বুধবার, ২ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

সকাল- বিকেল ১০ বার দরুদ পড়লে যা পাবেন

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৮ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

প্রিয়নবীজির ওপর দরুদ এক মহান ইবাদত। এতে একইসঙ্গে নেকি লাভ হয় আবার গুনাহও মাফ হয়। হজরত আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে আমার ওপর একবার দরুদ পড়বে আল্লাহ তার ওপর ১০টি রহমত নাজিল করবেন, তার ১০টি গুনাহ ক্ষমা করা হবে এবং ১০টি দরজা বুলন্দ হবে।’ (নাসায়ি: ১/১৪৫; মুসনাদে আহমদ: ৩/১০২; মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ২/৪৩)

আবার কেয়ামতের দিন নবীজির শাফায়াতলাভের অনন্য মাধ্যম দরুদ। সকাল-বিকাল দরুদ ১০ বার করে দরুদ পড়লে নবীজির শাফায়াত অবধারিত। নবী (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল বেলা আমার ওপর দশবার দরুদ পাঠ করবে এবং বিকেল বেলা দশবার দরুদ পাঠ করবে, কেয়ামতের দিন সে আমার সুপারিশ দ্বারা সৌভাগ্যবান হবে।’ ইমাম তাবরানি হাদিসটি দুইটি সনদে সংকলন করেছেন, যার একটি সনদ হাসান। (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ১০/১২০, সহিহুত তারগিব ওয়াত তারহি: ১/২৭৩)


বিজ্ঞাপন


আরেক হাদিসে এসেছে, দরুদের পর একটি দোয়া পাঠ করলে অবশ্যই প্রিয়নবীজির শাফায়াত লাভ হবে। দোয়াটি হলো- اَللّهُمَّ أَنْزِلْهُ الْمَقْعَدَ الْمُقَرَّبَ عِنْدَكَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা আনজিলহুল মাক্বআদাল মুক্বাররাবা ইনদাকা ইয়াওমাল ক্বিয়ামাহ।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ (স.)-কে কেয়ামতের দিন আপনার নিকটবর্তী মাকামে অধিষ্ঠিত করুন।’ রুওয়াইফে ইবনে ছাবিত আনসারি (রা.) বর্ণিত হাদিসে আছে, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার প্রতি সালাত প্রেরণ করবে এবং সাথে এই দোয়াটি পড়বে, তার জন্য আমার শাফায়াত অবধারিত হয়ে যাবে।’ (মুসনাদে আহমদ: ১৬৯৯১; মুজামে কাবির, তবারানি: ৪৪৮০; আততারগিব ওয়াততারহিব: ২৬০৪; মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ১৭২৫৯)

আরও পড়ুন: জুমার দিন দরুদ না পড়লে যা হারাবেন

দরুদের সঙ্গে মিলিয়ে দোয়াটি এভাবে পড়তে পারেন— اللهُمَّ صَلِّ على محمّدٍ وأَنْزِلْهُ الْمَقْعَدَ الْمُقرَّبَ عِندكَ يومَ القِيامَةِ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন ওয়াআনজিলহুল মাক্বআদাল মুক্বাররাবা ইনদাকা ইয়াওমাল ক্বিয়ামাহ।’

যত বেশি দরুদ পড়া যায়, ততই উপকার। সকল কল্যাণ যেন দরুদেই নিহিত। উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (স.) আল্লাহর জিকিরের খুব তাকিদ করলেন। আমি আরজ করলাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি আপনার প্রতি বেশি বেশি দরুদ পাঠ করে থাকি। আমি আমার দোয়ার কতভাগ আপনার জন্য নির্ধারণ করব? তিনি বললেন, তোমার যে পরিমাণ ইচ্ছা। আমি বললাম, চারভাগের এক ভাগ? তিনি বললেন, তোমার যতটুকু ইচ্ছা। তবে বেশি করলে আরো ভালো। আমি বললাম, তাহলে অর্ধেক? তিনি বললেন, তোমার যতটুকু ইচ্ছা। তবে বেশি করলে আরো ভালো। আমি বললাম, তাহলে তিন ভাগের দুই ভাগ? তিনি বললেন, তোমার যতটুকু ইচ্ছা হয়। তবে বেশি করলে আরো ভালো। আমি বললাম, তাহলে কি আমার দোয়ার পুরোটাই হবে আপনার প্রতি দরূদ? তিনি বললেন, তবে তো তোমার মকসুদ হাসিল হবে, তোমার গুনাহ মাফ করা হবে।’ (তিরমিজি: ২/৭২) মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ১০/২৪৮; মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৬/৪৫)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: দরুদ ও সালামের অবিশ্বাস্য ফজিলত

যেকোনো দিন দরুদ পড়া যায়, তবে জুমার দিন দরুদ পড়ার ফজিলত বেশি। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা জুমার দিনে আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো, কেননা তোমাদের পাঠকৃত দরুদ আমার সামনে পেশ করা হয়। (আবু দাউদ: ১০৪৭)

হজরত আলি (রা.) বর্ণনা করেন, ‘যে ব্যক্তি নবী কারিম (স.)-এর ওপর জুমার দিন ১০০ বার দরুদ পাঠ করে, সে কেয়ামতের দিন এমন অবস্থায় উঠবে যে, তার চেহারায় নূরের জ্যোতি দেখে লোকেরা বলাবলি করতে থাকবে এই ব্যক্তি কী আমল করেছিল!’ (কানজুল উম্মাল: ১৭৪)

অন্য হাদিসে আবু উমামা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (স.) বলেন, ‘আমার ওপর জুমার দিন বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো। কারণ আমার উম্মতের দরুদ জুমার দিন আমার কাছে পৌঁছানো হয়। যে ব্যক্তি আমার ওপর সবচেয়ে বেশি দরুদ পাঠাবে, সে ব্যক্তি কেয়ামতের দিন সবচেয়ে আমার নিকটতম হবে।’ (তারগিব: ১৫৭)

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর