের কাছে গরুর লেজের মতো চাবুক থাকবে, সেগুলো দিয়ে তারা মানুষকে প্রহার করতে থাকবে। আরেক দল হলো, এমন সব নারী, যারা কাপড় পরিহিত হবে অথচ তারা প্রকৃত অর্থে নগ্ন থাকবে। তারা পুরুষের মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাইবে, নিজেরাও পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হবে। তাদের চুলের খোঁপা উটের চুট ও কুঁজের মতো একদিকে হেলে থাকবে। তারা জান্নাতে যাবে না; জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। অথচ জান্নাতের ঘ্রাণ বহুদূর থেকে পাওয়া যাবে। (মুসলিম: ৪/২১৯২)
বিজ্ঞাপন
কাপড় পরেও নগ্ন থাকার একটি ব্যাখ্যা হলো- তারা এতই পাতলা কাপড় পরিধান করবে যে দেহের অভ্যন্তরীণ অংশ দেখা যাবে। ফলে কাপড় পরিহিতা হয়েও তারা নগ্ন থাকবে। (শরহে নববি: ১৭/১৯০-১৯১; মেরকাত: ৬/২৩০২)
নফসের খাহেশাত ও শয়তানের প্ররোচনা থেকে মানুষ অশ্লীলতার দিকে ঝুঁকে পড়ে। আল্লাহ তাআলা মুমিনদের শয়তানের ধোঁকায় না পড়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, হে মুমিনগণ! তোমরা শয়তানের অনুগামী হয়ো না। কেউ শয়তানের অনুগামী হলে শয়তান তো সর্বদা অশ্লীল ও অন্যায় কাজেরই নির্দেশ দেবে। তোমাদের প্রতি আল্লাহর ফজল ও রহমত না হলে তোমাদের মধ্যে কেউ কখনও পাক-পবিত্র হতে পারত না। কিন্তু আল্লাহ যাকে চান পবিত্র করে দেন এবং আল্লাহ সকল কথা শোনেন ও সকল বিষয় জানেন। (সুরা নুর: ২১)
মহান আল্লাহ আমাদের অশ্লীলতা ও শয়তানের প্ররোচনা থেকে হেফাজত করুন। আমিন।

